ঢাকা   শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ৪:৫৪ 

Home Blog Page 162

ঈদের উপহার, বাংলাদেশকে ১০ টি রেলইঞ্জিন দিচ্ছে ভারত, কাল আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর

0

ঢাকাকে উপহার হিসেবে ১০ টি রেল ইঞ্জিন দিচ্ছে দিল্লি। ঈদ উল আজহা উপলক্ষে ১০টি ব্রডগজ লোকোমোটিভ বা রেল ইঞ্জিন উপহার পাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতীয় রেলের দেওয়া এই ইঞ্জিনগুলো আগামী সোমবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ রেলকে হস্তান্তর করা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মূলত বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক আরও মজবুত করতেই বন্ধু ঢাকাকে ঈদের উপহার হিসেবে এই ১০টি রেল ইঞ্জিন দিচ্ছে নয়াদিল্লি।
১০টি ব্রডগজ লোকোমোটিভ বা রেল ইঞ্জিন বাংলাদেশ রেলবহরে সংযুক্ত হলে রেলওয়ে আরো গতিশীল হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ভারতীয় রেলের দেওয়া এই ইঞ্জিনগুলো সোমবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ রেলকে হস্তান্তর করা হবে। রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগামী ২৭ জুলাই দুপুর তিনটা নাগাদ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারতের রেলমন্ত্রী এবং আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আমি নিজে ভিডিও কনরফারেন্সের মাধ্যমে এ ইঞ্জিন উপহার অনুষ্ঠানে অংশ নেব। তারা দিল্লি থেকে, আর আমরা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্স করে এই ইঞ্জিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করব।” ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তরে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ গেদে সীমান্তের ওপারে আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারত বিরোধী শক্তিরগুলির উপর লাগাম টেনেছেন। বাংলাদেশের ভূমিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। একইভাবে, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তবে সম্প্রতি সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা, এনআরসি ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ অনেকটাই বিরক্ত। বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে চীন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে চীন। যা বাংলাদেশের জন্য এক নতুন দীগন্তের সূচনা করেছে। ভারতকে হটিয়ে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করছে বেইজিং। সেই চেষ্টায় সাড়াও মিলেছে । ফলে কপালে ভাজ পড়েছে দিল্লির। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি মাঠে নেমেছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে ভারতের নয়া রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন জাদরেল কুটনীতিবিদ বিক্রম দরাইস্বামী। বর্তমানে এই পদে রয়েছেন রিভা গাঙ্গুলী দাস। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশমন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) হয়ে নয়াদিল্লি ফেরত যাবেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে ঈদের উপহার দিয়ে ঢাকাকে ফের বন্ধুত্বের কথা মনে করিয়ে দিলো নয়াদিল্লি। ঢাকার পাশে দিল্লি যে থাকবে এটার নিশ্চয়তাও দিলো মোদি সরকার।

দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে মরিয়া চীন, সাথে চায় বাংলাদেশকেও

0

দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে    মরিয়া চীন ।  মিয়ানমার, শ্রীলংকা নেপালের পর এবার লক্ষ্য বাংলাদেশ। আর পুরোনো বন্ধু পাকিস্তানতো আছেই।  লন্ডন থেকে প্রকাশিত “এশিয়ান লাইট ” পত্রিকা ২৩ জুলাই এ নিয়ে একটি পর্যালোচনামূলক খবর দিয়েছে। তাতে বাংলাদেশকে নিয়ে চীনের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। 

পত্রিকাটি লিখেছে চীনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে ইতিমধ্যে দু’টি সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে দেশটি। আর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর আরও কাছে নিয়ে যেতে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

পেশাদার কুটনৈতিক লি জিমিং-এর কাছে নতুন নতুন চীনা কোম্পানিকে ঢাকায় নিয়ে আসাই একমাত্র অগ্রাধিকার নয়। দৃশ্যত, তার লক্ষ্য হচ্ছে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অত্যাধুনিক সাবমেরিন ঘাঁটি, বিএনএস শেখ হাসিনা’র মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ ত্বরান্বিত করা।
খবরে বলা হয়, গত বছর চীন ও বাংলাদেশের দেয়া যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর প্রতি শুধু সমর্থনই জানাননি, তিনি প্রতিরক্ষা শিল্পকে শক্তিশালী করার চীনা পরিকল্পনার প্রতিও একমত পোষণ করেন। প্রতিরক্ষা শিল্প শক্তিশালী করার মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বঙ্গোপসাগরে নৌ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
যদিও শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক বেশ আন্তরিক, তবুও বেইজিং চায় উপমহাদেশে নিজের উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে। এই লক্ষে সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর বা কক্সবাজারে নির্মিতব্য সাবমেরিন ঘাঁটির মতো বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থছাড় করছে চীন। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ সূত্রগুলো বার্তাসংস্থা আইএএনএস’কে বলেছে যে, ওই সাবমেরিন ঘাঁটি প্রকল্পে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পলি টেকনোলজিস ইনকর্পোরেশন (পিটিআই)-কে কাজ দেয়া হয়েছে। সামগ্রিক নির্মাণ কাজে ব্যয় হবে আনুমানিক ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই নির্ধারিত স্থাপনায় পুরোদমে কাজ আরম্ভ হয়েছে। ওই ঘাঁটিতে ব্যারাক, গোলাবারুদের ডিপো, মেরামত ডক ও সাধারণ ঘাটসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকবে। ভারতীয় এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে যে, বেইজিং-এর নির্দেশে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কক্সবাজারের ওই প্রকল্পসহ বাংলাদেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। এর আগে চীনের ইউনান প্রদেশে সরকারের হয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে লি জিমিং-এর। তার সাথে চীনের নৌ বাহিনী অর্থাৎ পিপল’স লিবারেশন আর্মি নেভি (পিএলএএন)-এর শীর্ষ কমান্ডারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি বর্তমানে সাবমেরিন প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে আছেন। এর আগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে চীন-নির্মিত দু’টি ছোট যুদ্ধজাহাজের দ্রুত হস্তান্তরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। এর আগে ২০১৬-১৭ সালে চীনের কাছ থেকে দু’টি সাবমেরিন গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশ। এই দু’টি সাবমেরিন কক্সবাজারের একটি অস্থায়ী ঘাঁটি থেকে এখন পরিচালিত হচ্ছে। এই সাবমেরিন দু’টি কেনার পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য একটি আধুনিক সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণে সহায়তার জন্য চীনের দ্বারস্থ হয় ঢাকা। এছাড়া পটুয়াখালীতে একটি নতুন নৌ ঘাঁটি স্থাপন করছে ঢাকা। সেখানেও সাবমেরিন ভিড়ানোর ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় বাংলাদেশে নির্মিতব্য পায়রা সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ওই ঘাঁটিতে আরও নানাবিধ সুবিধা থাকছে। নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনএস সংগ্রাম নামে চীন নির্মিত একটি যুদ্ধজাহাজ নৌবাহিনীতে প্রবেশের উদ্বোধন করেন। তবে প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় রাখতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান খুবই সীমিত সামর্থ্য নিয়ে নয়া-স্বাধীন দেশটির যাত্রা শুরু করেছিলেন।

কক্সবাজারে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

0

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারে জলবায়ু শরণার্থীদের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তসহ দেশের সকল জনগণের জন্য মুজিববর্ষে আবাসন নিশ্চিত করতে তাঁর সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মুজিববর্ষ উদযাপন করছি। তাঁর জন্ম শতবর্ষে আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকটি মানুষকে যেভাবে পারি, গরিবানাহালে একটি চালা হলেও আমরা করে দেব।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারে ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। খবর বাসস।
শেখ হাসিনা এ সময় বন্যা মোকাবেলায় তাঁর সরকারের সকল ধরণের প্রস্তুতি থাকার উল্লেখ করে বলেন, ‘এবারে বন্যার প্রকোপটা একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা হচ্ছে শ্রাবণ মাস, হয়তো ভাদ্র মাসের দিকে আরো পানি আসবে অর্থাৎ আগষ্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরো বন্যার আশঙ্কা থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি আছে সেটা মোকাবেলা করার। সেইসাথে বন্যা এবং নদী ভাঙ্গণে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন তাঁদেরকেও আমরা ঘর-বাড়ি তৈরীর জন্য জমির ব্যবস্থা করে দেব। সেটাও আমাদের লক্ষ্য রয়েছে এবং সেজন্য এবারের বাজেটে আমরা আলাদা করে টাকা বরাদ্দ রেখেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকেও আমি বলবো কোন মানুষ গৃহহারা থাকবে না প্রত্যেকটি মানুষ সুন্দরভাবে বাস করবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা মুজিববর্ষে একদিকে যেমন বৃক্ষরোপন কর্মসূচি নিয়েছি তেমনি গৃহহারাদের ঘর-বাড়ি করে দেব এবং যাতে দেশের প্রত্যেকটি মানুষের জীবন-মান উন্নত হয় সেটাও আমরা দেখবো।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে উপকূলবাসীকে বেশি করে গাছ লাগানোর পাশাপাশি দেশবাসীর প্রতি প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বানও পুণর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজের গতি খুব ভাল ছিল । কিন্তু এই করোনাভাইরাস এসে সব জায়গাতেই একটা বাধার সৃষ্টি করেছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি সকলকে অনুরোধ করবো আপনারা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে সেগুলো মেনে চলবেন। মাস্কটা পড়ে থাকবেন, যখন বাইরে যাবেন বা কারো সাথে কথা বলবেন। নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন।’
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ গণভবন থেকে এবং দশম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং এরিয়া কমান্ডার মো. মাঈন উল্লাহ চৌধুরী কক্সবাজার প্রান্ত থেকে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে প্রকল্পের একটি রেপ্লিকাও তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয় এবং প্রকল্পস্থানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তিনজন উপকারভোগী তিনটি গাছের চারাও রোপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে ভিডিও কনফারেন্সে উপকারভোগী এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
কক্সবাজারের খুরুসকুলে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠান স্থলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ফ্লাট প্রাপ্ত পরিবারগুলোর হাতে ফ্লাটের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
এদিন কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীর তীর ঘেঁষা বৃহৎ এ প্রকল্পে নির্মিত ২০টি পাঁচ তলা বিশিষ্ট ভবনে ৬শ’টি পরিবার নতুন ফ্ল্যাট পেল। প্রতিটি পাঁচতলা ভবনে থাকছে ৪৫৬ বর্গফুট আয়তনের ৩২টি করে ফ্ল্যাট। পর্যায়ক্রমে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার এখানে ফ্ল্যাট পাবে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন বুধবার এই প্রকল্প সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রতিটি পরিবার এখানে ১০০১ টাকার বিনিময়ে একটি প্রায় ৪৫৬ স্কয়ার ফিটের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফ্লাট পাবে। যেখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক র‌্যাম্প, সোলার প্যানেল, বিশুদ্ধ পানির সুবিধা, বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং গ্যাস সিলিন্ডার সম্বলিত চুলার ব্যবস্থা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পে ২৫৩ দশমিক ৫৯ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন ১৩৯টি ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার পুণর্বাসিত হবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮শ’ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকায় ২০ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ৩৬ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, বর্জ্য পরিশোধন ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, তীর রক্ষা বাঁধ, ছোট সেতু, ১৪টি খেলার মাঠ, মসজিদ, মন্দির, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলিশ ও ফায়ার স্টেশন, তিনটি পুকুর, নদীতে দু’টি জেটি এবং দু’টি বিদ্যুতের সাবস্টেশন থাকবে।’
প্রকল্পে আবাসন, পর্যটন ব্যবস্থা, শুটকি পল্লী বা ‘শুটকি মহল’ এবং সবুজ বনায়নসহ চার ধরনের সুবিধা থাকবে বলেও তিনি জানান।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘এটাই দেশের সবচেয়ে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য দেশের প্রথম আশ্রয়ণ প্রকল্প। জলবায়ু উদ্বাস্তু পরিবারগুলোর জন্য এখানে যে পুনর্বাসন, এটাকে আমরা বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু পুনর্বাসন প্রকল্প বলতে পারি, এ ধরনের প্রকল্প পৃথিবীতে বিরল।’
আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা ফ্ল্যাট পাবেন তাদের ঋণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার অংশ হিসেবে পর্যায়ক্রমে বিক্রয় কেন্দ্র ও প্যাকেজিং শিল্পও গড়ে তুলবে সরকার, বলেন তিনি।
তিনি আরে বলেন, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছাসে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ এবং পরবর্তীতে কুতুবদিয়া পাড়া, নাজিরাটেক এবং সমিতি পাড়া এলাকায় বসতি স্থাপনকারি জনগণ যারা কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যই মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উদ্যোগ।
প্রকল্পের নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর দশম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এবং এরিয়া কমান্ডার মো. মাঈন উল্লাহ চৌধুরী পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত নয়নাভিরাম একটি জায়গা। এ জায়গাটিকে সুরক্ষিত করার জন্য মাটিকে অনেক উঁচু করা হয়েছে। প্রতিটি ভবনের নিচের তলায় কোনো ফ্ল্যাট রাখা হয়নি। ফলে, ঘূর্ণিঝড় হলে জলোচ্ছ্বাসের পানি ঢোকারও আশঙ্কা নেই।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেই গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনের জন্য ১৯৯৭ সালে ‘আশ্রয়ণ’ নামে প্রথম প্রকল্প গ্রহণ করেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প শুরু হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৪০টি পরিবার ঘর পেয়েছে।
ঘুর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছাস, মঙ্গাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে তাঁর দল এবং তিনি মানুষের সাহায্যে সর্বত্র ছুটে বেড়িয়েছেন এবং সাধ্যমত ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালের ঘুর্ণিঝড়ের পর সেন্ট মার্টিন দ্বীপে গিয়ে ৭০টি ঘর-বাড়ি হারা পরিবারকে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার মধ্য দিয়েই তাঁর সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু।
তিনি বলেন, ‘সেই থেকে আমাদের যাত্রা শুরু এবং এর পরে আশ্রয়ণটাকে আমরা একটি প্রকল্প হিসেবে নেই এবং সশ¯্রবাহিনী তথা সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরতদের এই ঘরগুলো করে দেওয়ার দায়িত্ব দেই। এগুলো ব্যারাক হিসেবে করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় যাতে এসব কেউ চাইলেই বিক্রী করতে না পারে।’
সে সময়কার অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তখন সামর্থ তেমন না থাকলেও আমরা উদ্যোগ নেই প্রত্যেক গৃহহীনকে গরিবানা হালে হলেও একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই বা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার।’
পরবর্তীতে আশ্রয় লাভকারীদের প্রশিক্ষণ, কাজের সুযোগ এবং ঋণ সুবিধা প্রদানের সুবিধা এসব প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
কক্সবাজারকে ঘিরে থাকা ঝাউবনগুলো উপকূলীয় এই পর্যটন নগরীকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে রক্ষায় জাতির পিতার নির্দেশে লাগানো হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারকে একটি আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলায় তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়নে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। সেখানকার মানুষের আগে চিংড়ি ও লবন চাষ ছাড়া কোস জীবন-জীবিকাই ছিল না। কিন্তু এখন আমরা বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। একদিকে যেমন পর্যটন কেন্দ্রগুলো হবে অন্যদিকে মানুষের সবরকম জীবন-জীবিকার ব্যবস্থার পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চলও সেখানে করে দেব।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করতে গিয়ে দেখলাম জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪ হাজার পরিবার সেখানে উদ্বাস্তু হয়ে আছে। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম এদের পুণর্বাসন করবো এবং এই খুরুশকুল জায়গাটাও আমিই খুঁজে বের করেছিলাম।’
তিনি কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এখন ২০টি ভবন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বাকী ভবনগুলো নির্মাণ হবে। যেখানে সবকিছুই থাকবে, একটি আধুনিক শহর হিসেবেই খুরুশকুলকে গড়ে তোলা হবে।’
তিনি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সে সময়কার আবাসস্থল পরিদর্শনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আপনারা যেভাবে কষ্টের মধ্যে ছিলেন কারণ আমি নিজে গিয়েছি এবং দেখেছি সে অবস্থা। কাজেই এখন আপনারা সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবেন। আপনাদের ছেলে-মেযেরাও ভালভাবে বড় হবে, মানুষ হবে। সেটাই আমরা চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এই ব্যবস্থা নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন ঘর করে দিচ্ছি। পাশাপাশি যাদের জমি আছে তাঁদের ঘর করে দেওয়ার জন্য গৃহায়ণ তহবিল নামে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা তহবিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, যাদের ভিটা আছে কিন্তু ঘর নাই তাঁদেরও ঘর করে দিচ্ছি।
আজকে যে ঘর-বাড়ি করে দেওয়া হল সেটাকে ‘রিজেক’ আখ্যায়িত করে তিনি এ সবের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আবাসস্থলের পরিবেশ উন্নত রাখার জন্যও সেখানে ফ্ল্যাট প্রাপ্ত সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

ডা. খুরশীদ আলম স্বাস্থ্যের নতুন ডিজি

0
  1. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন ডা.আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সাবেক মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে বৃহস্পতিবারই খুরশীদ আলমের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নানা কেলেঙ্কারি আর বিতর্কের মধ্যে পদ ছাড়তে হয়েছে ডা. আবুল কালাম আজাদকে।
২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে ছিলেন ডা. আজাদ। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হওয়ার পরও তাকে দুই বছরের চুক্তিতে ওই পদে রাখা হয়েছিল, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী বছরের এপ্রিলে।

কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন ডা. আজাদ।

সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ডা. আজাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে তার চাকরির অবসান হওয়ার কথা জানায়।

নতুন মহাপরিচালক খুরশীদ আলম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে দশম বিসিএসের মাধ্যমে ১৯৮৪ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তিনি কুমিল্লা মেডিকেলের সার্জারি বিভাগের প্রধান ছিলেন।

খুরশীদ আলম কিছুদিন বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজেও চাকরি করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি যোগ দেন ২০১৮ সালে।

প্রহসনের আগাম জামিন

0

  নাহিদ সুলতানা যুথি। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী। প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার এই আইনজীবী সু্প্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের সংগঠন  রুলার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি হাইকোর্টে আগাম জামিন বিতর্ক নিয়ে ফেসবুকে তার একটি  লেখা বেশ আলোচনা-সমালোচনার  জন্ম দিয়েছে। পাঠকদের জন্য আমরা লেখাটি প্রকাশ করলাম।           

         ।।প্রহসনের আগাম জামিন।। 
বিচার ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল কোর্ট চালু হয়েছে কিছুটা তরিঘড়ি করে পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতেও স্বল্প পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্টের চালুর বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় ১০ বছর আগে থেকে । আমাদের বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় কেবল মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হল । বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে তারই সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিক নির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন আজ বাস্তব।
এর সুফল ভোগ করছে সারাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের প্রত্যেকের হাতে এখন স্মার্টফোন, ফোর-জি গতির ইন্টারনেট সেবা থেকে শুরু করে তথ্য প্রযুক্তি খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য । আমাদের দেশের ইন্টারনেটসহ স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে সফল ভাবে। এ দেশীয় টেলিভিশনগুলো এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সারাদেশই ডিজিটাল হওয়ায় সবাই সুবিধাও পাচ্ছেন।
কিন্তু আমাদের পরিকল্পনায় ভার্চুয়াল কোর্টের চিন্তা স্থান হয়নি, ভাল অর্থে বললে বলা যায় আমরা বাঙ্গালিরা বরাবরই আয়েশি , প্রথমত পরিকল্পনা করে করে আমরা কোন কাজ করিনা পাশাপাশি গায়ের উপর না আসলে সেটাতে আমরা নির্লিপ্ত থাকি।
মার্চের ৮ তারিখে করোনা ভাইরাসের প্রথম রুগী শনাক্ত হওয়ার পরে সম্ভবত ১৯ তারিখে আমরা অবকাশ কালীন কোর্ট করেছিলাম যেদিন অর্থাৎ সংক্রমণ শনাক্তের ১০ম দিনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রথম ব্যক্তি মারা যান। একজন মারা যাওয়ার পর হয়ত আমাদের চেতনা বোধ জাগ্রত হল এবং তখন থেকে একটু একটু করে আমরা সচেতন হতে আরম্ভ করেছিলাম । করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে মার্চ মাসের শেষ থেকেই বাংলাদেশের উচ্চ ও নিম্ন আদালত পুরোপুরি বন্ধ থাকে এবং পরবর্তিতে সম্ভবত ২০ এপ্রিল ভার্চুয়াল কোর্ট শুরু হল । যে ভার্চুয়াল কোর্টের জন্য ভারতে লেগেছিল কমবেশি ১০ বছর সেখানে আমাদের দেশে হঠাৎই শুরু হলো ভার্চুয়াল কোর্ট …এবং ট্রায়াল এন্ড এরর করে করে এগিয়ে চলছে ভার্চুয়াল হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ।
অনেক চড়াই উৎরাই করে মোটামুটি আমরা করোনা মোকাবেলা করে করে এগিয়ে যাচ্ছি ।আমাদের বাংলাদেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনায় আক্রান্তসহ মৃত্যুর হার তুলনামূলক ভাবে বেশ কম এবং আমাদের দেশে খাদ্য ঘাটতি নাই বললেই চলে সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমা সাধ্যের মধ্যেই আছে । এবং বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিঙ্গের মাধ্যমে তার দুর্যোগকালীন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সংসদ অধিবেশন নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলছে।
এতো কথার সূত্রপাত এই জন্য যে, সম্প্রতি একটি আগাম জামিন নিয়ে জনমনে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে কিন্তু মহামান্য আদালত তার সুন্দর সমাপ্তি করেছেন। কিন্তু আইনজীবীরা আমরা কি বুঝি না ? আমরা কি নিয়ে কোর্ট এ যাচ্ছি ? আমাদের বড়দের দেখেই না ছোটরা শিখবে যাকে আমরা কোর্ট এর নর্ম বলে থাকি এবং আমরা গর্ব বোধ করি।
আইনজীবী বিদেশে , আসামিরা বিদেশে ,কোর্ট হচ্ছে ভার্চুয়াল কিভাবে আমরা আগাম জামিন নিয়ে আদালতে আসতে পারলাম ,কিভাবে মামলাটিকে ম্যানশন করে লিস্ট এ টপে নিয়ে আসলাম ? কিভাবে পারসোনাল উপস্থিতি না মেনে আগাম জামিন নিয়ে আসা যায় ? যেখান আগাম জামিন উচ্চ আদালতে হচ্ছে না পারসোনাল উপস্থিতির সমস্যার জন্য, সেখানে বিদেশ থেকে বিদেশি ভার্চুয়াল উকিল ভার্চুয়াল আসামি ,দেশি ভার্চুয়াল বড় বড় নামি দামী উকিল সাহেবরা মামলাটি নিয়ে কোর্টে গেলেন আবার অর্ডার এ তাদের নাম যেন না আসে সেটি ও করলেন । আমাদের প্রশ্ন এমনটি কি করা যায় ? আইন আছে ,আদালত আছে , আমাদের নাম পদ পদবি আছে সাথে কিন্তু কিছু দায়বদ্ধতাও আছে সেটি ও কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে । আপনারা কি কয়দিন পরে তারেকের মামলা কজ লিস্টে এনে জামিন চাইবেন অথবা বিচার চাইতে ভার্চুয়াল কোর্ট এ আসবেন ? প্রশ্ন কখনই অবান্তর না …উত্তর ও কিন্তু আপনারা জানেন। তাই দায়বদ্ধতাও নৈতিকতার স্খলন নয় …। আমরা সবাই জানি আমাদের আইন আমাদের দেশের অধিক্ষেত্রের মধ্যে। ভার্চুয়াল কোর্ট আন্তর্জাতিক আদালত নয় যে আপনারা বিদেশে বসে বিদেশি উকিল বিদেশি আসামি সাথে দেশি উকিল প্রতিনিধি নিয়ে আইন আদালতের সাথে প্রহসন করেছেন।আইন আপনারা কেউ ই কম জানেন না …অট্টহাসি কখন ও কখনও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা আমরা কম বেশি সবাই জানি ………… ।
লেখকঃ নাহিদ সুলতানা যুথি, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ, সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।

করোনার সাড়ে ৫ হাজার ভূয়া রিপোর্ট দিয়েছে সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল, গোয়েন্দাদের তদন্ত

0

রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে করোনা টেস্টের অন্তত সাড়ে ৫ হাজার ভূয়া সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে যেসব সার্টিফিকেট টেস্ট না করে দিয়েছে সেগুলো তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন ।

রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোঃ সাহেদের মামলা তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। এসব ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অন্তত ২ কোটি টাকা হাতিয়েছে সাহেদ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোঃ সাহেদ ৫দিন পুলিশ রিমান্ড ছিলেন। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাহেদের মামলাটির তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছে। র‌্যাব শুরু থেকে সাহেদের এই মামলাটি দেখছে। কি পরিমান করোনা টেস্টের সার্টিফিকেট প্রদান ও স্যাম্পল কালেকশন করেছে এসব বিষয়ে ডিবি তদন্ত করেছে।
তিনি আরো বলেন, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় সাহেদকে নিয়ে আমরা অভিযান করে তার দেখানো মতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছি। এই সংক্রান্তে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। এই মামলা ডিবি তদন্ত করবে।
সাহেদের বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রুজু হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা শুনেছি সাহেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলা হয়েছে। এসব মামলা সংশ্লিষ্ট জেলার থানা তদন্ত করবে।
সাহেদ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কিনা? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাহেদ মাদক ব্যবসায়ী কিনা এমন তথ্য তদন্তে পাওয়া যায়নি। অস্ত্র ও মাদকের সাথে অন্য কারও সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জিকেজির ডাঃ সাবরিনার মামলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নেে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, সাবরিনার মামলার তদন্তের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশা করছি শীঘ্রই এই মামলার চার্জশীট দিতে পারবো।
উল্লেখ্য, করোনা টেস্টের সার্টিফিকেট জালিয়াতি মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোঃ সাহেদকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডে দিয়েছিল আদালত।

সোনারগাঁওয়ের প্রিয় ভূমিতেই অন্তিম শয়ানে শায়িত হলেন সচিব নরেন দাস

0

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নয়াপুরে নিজস্ব ভূমিতে অন্তিম শয়ানে শায়িত হলেন আইনমন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব নরেন দাস।

সচিব নরেন দাস এর ইচ্ছা অনুযায়ী বুধবার সকাল সোয়া ১১ টার দিকে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষে তাঁকে তাঁর প্রিয় ভূমিতেই অন্তিম শয়ানে শায়িত করা হয়।

এরপর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি’র পক্ষ থেকে সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ শেষে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন ও সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব ও জুডিসিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব বিকাশ কুমার সাহা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন, কাজী আরিফুজ্জামান ও ড. মো. জাকেরুল আবেদীন এবং আইনমন্ত্রীর একান্ত সচিব আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানসহ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উভয় বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় প্রশাসন এবং সচিব নরেন দাসের স্ত্রী, কন্যা ও আত্মীয়-স্বজনরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ৮ টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিব নরেন দাস এর মরদেহ গ্রহণ করেন তাঁর স্ত্রী মিতালি রানী দাস।

তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরলোকগমন করেন।

জ্বর ও শ্বাস কষ্ট দেখা দেওয়ায় সচিব নরেন দাস স্ত্রীসহ ৫ জুলাই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন । এরপর ৭ জুলাই সেখানে তাঁদের করোনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হলেও নরেন দাস করোনার কাছে হেরে যান।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
এদিাে লেজিসলেটিভ সচিব নরেন দাস এর মৃত্যুতে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় সচিব নরেন দাস এর আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

সিকদার ভাইদের জামিন আবেদন খারিজ, আদালতের সময় নষ্ট করায় ১০ হাজার পিপিই জরিমানা

0

সিকদার ভাইদের জামিন আবেদন খারিজ, আদালতের সময় নষ্ট করায় ১০ হাজার পিপিই জরিমানা

এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে হত্যাচেষ্টার মামলায় আগাম জামিন চেয়ে সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের করা আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

সেই সঙ্গে দেশের বাইরে থেকে আগাম জামিনের আবেদন করে ‘আদালতের সময় নষ্ট করায়’ তাদের জরিমানা করা হয়েছে।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ১০ হাজার পিপিই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার, আজমালুল হোসেন কিউসি। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমদ।

মামলা হওয়ার পর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে পালিয়ে যাওয়া সিকদার পরিবারের দুই ছেলে রন ও দিপু রোববার বিদেশ থেকেই হাই কোর্টে আগাম জামিনের এই আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষ রোববারই বলেছিল, বিদেশ থেকে আবেদন করে জামিন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “আদালত ওদের আবেদন রিজেক্ট করে দিয়েছেন এবং তাদের ফাইন করেছেন। দুজনকে পাঁচ হাজার, পাঁচ হাজার করে মোট ১০ হাজার পিপিই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিতে বলেছেন।”

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ বলেন, আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য এবং এভাবে দেশের বাইরে থেকে দরখাস্ত করার জন্য তাদের এই জরিমানা করা হয়েছে।

“আদালত বলেছে, আইন বহির্ভূতভাবে এভাবে আবেদন করে আদালতের সময় নষ্ট করা ঠিক হয়নি। আমরা যেন এমন কিছু না করি যাতে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ জনগণের পারসেপশন খারাপ হয়।

“এসব প্রভাবশালী, ধনাঢ্য ব্যক্তিদের যদি এভাবে সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আদালত সম্পর্কে মানুষের বিরূপ ধারণা তৈরি হবে। কাজেই আদালতের মর্যাদার কথা বিবেচনা করে এ আবেদনটি সরাসরি খারিজ করা হল।”

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির বলেন, রন ও দিপু সিকদারের আইনজীবীরা আগের দিন বলেছিলেন, ওই আবেদন করা হয়েছে সিঙ্গাপুর থেকে। কিন্তু শুনানির সময় বলেছেন, থাইল্যান্ড থেকে আবেদন করা হয়েছে।

“জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আজমালুল হোসেন কিউসি। বাকি যারা ছিলেন, তারা আদালতের কাছে অনুমতি নিয়ে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেছেন, তার নাম বাদ দেওয়ার জন্য।”

সিঙ্গাপুর থেকে রন ও দিপু সিকদারের জামিনের আবেদন
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন ও দিপুর বিরুদ্ধে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া এবং অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ১৯ মে গুলশান থানায় মামলা হয়।
এরপর গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাই ব্যাংককে পাড়ি জমান বলে খবর আসে।
দুই ভাইর বিদেশে পাড়ি জমানোর খবরে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রন সিকদারের একটি গাড়ি জব্দ করে।

ট্রান্সশিপমেন্ট: চট্টগ্রাম বন্দরে মঙ্গলবার আসছে ভারতীয় পণ্যের প্রথম চালান,যাবে আসাম ও ত্রিপুরায়

0

ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় চার কন্টেইনার ভারতীয় পণ্যের পরীক্ষামূলক চালান নিয়ে আসা জাহাজটি মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে।ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় এটাই ভারতীয় পণ্যের প্রথম চালান আসছে।

রোববার ভারতের হলদিয়া বন্দর থেকে বাংলাদেশি কন্টেইনারবাহী জাহাজ ‘এমভি সেঁজুতি’ চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার খালাসের পর সড়কপথে আখাউড়া সীমান্ত হয়ে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম প্রদেশে এসব পণ্য যাবে।
পরীক্ষামূলক চালানে দুই কন্টেইনার টিএমটি বার (লোহার রড) এবং দুই কন্টেইনার ডালজাতীয় পণ্য রয়েছে। প্রথম দুটি ভারতের ত্রিপুরায় এবং ডালজাতীয় পণ্যের কন্টেইনার দুটি আসামে যাবে।
ভারত থেকে দেশটির এক এলাকা থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর এবং সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের পরীক্ষামূলক প্রথম চালান এটি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ট্রায়াল রান শুরুর বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ব্যবসা বাড়ার সাথে অবকাঠামোও বাড়বে বলে তাদের আশা।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, পরীক্ষামূলক প্রথম চালানটি নিয়ে আসা জাহাজটি মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছানোর সিডিউল রয়েছে। জোয়ার আসা সাপেক্ষে জাহাজটি বন্দরের জেটিতে ভিড়বে কন্টেইনার খালাসের জন্য।
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি সেঁজুতির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ম্যাঙ্গোলাইনের ম্যানেজার হাবীবুর রহমান জানান, রোববার ভারতীয় পণ্য পরিবহনের চারটিসহ মোট ২২১টি কন্টেইনার নিয়ে জাহাজটি কলকাতার হলদিয়া বন্দর ছেড়েছে। মঙ্গলবার বহির্নোঙ্গরে পৌঁছানোর পর সিডিউল অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে ভিড়বে।
বিভিন্ন পর্যায়ে মাশুল ও বন্দরের ট্যারিফ পরিশোধের পর জাহাজ থেকে খালাসের পর কন্টেইনার চারটি ট্রেইলারে করে আখাউড়া সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কন্টেইনার চারটিতে ১০০ টনের মতো পণ্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পণ্যবাহী চারটি কন্টেইনারের ট্রায়াল রান উপলক্ষে বন্দরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিদ্যমান বার্থিং নীতিমালা অনুযায়ী যে জাহাজটি আগে আসবে, সেটি আগে জেটিতে ভিড়বে বলে জানান তিনি।
বন্দর সচিব বলেন, ভারতীয় পণ্য পরিবহনের ট্রায়াল রানের কন্টেইনার থাকলেও সাধারণ সময়ের মতোই জাহাজ ভেড়ানো ও কন্টেইনার খালাস করা হবে। এর জন্য আলাদা কোনো সুবিধা থাকবে না।
বন্দরের নির্ধারিত ট্যারিফ সিডিউল অনুযায়ী বন্দরের মাশুলসহ আনুষঙ্গিক ফি আদায় করা হবে বলেও জানান তিনি।
এসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতীয় এসব পণ্য সড়কপথে নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্যে পৌছাতে পারছে কি না তা বোঝা যাবে।
চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য  ২০১৮ সালের অক্টোবরে দিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের সচিব পর্যায়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে সাত ধরনের মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এসব আদায় করবে।
এগুলো হল- প্রসেসিং মাশুল, ট্রান্সশিপমেন্ট মাশুল, নিরাপত্তা মাশুল, প্রশাসনিক মাশুল, এসকর্ট মাশুল, কন্টেইনার স্ক্যানিং মাশুল ও ইলেকট্রিক সিলের মাশুল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসেবে প্রতি কন্টেইনারের জন্য প্রায় ৪৮ ডলারের মতো মাশুল দাঁড়াবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের জন্য তারা মাশুল পাবে।এর বাইরে সড়কপথে কন্টেইনার পরিবহন এবং অন্যান্য পর্যায়ে অর্থ আদায় করা হবে।
ট্রান্সশিপমেন্টের আওতায় ভারতীয় পণ্য পরিবহনের প্রথম ট্রায়াল রান শুরু নিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন মুক্তবাজার অর্থনীতির সময়। এক দেশ তাদের পণ্য পরিবহনের জন্য আরেক দেশের বন্দর ব্যবহার করবে।এ প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর অর্থ পাবে। তবে এর জন্য বন্দরের প্রয়োজন সাপেক্ষে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি এম এ সালাম বলেন, “এটি ইতিবাচক। আমাদের বন্দরের ব্যবসা বাড়বে। প্রথমে চার কন্টেইনারের চালান আসছে। পরে তা আরও বাড়বে। সক্ষমতা বিবেচনায় নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে যদি সেবা বিক্রি করা হয় তা অবশ্যই লাভজনক।”
তবে আগে নিজেদের সেবাগুলো ঠিক রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “পণ্য আসা- যাওয়ার মধ্যে যেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন।”
এ প্রক্রিয়ায় শুধু বন্দর-কাস্টমস নয় পরিবহন, কুরিয়ারসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসার দ্বার খুলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ভগবান শ্রীরামের জন্মভূমি নিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ

0

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি কর্তৃক ভগবান শ্রী রামচন্দ্র ও জন্মভূমি অযোধ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি ভগবান রামের জন্মভূমি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিশ্বের কোটি কোটি হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য নেপালের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান এবং নেপালবাসীকেও এর প্রতিবাদ করার অনুরোধ জানান। তারা বলেন নেপাল একটি হিন্দু রাষ্ট্র। নেপালের জনগণও ভগবান শ্রীরামকে নিয়ে তাদের প্রধানমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য সহ্য করবে না।
প্রতিবাদসভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, ইউআরআই বাংলাদেশের সমন্বয়ক ড. মোহাম্মদ আব্দুল হাই, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক,অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রমূখ।
মানববন্ধনে হিন্দু ধর্ম সুরক্ষা পরিষদ,বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মিরা অংশ নেন।
উল্লেখ্য গত ১৩ জুলাই নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ভগবান রামের জন্ম অযোধ্যায় যা নেপালে অবস্থিত। তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে হিন্দুদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। গত ১৭ জুলাই রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাগ্রত হিন্দু সমাজের উদ্যোগে প্রতিবাদসভা ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।