বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মহামারি আতঙ্ক। মানবজাতি বিপর্যয়ের মুখে। গৃহবন্দী মানুষ। মন্দির মসজিদ গীর্জা বন্ধ। পৃথিবীর সব মানুষ এখন এক কাতারে। এ অবস্থায় গুজব,রটনা ছড়াবেই। মানুষ ধর্ম কর্মের নামে নানা উছিলা দেবে। নানা কিছু আবিষ্কার হবে। নানা বিশ্বাস নিয়ে কথা বলবে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু দেখিনা। আপনি যদি সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনষ্ক হন তা হলে আপনার দায়িত্ব গুজব থেকে দূরে থাকা,যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের নিবৃত্ত করা। ধর্মের প্রকৃত বিধান মেনে চলা। গোমুত্র,উটের মুত্র না খাওয়া।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই আপনার মতো লেখাপড়ায় শিক্ষিত নয়। তারা গাঁও গেরামে প্রকৃতির সন্তান হিসেবেই রয়েছে। এই মানুষগুলোর মনে নানা বিশ্বাস রয়েছে। তারা বিপদে পড়লে সৃষ্টিকর্তার দ্বারস্থ হয়। নান গুজবে যেমন বিশ্বাস করে আবার নানা সংস্কার মেনে চলে । আমি সেটা দোষের কিছু দেখি না।
গত কদিন ধরে সারাদেশে নানা গুজব রটছে। হুজুর পুরোহিতরা নানা বিধি বিধান দিচ্ছেন। কোথাও শোনা যাচ্ছে নবজাতক জন্মেই করোনাভাইরাস নিরাময়ের বিধান দিয়ে মরে গেছে। অনেকে করোনাভাইরাসের নানা ভেষজ ওষুধ দিয়ে টাকা পয়সা নিচ্ছেন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের লোকজন কাল রাতে ঘুমায়নি কেয়ামত হওয়ার ভয়ে। বিভিন্ন জায়গায় শীতলা দেবীর পূজা অর্চণা চলছে।
এ গুলোও আমি দোষের কিছু দেখি না। সারা দেশ,পৃথিবীর মানুষের অবস্থা একবার ভাবুন। উত্তরমেরু দক্ষিণমেরু সব জায়গার মানুষ আজ বিপদগ্রস্ত। কারো একার জন্য বিপদ আসে নি। কোনো এক ধর্মের মানুষের জন্য বিপদ আসে নি। সমস্ত মানব জাতির জন্য এ মহাবিপদ এসেছে।
এ বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মানব জাতিকে বিজ্ঞানের কথা শুনতে হবে,চিকিৎসকের কথা শুনতে হবে। অবৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা করলে হবে না। ঈশ্বর বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের উছিলা করে পাঠিয়েছেন মানবজাতির ক্রান্তিকাল থেকে রক্ষা করার জন্য। প্রকৃত ধর্মও তাই বলে।
আতঙ্কগ্রস্থ মানুষ রক্ষা পেতে নানাকিছুর আশ্রয় নিচ্ছে। অসময়ে আজান দিচ্ছে, নামাজ পড়ছে, পূজা করছে। এগুলোও দোষের কিছু দেখি না। আমাদের দেশের সহজ সরল মানুষগুলো নানাকিছু বিশ্বাস করে আছে। এ নিয়ে হায় হায় গেলো গেলো বলে লাভ নেই। আপনি একজন সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে শুধু খেয়াল রাখবেন গুজবটা যেনো ক্ষতিকারক না হয়। মানুষকে যেনো আরো ক্ষতিগ্রস্ত না করে। সরকার ও চিকিৎসকদের নির্দেশনা যেনো মেনে চলে। এটাই আপনার আমার দায়িত্ব।