মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরার মতো মন্ত্রীপরিষদ কিংবা সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে কেউ নেই? প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ কী সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না তার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ? থাকলে এসব হচ্ছে কেনো? দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারা না হয় অযাচিতভাবে নেত্রীকে পরামর্শ দিতে যান না নানা কারণে, মান অভিমানে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক সরকার এভাবে বি-রাজনীতির শিকার হয়ে গেলো ভাবতেই অবাক লাগে।
কিছু দলীয় নেতা, পুলিশ, আমলা এমন সব কাজ করছে যা সমালোচনাই শুধু নয় বিরোধীদের হাতে সরকারবিরোধী ইস্যু, পোষ্টার তুলে দিচ্ছে। ভাগ্য ভালো বিরোধীদলগুলো মাজাভঙ্গা। ইস্যুর পর ইস্যু আসলেও তারা আন্দোলনের দিন তারিখ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
মাঠ দখল করে কলাবাগান থানা ভবন বানাতে হবে কেনো? যেখানে প্রধানমন্ত্রীই বলেছেন পাড়া মহল্লায় শিশুদের জন্য খেলার মাঠ রাখতে।
কলাবাগান জুড়ে জায়গার অভাব আছে? ভবনের অভাব আছে? সরকারি কতো ভবনইতো আছে। সেগুলোর কোনোটাতে পুলিশ স্টেশন বানাতে অসুবিধা কোথায়?
এটার প্রতিবাদ করায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখ এক মহিলা ও তার কিশোর ছেলেকে আটক করে রাখতে হবে কেনো?
শেষ পর্যন্ত কি হলো? থানা ঘেরাও করার পর মধ্যরাতে তাদের ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করছে আম পাবলিক।
মানুষ যে কি পরিমাণ ক্ষেপছে রাস্তাঘাটে কান পাতলেই বোঝা যায়।
যে ছবি বের হয়েছে তা আগামী নির্বাচনে সরকার বিরোধী পোষ্টার হবে। যেভাবে সাংবাদিক রোজিনাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে পোষ্টার বানানোর সুযোগ করে দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক কাজলকে হাতকড়া পরিয়ে পোষ্টার বানানোর সুযোগ করে দিয়েছেন এক এমপি। কিছু নেতা, আমলা, পুলিশ ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে গেছে। মানুষকে মানুষ মনে করছে না।
নিজেরা অপকর্ম করে সরকারকে বিতর্কিত করে বিরোধীদের পোষ্টার বানানোর সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে, সেগুলো আগামী নির্বাচনে ব্যবহার হবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোই ব্যবহার করবে। বাকস্বাধীনতা হরনের কথা বলবে। বিরোধী রাজনৈতিক দল ব্যবহার করবে। অথচ প্রতিটা ঘটনা খুবই সামান্য। কিছু নেতা আমলা আর পুলিশের গোঁয়ার্তুমির কারণে সমালোচনা হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের।
সামনে নির্বাচন। দুবছরও সময় নেই। এবার আর রাতের বেলা ভোটবাক্স ভরে রাখা সম্ভব হবে না। নিয়ম মেনে ভোট করেই আসতে হবে।
অবস্থা দেখে মনে হয় শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এগুলো করা হচ্ছে। চারদিকে নানা আলামত দেখা যাচ্ছে। অনেকে সুর পাল্টিয়ে ফেলছেন। এতোবছর ক্রিম খেয়ে এখন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মুখ খুলছেন।
নিউমার্কেট আর ঢাকা কলেজের ঘটনা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত হউক। এখানকার দোকানদাররা যেমন চশমখোর, বেয়াদব তেমনি ঢাকা কলেজের কিছু ছাত্র বেয়াদব ও ফকিন্নি। একটা পাঞ্জাবীর লোভ যারা সামলাতে পারে না এরা কোন স্তর থেকে ওঠে এসেছে আর কোন মানসিকতার তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।
ছাত্রলীগ নামধারী যেসব দুবৃত্ত নিরীহ নাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এদের কঠোর বিচার করা হউক।
সরকারের নীতিনির্ধারকদের বলবো, কান পেতে মাঠ-ঘাটের মানুষের কথা শুনুন। পাবলিক বাসে চড়ে সাধারণ মানুষের মন্তব্য শুনুন। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশ যে উন্নয়নের মহাসড়কে সেটা ধংস করে দেবেন না। রাজনীতিকে ধংস করে দেবেন না আমলা কামলাদের হাতে। মনে রাখবেন, ভোট কিন্তু হবে। সময় কিন্তু ২৪ মাসও নেই। আমলনামা তৈরী হচ্ছে। আগামীতে ভোটে জিতেই ক্ষমতায় আসতে হবে।