ঢাকা   বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ৩:৫৮ 

Home Blog Page 163

করোনাকালে একমাসে ৫৩০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় নিবন্ধন অধিদপ্তরের

0

এক মাসে ৫২৯ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৯ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে নিবন্ধন অধিদপ্তর। এ সময়ে সারাদেশে দলিল রেজিস্ট্রি হয়েছে দুই লাখ ৪৭ হাজার ৭৮০ টি।
বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুকের একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত ৩১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এই হিসাব দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দেশের করোনাকালীন সময়ে ২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১৩ জন সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন। আর একজন কর্মচারী মৃত্যুবরণ করেছেন।’
এখনও বিভিন্ন অফিস থেকে করোনা আক্রান্তের খবর আসছে। এতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে করোনা ভীতি বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সচলে ভূমিকা রাখছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অনলাইনে জেএমবির জঙ্গি কার্যক্রম ঢাকায় গ্রেপ্তার ভারতীয় নারী দুইদিনের রিমান্ডে

0

জঙ্গি কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ভারতীয় নাগরিক আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুল তাসনিম ওরফে প্রজ্ঞা দেবনাথ (২৫)কে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

এই ভারতীয় নাগরিক কেরানীগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার আড়ালে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীদের অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রমে দাওয়াত দিতেন। ছিলেন জেএমবির নারী ইউনিটের নেতৃত্বে।
সিটিটিসি’র সহকারী কমিশনার শেখ ইমরান হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আয়েশা ভারতীয় নাগরিক। হিন্দু ধর্মাবম্বী এই নারী অনলাইনে জেএমবির কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট হয়ে ধর্মান্তরিত হন। তার কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল এলাকা থেকে জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমাকে সিটিটিসি গ্রেফতার করে। আসমার সঙ্গে আয়েশার প্রথম পরিচয় হয়। আসমা গ্রেফতার হলে নব্য জেএমবি’র নারী শাখার দায়িত্ব নেন আয়েশা। আয়েশা আত্মগোপনে থেকে অনলাইনে নারী ও পুরুষ সদস্যদের রিক্রুটের কাজ করছিলেন। তার কাছে দেশ-বিদেশ থেকে নব্য জেএমবির ফান্ডে টাকা আসত। ওইসব টাকা তিনি নারী সদস্যদের মোটিভেশন এবং রিক্রুটমেন্টের পেছনে ব্যয় করতেন।সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, আয়েশা ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেন। ওই জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে তিনি একটি ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করেন।ওমান প্রবাসী এক বাংলাদেশি নাগরিককে অনলাইনে বিয়ে করে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেয়ার জন্য ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন। তিনি এটি দিয়ে নাগরিকত্ব নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছিলেন। তার সঙ্গে অনলাইনে আরও অনেক নারীর যোগাযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার (১৭ জুলাই) আদালতে পাঠানো হয়। আদালত ভারতীয় এই নারী নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে জেএমবির নারী শাখার অন্যদেরকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
জেএমবির ইতিহাসঃ
জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করে ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করে জেএমবি। পরে জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ সরকারও নিষিদ্ধ করে জেএমবিকে।
অপর দিকে গত বছর ২৪ মে ভারত সরকার জঙ্গি সংগঠন জেএমবিকে ভারতে নিষিদ্ধ করে। ১৯৬৭ সালের আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএপিএ) অনুযায়ী সহিংসতা ও নাশকতা ছাড়ানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয় জেএমবি-কে।নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেএমবির দুই শাখা ‘জামাতুল মুজাহিদিন ভারত’ এবং ‘জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দুস্থান’ দেশের তরুণ প্রজন্মকে সন্ত্রাসবাদ এবং নাশকতামূলক কাজে প্ররোচিত করছে এবং চরমপন্থার প্রসার ঘটাচ্ছে। ২০১৪ সালের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ও ২০১৮ সালে বুদ্ধগয়ার বিস্ফোরণে জেএমবির যুক্ত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ ও তার দুই শাখা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান-সহ কয়েকটি বিস্ফোরণে জেএমবির জঙ্গিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

অন্তত পাঁচটি সন্ত্রাসমূলক ঘটনায় জেএমবির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে অসম পুলিশ এবং এখন পর্যন্ত নানা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের পুলিশ জেএমবির ৫৬ জন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। মূলত বাংলাদেশ থেকেই তাদের কার্যক্রম চালায়।

আইনের কঠোর প্রয়োগে সুশাসন নিশ্চিত হউক

0

 

 

যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া সভ্যতার কোনো ইতিহাসই নেই। পৃথিবীর সব সভ্যতাই যুদ্ধবিগ্রহের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টি। এক কথায় বলা যায় যুদ্ধ রক্তপাত ছাড়া মানুষের কোনো ইতিহাস নেই। মানুষ আরেকজনকে শক্তি দিয়ে পদানত করেই নিজের ক্ষমতা জাহির করেছে। সেই বরফ যুগ, প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত মানুষ কখনো প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কখনো অন্য প্রাণির সঙ্গে লড়াই করে কখনো নিজের গোত্রের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে। ১০ লাখ বছর আগে সেই বরফ যুগের জাভা মানব,পিকিং মানবদের টিকে থাকার ইতিহাসটা জেনে দেখুন। কতো লড়াই করে তারা টিকে ছিল। পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাসগুলো সেটা মেসোপটেমিয়া হউক,ব্যাবিলনিয় হউক, পারস্য গ্রীক কিংবা ভারতবর্ষের সিন্ধু সভ্যতার ইতিহাসই হউক সব ইতিহাসই গড়ে ওঠেছে ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করে প্রতিপক্ষকে পদানত করে শাসন করেছে শোষন করেছে। ভারতীয় সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার সেই হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো ধংস হয়েছিল আর্যদের হাতে। সেখানে মারামারি কাটাকাটি হয়েছিল। আর্যরা ক্ষমতাবান হয়েছিল। এর পরের বৈদিক সভ্যতায় যুদ্ধ বিগ্রহ মারামারি লেগেই ছিল। মারামারিতে যে জয়ী হতে পারতো সেই রাজা হতো, শাসন করতো। সিন্ধু সভ্যতা থেকে গত ৫ হাজার বছরের ইতিহাস এমন কি বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষের ইতিহাস মারামারি কাটাকাটি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষ আসলে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, মারামারি করেই শাসন করছে, টিকে আছে। প্রেম ভালোবাসা দিয়ে শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে এমন কোনো নজির ইতিহাসে নেই। প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা কেউ শুনেনি। এমন কি মানুষ যে ধর্মের কথা বলে, পৃথিবীর সব ধর্ম প্রতিষ্ঠা হয়েছে যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে। ধর্মের মর্মবাণী শান্তি প্রেম ভালোবাসা হলেও তা প্রতিষ্ঠা হয়েছে রক্তপাতের মাধ্যমে।
আমরা মনে করি মানুষ তার ইতিহাসটা জানুক। মানুষের শাসনের ইতিহাসে যুদ্ধ আর পদানত করা ছাড়া কিছুই নেই। শুধু প্রেম ভালোবাসা দিয়ে শাসন হয় না। এজন্য দরকার শাসনের কঠোরতা। অন্যায়কারির কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করতে পারলে সমাজে অন্যায় বাড়তেই থাকবে। আমরা চাই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনের সঠিক ও যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত হউক।

মহাত্মা মৌলানা আজাদদের কথা জানাতে হবে

0

“ধর্ম যদি বিশ্বজনীন প্রকাশ হয়, তাহলে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এতো কেন চুলোচুলি আর ঠোকাঠুকি? প্রত্যেকটি ধর্মই বা কেন নিজেকে সত্যের একমাত্র আধার বলে দাবি করবে এবং কেনই বা অন্য সব ধর্মকে নস্যাৎ করবে।”
——–মৌলানা আবুল কালাম আজাদ।
মহাত্মা আবুল কালাম আজাদের আত্মজীবনীটি ২০১১ সালে বই মেলা থেকে কেনা। কিন্তু পড়ি পড়ি করেও পড়া হয় নি। এবার এই করোনাভাইরাসে জীবন জীবিকায় মারাত্বক ক্ষতি করলেও যা লাভ হয়েছে তা হলো পড়াশোনা। গত ১০ বছরে যে পরিমাণ পড়েছি মনে হয় গত চার মাসে সে পরিমাণ পড়াশোনা হয়েছে। আমার ক্ষুদ্র সংগ্রহেও অনেক অপঠিত গ্রন্থ রয়ে গেছে, অনেকগুলো রেখেছিলাম ভবিষ্যতের জন্য সময় করে পড়ার। স্বাভাবিক সময়ে শুধু রোফারেন্সের বইগুলোই নিয়মিত নাড়াচাড়া বেশী হয়। করোনার কারণে সমৃদ্ধ বইগুলো পড়ার সুযোগ হচ্ছে। ইতিহাস আমাকে টানে। তাই প্রাচীন বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস, ভারতের ইতিহাস সেই প্রাক সিন্ধুসভ্যতা থেকে ৪৭ এর দেশভাগ পর্যন্ত ধারাবাহিক বর্ণনা (ড.অতুল চন্দ্র রায় ও ড. প্রণব কুমার চট্টোপাধ্যায় যৌথভাবে লিখিত,হাজার পৃষ্টার বইটি) পড়ে আমি মুগ্ধ। ইতিহাসের এমন বর্ণনা পড়ে চোখের সামনে ভেসে আসে সেই দিনগুলো, মনে হয় আমিও যেনো ছিলাম সেই সময়ে। নিহার রঞ্জন রায়ের বাঙালীর ইতিহাস ( আদিপর্ব) , ড. দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎ বঙ্গ( দুই খন্ড) আদ্যপান্ত পড়ে নিজের শরীরেই চিমটি কেটে দেখছি। আল বেরুনীর ভারততত্ত্ব পুনরায় পড়ে মনে হলো একটা মানুষ কতো পন্ডিত হলে এমনটি লিখতে পারেন। কাজী আবদুল ওদুদ রচনাবলী পড়ে মাথা নষ্ট হওয়ার যোগাড়। মানুষ একজীবনে এতো জানে কি ভাবে,লিখে কি ভাবে? তাদের ঘর সংসার ছিলনা? আয় রোজগার করতেন না? কি লিখেন নি মহাত্মা কাজী আবদুল ওদুদ?
জানার কোনো শেষ নেই, এটা কার যে উপলব্ধি ছিল! আমারতো মনে হয় সবই লিখা হয়ে গেছে। নতুন করে লিখার কিছু নেই। এখন শুধু পড়া ছাড়া আর লিখার কিছুই দরকার নেই। মানুষ শুধু পড়ুক।
বলেছিলাম মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথা। এই মহাত্মার আত্মজীবনী পড়ে আমার মনে হয়েছে মানুষ কতো কতো বড়। যিনি মক্কা থেকে ভারতে এসে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রনায়ক হয়ে ওঠেছিলেন। যার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিলো না অথচ উর্দু,ফারসি, ইংরেজী ভাষায় ছিলেন পন্ডিত। ছিলেন দার্শনিক। এমন মানুষের কথা নতুন প্রজন্মকে না জানালে সভ্যতাই থমকে যাবে। মৌলনা আবুল কালাম আজাদদের ইতিহাস জানানো হয় না বলেই, মওলানা সাঈদিদের আবির্ভাব হয়।
মানুষের অহমিকা দেখে বিস্মিত হই। কী নিয়ে যে মানুষ পড়ে আছে?
অনুভূতি শেয়ার করা যায় না। একাডেমিক পড়ার সময় নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর মুখস্ত করতে হতো পরীক্ষায় পাস করার জন্য। এর পর সব ভুলে যাওয়া। কিন্তু এখন পড়ে মনে হচ্ছে নতুন এক জগতে যাওয়া। ইতিহাস জানা মানে নিজেকে জানা।
আমার কন্যাটিকে মাঝে মাঝে বলি, যদি একটি টাইম মেশিন পেতাম তা হলে ঘুরে দেখে আসতাম সেই প্রাচীন যুগটায়। বৈদিক সভ্যতার উত্থানপতন, মৌর্য সাম্রাজ্য, গুপ্ত সাম্রাজ্য এর পর মধ্যযুগের সুলতানি আমল,মোগল আমলটা দেখে আসতাম। মাত্র কদিনের ইতিহাস। ৫ হাজার বছরও হয় নি। মহাকালের অনন্ত সময়ে এটাতো গণনার মধ্যেও পড়ে না।
একটা টাইম মেশিন কোথায় পাবো?

প্রতারক সাহেদ সাতক্ষীরায় গ্রেপ্তার

0

করোনাভাইরাস চিকিৎসার নামে প্রতারণা আর জালিয়াতির মামলায় এক সপ্তাহ ধরে পলাতক রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।
বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দেবহাটা সীমান্তবর্তী কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর থেকে একটি গুলিভর্তি পিস্তলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের অধিনায়ক সিনিয়র এএসপি বজলুর রশিদ জানান। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বোরকা পরে নৌকায় করে পাশের দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন সাহেদ। আর কিছুক্ষণ দেরি হলে হয়ত তাকে আর পাওয়া যেত না।“

গ্রেপ্তারের পর একটি হেলিকপ্টারে করে সাহেদকে নিয়ে সকাল ৯টার দিকে ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দরে পৌঁছান র‌্যাব সদস্যরা। পরে তাকে বিপুল নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরায় র‌্যাব সদরদপ্তরে।

সাহেদকে হেলিকপ্টার থেকে নামানোর পর এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার বলেন, দালালের মাধ্যমে লবঙ্গবতী নদীর ইছামতিখাল দিয়ে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান।

“গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত ২টা থেকে ওই এলাকায় অভিযান শুরু করেন র‌্যাব সদস্যরা। কিন্তু সে ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করায় গ্রেপ্তার করতে একটু সময় লেগেছে।”
 

বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাহেদ এই সাতক্ষীরারই ছেলে। গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান দপ্তরে র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে তিনি লাপাত্তা ছিলেন।

কোভিড-১৯ পরীক্ষার প্রতিবেদন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়ার পর ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। জানা যায়, ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে আসা এ চিকিৎসালয়ের লাইসেন্সের মেয়াদই পার হয়ে গেছে বহু আগে।

অভিযানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনাভাইরাস চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পর রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

রিজেন্টের এমডি গ্রেপ্তারঃ
র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবরও সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কীভাবে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, সেসব তথ্যও এখন গণমাধ্যমে আসছে। 

রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।

ওই মামলায় সে সময় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাহেদসহ ৯ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে সাহেদের অন্যতম সহযোগী, রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলাটির তদন্তভার মঙ্গলবার গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে দেওয়া হলেও র‌্যাব ওই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে বলে আশিক বিল্লাহ জানান।

কে এই সাহেদঃ
সাতক্ষীরার ছেলে সাহেদ স্কুলের শেষ দিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় ঢাকায় চলে আসেন। তার মা সুফিয়া করিম এক সময় মহিলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাবা সিরাজুল করিম ছিলেন ব্যবসায়ী। শহরের কামালনগরে করিম সুপার মার্কেট নামে একটি বিপণি বিতান ছিল তাদের।

সাহেদের মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা ওই মার্কেট বিক্রি করে স্থায়ীভাবে সাতক্ষীরা ছেড়ে ঢাকা চলে আসেন। তবে সাহেদ মাঝে মাঝে সাতক্ষীরায় যেতেন।

২০০৯ সালে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাহেদ দুই বছরের মাথায় ধানমণ্ডিতে এমএলএম ব্যবসা শুরু করে বহু লোকের টাকা মেরে দেন বলে অভিযোগ আছে। পরে তিনি প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে প্রতিষ্ঠা করেন রিজেন্ট গ্রুপ। হাসপাতালে ছাড়াও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসন, হোটেল ব্যবসা রয়েছে এ গ্রুপের।

বেশ কয়েক বছর আগে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতাদের বাসায় যাওয়া আসা শুরু করেন সাহেদ। এর মধ্যে বিভিন্ন টেলিভিশনের টক শোতে দেখা যেতে থাকে তাকে। অনেক সাংবাদিকের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।

২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে সরাসরি তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে যান।

সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা এবং সরকারি আমলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বহু ব্যক্তির সঙ্গে তোলা অসংখ্য সেলফি নিজের ফেইসবুক পেইজে দিয়ে রেখেছেন সাহেদ। এর মধ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ‘ভিআইপিদের’ মধ্যে তার উপস্থিতির ছবিও আছে। 

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এমএলএম ব্যবসা খুলে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ, চাকরির নামে অর্থ নেওয়া, ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে কো-অপারেটিভ থেকে অর্থ আত্মসাৎ, ব্ল্যাকমেইলসহ নানা অভিযোগে ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে সাহেদের বিরুদ্ধে।

তার প্রতারণার শিকার হওয়া অনেকেই এখন কথা বলতে শুরু করেছেন। অটোরিকশার রুট পারমিটের কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৯১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামে নতুন একটি মামলা হয়েছে সাহেদের বিরুদ্ধে। 

আর কোভিড-১৯ পরীক্ষার নামে জালিয়াতির অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা র‌্যাবের মামলায় বলা হয়েছে, ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে প্রায় ছয় হাজার লোকের কাছ থেকে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আদায় করেছে রিজেন্ট।

যদিও এক্ষেত্রে রোগীর কাছ থেকে কোনো টাকা তাদের নেওয়ার কথা নয়, কারণ সেসব পরীক্ষা সরকারি পরীক্ষাগারে হওয়ার কথা।

এছাড়া সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি ভেঙে রিজেন্ট করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য রোগীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে, আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও এক কোটি ৯৬ লাখ টাকার একটি বিল জমা দিয়েছে বলে জানানো হয় এজাহারে।

সেখানে বলা হয়, “রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ নিজেকে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে সে একজন ধুরন্ধর, অর্থলিপ্সু ও পাষণ্ড।”

চীন বনাম ভারত: কোন পথে হাটবে বাংলাদেশ?

1

চীন এবং ভারতের মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা কেবল বাড়ছেই। উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতিতে উভয় দেশই বাংলাদেশকে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছে। চেষ্টা চলছে বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তারের। গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে এটি বিরল। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এটিকে বাংলাদেশ নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। উভয় দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। আর এতে বাণিজ্যকেই তাদের হাতিয়ার করতে চাইছে। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত চীনের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন, অম্লান দেওয়ান।

ভারত ও চীন-উভয় দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক। তবে ভৌগলিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ধর্মীয় কারনে ভারতের সঙ্গে সর্ম্পক নিবিড় বলে মনে করা হয়।

এ নিয়ে কূটনীতিকদের মধ্যে চলছে তোলপাড়। চায়ের কাপে উঠছে ঝড়। কোন পথে হাটবে বাংলাদেশ? কাকে রেখে কাকে খুশি করবে বাংলাদেশ? প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের কাকে বেশি দরকার? দৃশ্যত এ ইস্যুতে তিন দলে বিভক্ত দেশের সুশীল সমাজ ও বোদ্ধারা। কুটনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি আর রাজনীতি ব্যাখ্যা করে তিনদলই নিজ নিজ মতামত তুলে ধরছেন।

একদল বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের তিনদিকেই ভারত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনেক। ১৯৭১ সালের রক্তাক্ষয়ী মুক্তির লড়াইয়ে ভারত যদি বাংলাদেশের পাশে না থাকতো এ দেশ স্বাধীন হতো কিনা সন্দেহ। তাই ভারতের পাশে থাকাই হবে বাংলাদেশের জন্য আদর্শিক কাজ।

আরেকদল বলছে, নিজ স্বার্থেই ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দিয়েছে। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সাথে যে যুদ্ধ হয়েছিল ভারতের তার প্রতিশোধ নিয়েছে। আর চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের অনিবার্য অংশীদার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি। চীনাদের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সুতরাং চীনকে বাদ দিয়ে ভারতের পাক্ষ নেওয়া হবে বোকামি।

তবে তৃতীয় আরেকটি দল রয়েছে। তারা বলছে, ভারত বাংলাদেশ দুই দেশকেই আমাদের দরকার। অতএব দুপক্ষকে সাথে নিয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

তবে দুপক্ষের মধ্যে যদি সত্যি সত্যি যুদ্ধ লেগে যায় তখন কোন এক পক্ষে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের উপর চাপ আসতে পারে। আর সে পরিস্থিতিতে কী করবে বাংলাদেশ? কী করা উচিত?

বাংলাদেশের সঙ্গে চীন-ভারতের রাজনৈতিক সর্ম্পকটি কেমন? কার সঙ্গে কতটা ঘনিষ্ঠ বাংলাদেশ?

ইতিহাস ঘেটে দেখা যায়, চল্লিশ দশকের শেষে চীনা বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এক ভিন্ন মোড় নেয়। এ সম্পর্ক রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে বন্দি ছিল না। এ ছিল দু’দেশের কিছু মানুষের আদর্শিক সম্পর্ক। হ্যাঁ, বাংলাদেশে সে সময় যে বামপন্থী আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে ওঠে তার শেকড় ছিল চীনে। ৫০ ও ৬০ এর দশকে চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই একাধিকবার বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সফর করেন। চীনা কমিউনিষ্ট পার্টি সে সময় থেকেই বাংলার জাতীয়তাবাদী নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতো। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী প্রমুখ। এ সম্পর্কে ছন্দপতন ঘটে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। চীন পাকিস্তানকে সরাসরি সমর্থন করে। এর পেছনে জটিল ভূ-রাজনৈতিক কারণ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থ দিয়েছিল। আর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের ছিল মতাদর্শগত ও আরো নানা বিষয়ে বিরোধ। আর ১৯৬২ সালেতো চীন সরাসরি মরণঘাতি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল ভারতের সঙ্গে। এসব কারনে চীন পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়। অবশেষে বাংলাদেশ যুদ্ধে বিজয়ী হলেও চীন ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তিতেও ভেটো দেয় চীন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ১৯৭৬ সালে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সর্ম্পক স্থাপিত হয়। এরপর বাংলাদেশের অস্ত্র সরবরাহ করতে থাকে চীন। তবে তার সবই আসতে থাকে পাকিস্তান হয়ে। অর্থাৎ এসব অস্ত্রের মূল উৎপাদনকারী চীন হলেও পাকিস্তানই এসব ট্রেডিং করতো বাংলাদেশে। মাঝখানে পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তারা মোটা কমিশন পেয়ে লাভবান হতো। বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাতে চীনারা তৎপর ছিল বলেও অনেকে মনে করেন।

অন্যদিকে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও জনগণ যে সমর্থন ও সহযোগিতা বাংলাদেশ ও বাঙালিদের দিয়েছিল তা দুদেশের সম্পর্কে নতুন ভিত্তি রচনা করেছিল। ভারত মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের স্বকীয়তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন জানিয়েছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুর্নগঠনে তাই ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশও জানিয়েছিল তার কৃতজ্ঞতা ও সম্মান। ভারত বুঝতে পেরেছিল ভূ-রাজনৈতিক নানা দিক বিবেচনায় বাংলাদেশকে তার লাগবে। আর একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ ভারতের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
বাংলাদেশ ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন না হলে বিপদ। তবে ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানে ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহনের কারণে বাংলাদেশের উপর অসন্তুষ্ট হয় ভারত। তার প্রভাব পড়ে দুদেশের সম্পর্কেও। তৈরি হয় দূরত্ব। দু’দেশের স্থলসীমানা নির্ধারণ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা তারই একটি উদাহরণ। তবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। জেনারেল এরশাদ অবশ্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুন:প্রতিষ্ঠায় তৎপর হন।

২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। আসে আমূল পরিববর্তন। গত এক দশকেরও বেশি সময় জুড়ে দু’দেশের মধ্যে স্বাাক্ষরিত হয়েছে নানা চুক্তি। এ সময়ে ভারতে সরকার পরিবর্তিত হলেও বাংলাদেশের ব্যাপারে নীতিগত কোন পরিবর্তন আসেনি। ছিটমহল বিনিময়, ভারতকে সড়ক পথে ট্রানজিট দেওয়া, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া, ভারত-বাংলাদেশ প্রতিরাক্ষা চুক্তি, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে সহায়তা দু’দেশের সহযোগিতার অন্যতম দৃষ্টান্ত। এ সময় বাংলাদেশীদের ভারত যাওয়া যেমন বেড়েছে, ভারতীয়দের বাংলাদেশে আসাও তেমনি বেড়েছে। আসা যাওয়া বাড়লেও বাংলাদেশের মানুষের একটি বিরাট অংশের মধ্যে বেড়েছে ভারত বিরোধিতা। তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থান এ বিরোধিতাকে আরও চাঙ্গা করেছে। তার মানে দুই দেশের সরকারের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে দারুন। কিন্তু দুই দেশের জনগনের সম্পর্ক সে মাত্রায় গভীর হয়নি।

২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী চীনের সাহায্যে বাংলাদেশে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথেই চীন সেটি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের ত্রিমুখী চাপে সে প্রস্তাব থেকে সরে এসেছিল বাংলাদেশ। পরে জাপানের সাহায্য নিয়ে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পথে এগোয় বাংলাদেশ।

আর চীনের সাথে অন্যান্য সহযোগিতা প্রকল্প চালিয়ে যায় বাংলাদেশ। গত এক দশকে চীন থেকে অনেক সমরাস্ত্র সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ। আমাদের সেনা কর্মকর্তারা চীন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
অন্যদিকে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক থাকলেও প্রতিরক্ষা বিষয়ক সর্ম্পক খুবই সামান্য। ভারত থেকে কোন সমরাস্ত্র কেনারও খবর নেই।

চীন বাংলাদেশে রপ্তানি করে প্রায় ১৭-১৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য অথচ বাংলাদেশ থেকে আমদানি করে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারেরও কম। বাংলাদেশকে সাহায্য দেয় ১ বিলিয়ন ডলারের মতো। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২৪ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা বা আশ্বাস দেন।

অন্যদিকে, ভারত বাংলাদেশে রপ্তানি করে প্রায় প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য অথচ বাংলাদেশ থেকে অামদানি করে ২৬০মিলিয়ন ডলারেরও কম। আর দু’দেশের মধ্যে যে ইনফরমাল ট্রেড হয় তা পুরোটাই ভারতের অনুকূলে। ধারনা করা হয় এর পরিমান ২ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের মতো। বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয়দের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমান ৪ বিলিয়ন ডলার। ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য দেয় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের মতো। তবে বর্তমান সরকারের অামলে ভারত বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ বিনাশুল্কে প্রবেশাধিকার দিয়েছে। যদিও শুল্ক বর্হিভূত অন্যান্য নানা বিধিনিষেধ আরোপের কারণে বাংলাদেশ এ সুযোগকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছে না।

চীন-ভারত সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর চীনও একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশকে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোন মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।

বিশাল বাজার ও বহুমাত্রিক পণ্যসামগ্রীর কারণে বানিজ্য বিষয়ে চীন ভারতের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বলে মনে হয়। তাছাড়া বাংলাদেশী পণ্যের প্রবেশাধিকার যদি চীন উন্মুক্ত করে তাহলে বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুকে পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নেই। অার সে পথেই এগুচ্ছে চীন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশী সব পণ্যের শুল্কমু্ক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার টোপ দিয়েছে চীন। বাংলাদেশ অবশ্য এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ক্ষেত্রে দু’দেশের মনোযোগের কেন্দ্রে রয়েছে অবকাঠামো। দু’দেশই বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে নানা প্রস্তাব দিয়ে আসছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে। রেল খাতে দুই দেশই বাংলাদেশে কাজ করতে চায়। কাজ করতে চায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ নিয়েও। সুন্দরবনে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের কাজ ভারত পেয়েছে। তবে তা পরিবেশগত কারণে বাধার মুখে পড়েছে। তবে উৎপাদন বা বৃহৎ শিল্প স্থাপনে দুটি দেশের কেউই বড় কোন বিনিয়োগ করেনি। তবে মাঝে মাঝে তাদের এ ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগের কথা শোনা যায়।

আর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপর ভারতের প্রভাব একচ্ছত্র। ব্যাপক। কোনো কোনো বিষয়ে আগ্রাসী। দুই দেশের রয়েছে অভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি। প্রায় লাখখানেক ছাত্র ছাত্রী ভারতে পড়াশুনা করে। ভারতের টিভি চ্যানেলগুলো এতটাই জনপ্রিয় যে বাংলাদেশের সব পণ্যের প্রচারও সে সব টিভিতেই বেশি হতো। ফলে এদেশের টিভি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপন না পেয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছিল বা রয়েছে। তাদের চাপে পড়ে কিছুদিন আগে তথ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়ার উপর কড়াকড়ি আরোপ করে।

অন্যদিকে বাংলাদেশে চীনের সাংস্কৃতিক প্রভাব প্রায় নেই বললেই চলে। চীনা ভাষা শেখার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া এদেশে তাদের কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চোখে পড়ে না। চীনা সংস্কৃতি নিয়ে বাংলাদেশীদের মধ্যে তেমন একটা আগ্রহ চোখে পড়ে না।

উপরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, দুই দেশ বাংলাদেশকে যা দেয়, নেয় তার চাইতে অনেক বেশি। তাই বাংলাদেশের উচিত হবে ভারত-চীনের এ দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে নিজের সুবিধা আদায়। আরও পরিস্কারভাবে বললে ন্যায্য হিস্যা বা প্রাপ্য আদায়। বাংলাদেশের ভেতরে অনেক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন যে গত এক দশকের বেশি সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে যতটা সুবিধা দিয়েছে বিনিময়ে পেয়েছে অনেক কম। আর এ কারণে ভারত চীনের সম্পর্কের এ টানা পোড়েনের সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ যা যা দুই দেশ থেকে পেতে চায় তার তালিকা তৈরি করে কৌশল ঠিক করে..তথ্য উপাত্ত হাতে নিয়ে দুই দেশের সঙ্গে বসা উচিত। আর দু’দেশের কারও পক্ষ না নিয়ে নিজ সুবিধা আদায় অবশ্যই সম্ভব। এটাই সময়।
অম্লান দেওয়ানঃ সাংবাদিক, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক।

গভর্নরের মেয়াদ আরো দু’বছর বাড়লো, সংসদে বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

0

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে থাকার মেয়াদ সাতষট্টি বছর করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের জন্য বিল পাস হয়েছে জাতীয় সংসদে।
এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরকে আরও দুই বছর ওই পদে রাখতে সরকারের আর কোনো বাধা থাকছে না। ফজলে কবিরের বয়স ৬৫ বছর হওয়ায় গত ২ জুলাই তার মেয়াদ শেষ হয়।

অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামালের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২০’ পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন।

বিলটির বিষয়ে জাতীয় পার্টির ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা আপত্তি জানান। তারা বলেন, কোন একজন ব্যক্তির জন্য এমন আইন করা উচিত নয়।

খসড়া আইনটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, “একজনের জন্য এই আইন করা হচ্ছে। যোগ্য লোককে নিয়োগের পথ বন্ধ করা হচ্ছে। অর্থাৎ অন্য যারা আছেন তাদের অযোগ্য মনে করছি।“
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “গভর্নর পদে বয়স ৬৭ করা হলে এখন সিভিল সার্ভিসের সবাই চাইবে তাদেরও বয়সসীমা বাড়ানো হোক। সরকারের এ বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত।

“আরেকটা কথা, যোগ্য লোক হলেই ভালো গভর্নর হবেন এমন না। একজন গভর্নরের সময়ে রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। এই গভর্নর কী সেই টাকা ফেরত এনেছেন? ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে তিনি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন আমরা জানি না।  একজন ব্যক্তির জন্য এই আইন করা হলে তা ঠিক নয়। “

এসব বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো বক্তির জন্য নয়। গভর্নর পদের জন্য আইন করছে।

“সংসদ সদস্যরা অনেক যুক্তিসঙ্গত কথা বলছেন। সবচেয়ে বড় যুক্তি বাস্তবতা। সেই বাস্তবতার জায়গা থেকে এই আইন করা হচ্ছে।“

পরে সংশোধনী প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ, “আমরা দেখত চাই এই আইন পাস হওয়ার পর নতুন কোন ব্যক্তিকে গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।“

এর জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক শক্তিশালী করতে আইনটি করা প্রয়োজন। কোনো ব্যক্তির জন্য এটা হচ্ছে না। প্রয়োজনের জন্য করা হয়েছে। সামনে কেউ যদি মনে করেন ৭০ করবেন, তা করতে পারেন।“

ফজলে কবিরকে গভর্নর রাখতে আইন সংশোধন হচ্ছে  

অর্থমন্ত্রীর পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রীই বুধবার ১৯৭২ সালের ‘দ্যা বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার’ সংশোধন করতে সংসদে বিল তোলেন।

সংসদে কোনো বিল উত্থাপনের পর সাধারণত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠান। তবে এই বিলের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।

পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকা যাবে, বিদ্যমান আইনে যা ৬৫ বছর ছিল।

বিদ্যমান আইনে গভর্নর পদে ফজলে কবিরের মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ ছিল না। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর এই সময়ে ফজলে কবিরকে আরও দুই বছর রাখতে চায় সরকার। মূলত সে কারণেই আইন সংশোধনের প্রয়োজন হল।

গত ২ জুলাই ছিল ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবস। ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাকে পুনঃনিয়োগ দিতে পারেনি সরকার।

আইনটি করার উদ্যোগ নেওয়া সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর বাস্তবায়ন নির্বিঘ্ন করতেই ফজলে কবিরকে আরও কিছু সময়ের জন্য চায় সরকার।

আর খসড়া আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “দেশের রাজস্ব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কার্যকর মুদ্রানীতি প্রণয়ন, মুদ্রা সরবরাহ ও ব্যাংক ঋণ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রা-মান সংরক্ষণ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমন্বয় প্রভৃতি বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

“দেশের সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যকর ও উন্নততর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত-প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রাজ্ঞতা, বিচক্ষণতা, কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ববাচক গুণাবলি প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যের মূল নিয়ামক শক্তি বিবেচনায় উক্ত পদে যোগ্যতা ও উপযুক্ত ব্যক্তিকে বিদ্যমান বয়সসীমা অপেক্ষা অধিকতর বয়সে নিয়োগের সুযোগ রাখা কিংবা প্রয়োজনবোধে উক্ত পদে সমাসীন ব্যক্তিকে বিদ্যমান বয়সসীমা অতিক্রমণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্যতা অনুসারে পুনর্নিয়োগে প্রদান কিংবা উক্ত ব্যক্তির নিয়োগের নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতা বজায়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন।”

“কোর্ট পুরোপুরি চালু হউক “

0

করোনা পরিস্থিতির কারণে চার মাস ধরে আদালতের বিচার কার্যক্রম বন্ধ। উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে স্বল্প পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্ট চলছে। এতে সুযোগ পাচ্ছেন না বেশিরভাগ আইনজীবী। ফলে মামলা মোকদ্দমা না থাকায় আইনজীবীরা পড়ছেন বিপাকে, আর্থিক অনটনে। আইনজীবীদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আদালত পুরোদমে খুলে দেয়া হোক। এ নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, নাহিদ সুলতানা যূথী। যিনি সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। আইনজীবীদের স্বার্থ বিবেচনায় এডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথী’র লেখাটি আমরা প্রকাশ করলাম।

“বর্তমান প্রেক্ষাপট ও আইন অঙ্গন ”
দেশে স্বল্প পরিসরে অফিস চলছে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে , প্রায় ৪ মাসের উপরে আমরা ঘরে বসে অদৃশ্য শত্রু মোকাবেলা করছি। আমাদের কোনও দিকেই রক্ষা নাই । ঘরে থাকলে জীবন চলবে না । না খেয়ে মরতে হতে পারে আর বাইরে গেলে করোনা ……কোনটা আমাদের গ্রহণ করা উচিত !
বিচার প্রার্থীরা অবরুদ্ধ ,আদালত বন্ধ ,স্বল্প পরিসরে চলছিল কয়েকটি আদালত কিন্তু ৪ মাসের উপরে চলছে আমাদের এই অদৃশ্য যুদ্ধ … মাননীয় আইন মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভার্চুয়াল কোর্ট খোলা রেখে স্বল্প আকারে আদালত খোলা হবে , সুপ্রিম কোর্ট বার এর দাবী , বিচার প্রার্থীদের এবং আইনজীবীদের জন্য রেগুলার কোর্ট খুলে দেয়ার দাবী …………
জীবন নাকি জীবিকা কোনটা প্রাধান্য পাবে?

জীবন আসলে যখন যেমন , এখন জীবন ৪ মাসের উপরে বন্দি ,কতদিন পর্যন্ত আমাদের এই অদৃশ্য শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে জানিনা , সংসার কিভাবে চলবে , বাড়িভাড়া না দিতে পেরে অনেকেই চলে গিয়েছে দেশে গ্রামের বাড়িতে …চলে গেল বা বাড়ি ছেড়ে দিল সবই চলছে কিন্তু কার দুঃখ কে দেখবে অবস্থা চলছে ,কালকেই কোনও একটি টিভি তে দেখেছি একজন বাড়িওয়ালার আকুতি উনি ভাড়াটিয়া কে ছাড়তে চান না … কেন ? কারন উনার সংসার চলে বাড়িভাড়ায় এভাবে কয়েক স্তরে চলছে জীবন যুদ্ধ প্রত্যেকটি সেক্টর একে ওপরের উপর নির্ভরশীল । এখানে বলাই বাহুল্য অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে জীবিকা…।। অসুখ ,হসপিটাল ,অপারেশন টাকার জন্য না পারছে চিকিৎসা করাতে, না পারছে ঘরে বসে স্বস্তিতে থাকতে …অবস্থাদৃষ্টে দাঁড়িয়েছে যা হবার হবে ……যা হবার হবে কিন্তু মানুষ জীবন যুদ্ধে হেরে যেতে চায়না তাই বিশ্ব এখন স্বল্প পরিসরে নেমেছে কাজে , ভেঙ্গেছে লকডাউন ,যার যার যোগ্যতা ও কাজের নেচার অনুযায়ী রেগুলার বা ভার্চুয়াল, কেউ কিন্তু বসে বেতন পাচ্ছে না ! বাংলাদেশে
যারা চাকরি করেন তাদের চিন্তা নাই ।।সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সম্ববত ৬০ % বেতন পাচ্ছেন সরকারী কর্মচারীরা কিন্তু আমাদের আইন মন্ত্রানলয়ের সরাসরি নিয়োগকৃত প্রায় ২০০ বা ততোধিক আইন কর্মকর্তা বেতন পাচ্ছেন ঘরে বসেই …চোখের উপর অসঙ্গতি দেখলে মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয় …। একটি গ্রুপ জীবনের মায়া ত্যাগ করে জীবীকার প্রয়োজনে মাঠে নামতে চাচ্ছে আর আরেকটি গ্রুপ বসে বেতন পাচ্ছেন তারপরও . কোর্ট কাছারি খোলার ক্ষেত্রে বিচারপতি মহোদয়দের মতবিরোধ খবর দেখলে জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়ে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার ঘোষণায় জীবীকার উপর গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন এবং সরকারি কর্মচারীরা সীমিত আকারে তাদের কাজ করছেন /করে চলেছেন সেখানে বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তে হতে হবে সরকারের সাথে সমন্বয় করে জনগণের কথা চিন্তা করা … দেশের একটি অঙ্গ এমন ভাবে স্বল্প পরিসরে চলতে পারে না । আইনজীবী সমিতির দাবী রেগুলার কোর্ট খুলে দেয়া হোক ….. সামাজিক দুরত্ব মেনে যার যার জীবন তার তাই নিজের জীবনের প্রতি দায়িত্ববোধ নিজেদের ই আনতে হবে …।।আইনজীবীরা চাচ্ছে রেগুলার কোর্ট কিন্তু রেগুলার কোর্ট আর ভার্চুয়াল কোর্ট দুই ই থাকতে পারে ….
রেগুলার হোক আর ভার্চুয়াল হোক ৫৬ + কোর্ট ও যদি ভার্চুয়াল হতো তাইলে জনমনে ক্ষোভ হতোনা, বিচার প্রার্থীরা পেতো তাদের নাগরিক অধিকার । বর্তমান কমিটিকে সাধুবাদ জানাই দুর্নীতির শিকড়ে গিয়েছেন কিন্তু তা যেন সিদ্দিক এন্টারপ্রাইজ নামক একটা বহিরাগত ব্যবসায়িকে দায়ীর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেদের দায়িত্বের অবহেলা ও এর সাথে কি ধরণের রাঘব বোয়ালেরা জড়িত ,কারা কারা জড়িত তা খুঁজে বের করবেন তাইলে আপনাদের সাধুবাদের পরিধি হবে আরও ব্যাপক । আপনারা কোর্ট খোলার জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির সাথে আলোচনা করতে পারেন ……। AAG DAG হতে কোনও অতিরিক্ত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না ….আমি জানিনা আছে কিনা অতিরিক্ত কোনও যোগ্যতা , আমি জানতে রাজি আছি যোগ্যতার মাপকাঠি কি ? অনেক দিন হয়েছে যারা ১০ বা তার ও বেশি সময় আইন কর্মকর্তা হিসাবে আছেন তাদের বাদে নতুন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে সমতা আনা যেতে পারে

সংবাদে দেখছি মাননীয় বিচারপতিরা একমত হতে পারেননি তাই ভার্চুয়াল কোর্ট চলবে ……।।১৩ টি ভার্চুয়াল কোর্ট দিয়ে এভাবে রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ এমন ভাবে চলতে পারে না। আমরা পুরনায় ৫৬ বা কাছাকাছি কোর্ট ই ভার্চুয়াল চাই অথবা কিছু রেগুলার কিছু ভার্চুয়াল কোর্ট ( স্বাভাবিক সময়ের মত ) কোর্ট হতে পারে …এবং আমরা আইনজীবীরা সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের কোর্ট পুরোপুরি চালু হোক সেটাই আমাদের কাম্য ……। আমাদের গতি হবে সচল, করোনা হবে স্থবির …।। করোনায় থেমে যাবে না আমাদের স্বাভাবিক গতিধারা……।

পাপলু কুয়েতের নাগরিক হলে সংবিধান অনুযায়ী তার এমপি পদ বাতিল হবে, সংসদে প্রধানমন্ত্রী

0

মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুরের এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংসদকে তিনি জানান,পাপলু কুয়েতের নাগরিকত্ব নিয়ে থাকলে সংবিধান অনুযায়িই তার সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “সে কুয়েতের নাগরিক কী না… সেটা কিন্তু কুয়েতের সাথে আমরা কথা বলছি, সেটা দেখব। আর যদি এটা হয়, তাহলে তার ওই সিট হয়ত খালি করিয়ে দিতে হবে। কারণ যেটা আইনে আছে সেটা হবে। তার বিরুদ্ধে আমরা এখানেও তদন্ত করছি।”
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলের সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি রয়েছে।
পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।
প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেও পাপুলের বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ওই ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন,দুদক।
সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বুধবার বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ কুয়েতে পাপুলের গ্রেপ্তার হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি এমপি পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান।
তার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সে (পাপুল) কিন্তু স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। সে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আমাদের (আওয়ামী লীগের) নমিনেশন চেয়েছিল, আমি দিইনি। কিন্তু সে স্বতন্ত্র ইলেকশন করেছে।
“ওই সিটটি আমরা জাতীয় পার্টিকে দিয়ে দিয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির নোমান (মোহাম্মদ নোমান) নমিনেশন পেয়েছিলেন, কিন্তু নির্বাচন করেননি। সেখানে ওই লোক (পাপুল) জিতে আসেন। আবার তার ওয়াইফকেও যেভাবে হোক (সংরক্ষিত আসনের এমপি) বানায়। কাজেই এটা কিন্তু আমাদের করা না।”

রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত প্রত্যাবাসনের পক্ষে ভারত

0

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এস.জয়শংকর বলেন,বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিবেশী হিসেবে ভারত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে । তিনি বলেন,বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত,নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনেই সকলের মঙ্গল নিহিত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনকে সম্প্রতি লেখা এক পত্রে ড.এস.জয়শংকর এসব বিষয় উল্লেখ করেন।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার পূণর্ব্যক্ত করেন ড. এস. জয়শংকর। তাছাড়া দু’দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পারিক অংশীদারিত্ব অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি পত্রে উল্লেখ করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।