ঢাকা   বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ৮ চৈত্র ১৪২৯   সকাল ১০:১৬ 

Home Blog

মিডিয়া মুঘল রুপার্ট মারডক পঞ্চম বিয়ে করছেন ৯২ বছর বয়সে

0

ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন মিডিয়া মোগল হিসেবে পরিচিত ৯২ বছর বয়সী রুপার্ট মারডক । সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা অ্যান লেসলি স্মিথের (৬৬) সঙ্গে তিনি বাগদান করেছেন বলে নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার রুপার্টের মালিকানাধীন নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিনেত্রী ও মডেল জেরি হলের সঙ্গে বিচ্ছেদের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে আবারও বিয়ে করার করার খবর দিয়েছেন রুপার্ট । তার নতুন বান্ধবী অ্যান লেসলি স্মিথের সঙ্গে ছয় মাস আগে তার প্রথম দেখা হয়।
নিউইয়র্ক পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মারডক বলেন, ‘আমি খুব নার্ভাস ছিলাম, আমি প্রেমে পড়ায় ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু আমি জানতাম এটিই আমার শেষ চেষ্টা। স্মিথ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমি খুব খুশি।’

এদিকে রুপার্টের হবু স্ত্রী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা অ্যান লেসলি স্মিথ একজন বিধবা। তার স্বামী চেস্টার স্মিঠ ছিলেন একজন গায়ক ও ব্যবসায়ী।
বিয়ে নিয়ে অ্যান লেসলি নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন,আমি ১৪ বছর ধরে বিধবা। রুপার্টের মতো আমার স্বামীও ব্যবসায়ী ছিলেন।
আসছে গ্রীষ্মের শেষেই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে।
২২ বছর বয়সে সংবাদপত্রের ব্যবসা শুরু করেন রুপার্ট। বিশ্বের ৫টি দেশে ১২০টি পত্রিকার মালিক তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। মার্কিন ফক্স নিউজ, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, ইংল্যান্ডের দ্য সান ও নিউইয়র্ক টাইমসের মালিক রুপার্ট।
এর আগে রুপার্ট প্যাট্রিসিয়া বুকার , সাংবাদিক আন্না মান , চীনা বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা ওয়েন্ডি ডেংক এবং অভিনেত্রী-মডেল জেরি হলকে বিয়ে করেন।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা প্রশ্নে রিট আপিল বিভাগেও খারিজ

0

মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি।
মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আইনজীবী এম এ আজিজ খানের রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
রিট আবেদনে এম এ আজিজ খান হাইকোর্টের আদেশ ও প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতির আদেশের পর সাহাবুদ্দিনের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দায়িত্ব পালনে কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসকে মোহাম্মদ মোরশেদ।

মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে আইন ও সংবিধানের কোনো লঙ্ঘন নেই উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি এম এ আজিজ খানের আবেদন খারিজ করে দেন।
আদালতে মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এবিএম আলতাফ হোসেন এবং নিজের পক্ষে ছিলেন এম এ আজিজ খান।
আবেদনে এম এ আজিজ খান মো. সাহাবুদ্দিনকে দেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ঘোষণার গেজেট প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য হাইকোর্টের কাছে আবেদন করেন।
আবেদনে তিনি বলেন, ২০০৪ এর ধারা ৯ অনুযায়ী, মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ করা যাবে না কারণ তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন অবসরপ্রাপ্ত কমিশনার এবং রাষ্ট্রপতির পদটি লাভজনক।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. সাহাবুদ্দিনকে বাংলাদেশের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ আগামী ২৪ এপ্রিল শেষ হবে এবং তিনি ২ মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ায় আর রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ থেকে ৬০ দিন আগে এই নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে। সূত্র-ডেইলী স্টার।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে : প্রধানমন্ত্রী

0

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে এবং জনগণের সেবা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে আমরা যদি ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখব এবং জনগণের সেবা করব।’
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বুধবার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের সহকারী মন্ত্রী চেন ঝোয়া সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে সরকারপ্রধান বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সরকার বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং দেশবাসী বর্তমানে এর সুফল পাচ্ছে।
এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।

তামাকজনিত মৃত্যু রোধে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ সময়োপযোগী : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

0

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, তামাকজনিত মৃত্যু কমাতে আইন শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বেইলি রোডের সরকারি বাসভবনে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়ন্সে- আত্মা’র একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বুধবার সাক্ষাতের সময় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এ সময় প্রজ্ঞা এবং আত্মা’র পক্ষ থেকে জানানো হয় বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠির ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লক্ষ) তামাক ব্যবহার করে। তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় যে আর্থিক ক্ষতি হয় তার পরিমাণ অনেক বেশি। তামাকের এই ভয়াবহতা রোধে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এলক্ষ্যে তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন যুগোপযোগী করার নির্দেশ দেন। পরবর্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর সাথে আলোচনায় অংশ নেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস এর বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সুকান্ত গুপ্ত অলক, চ্যানেল এস-এর ডিরেক্টর (নিউজ অ্যান্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স) শংকর মৈত্র, আত্মা’র আহ্বায়ক মতুর্জা হায়দার লিটন এবং প্রজ্ঞা’র কর্মসূচি প্রধান মো. হাসান শাহরিয়ার।(বাসস)।

অফিসকক্ষে সাব-রেজিস্ট্রারের ওপর হামলা, অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে, প্রতিবাদে সারাদেশে কর্মবিরতি

0

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর উপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে হামলার অভিযোগ ওঠেছে। সাব রেজিস্ট্রার তার নিজ অফিসকক্ষেই হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে রেজিস্ট্রেশন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রতিবাদে দেশের সব সাব রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়,১০ জানুয়ারী সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর এজলাস কক্ষে সরকারি দায়িত্বপালনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন। তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তার নির্দেশে কতিপয় দুস্কৃতিকারী হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানানো হয়।
ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ নিয়ে দুধরণের বক্তব্য পাওয়া গেছে। সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী জানান তার ওপর হামলার সঙ্গে ইউএনও আবুল হায়াত জড়িত। ইউএনওর নির্দেশে কিছু লোক তার অফিস কক্ষে গিয়ে দলিল সম্পাদনের সময় হামলা করে। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। তার মাথায় ১৫-১৬টি সেলাই পড়েছে।
তবে ইউএনও আবুল হায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীকে একজন দুর্নীতিবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তিনি সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে গিয়েছিলেন ঠিকই তবে সেটা একজনের পেনসনের বিষয় নিয়ে কথা বলতে। এসময় কথাকাটাকাটি হয়েছে মাত্র। সাব রেজিস্ট্রারই আমাদের হুমকি দিয়েছেন। খারাপ ব্যবহার করেছেন। তার পরেও পরিস্থিতি শান্ত করে চলে এসেছি।
ইউএনও বলেন,‘সাব রেজিস্ট্রারের ব্যবহারের কারণেই তিনি মার খেয়েছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। তার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভাতেও উঠেছে। তবে তার সঙ্গে যে আচরণ হয়েছে, সেটি ঠিক করা হয়নি। এর তদন্ত হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা বেগমও,এই ঘটনার সঙ্গে ইউএনও আবুল হায়াত জড়িত। তার ইন্ধনেই সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ওপর হামলা হয়েছে। অফিস চলাকালীন সময়ে কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় একজন সরকারি কর্মচারীর ওপর এই ধরনের হামলা ন্যাক্কারজনক।
আফসানা বেগম বলেন, ‘ঘটনার আধা ঘন্টা আগে ইউএনও দলবল নিয়ে গিয়ে সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীকে শাসিয়ে এসেছিলেন। তাকে মারপিটের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ইউসুফ আলী আমাকে তাৎক্ষণাৎ ফোনে জানিয়েছিলেন। শাসিয়ে আসার সময় ইউএনও ইউসুফ আলীর ফোনটিও ছিনিয়ে নিয়ে এসেছেন। ওই ফোনটি এখনো ইউএনও তার কাছে রেখেছেন। এসব ঘটনা আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসক বিষয়টি দেখবেন বলেছিলেন। কিন্তু তার পর পরই সাবরেজিস্ট্রারের ওপরে হামলা করা হয়েছে।’
জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা বেগম আরও জানান, ইউসুফ আলীকে মারপিট করা হয়েছে শিবগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সাবেক প্রয়াত এক কর্মচারীর পেনসনের ফাইল পাশ করার ঘটনা নিয়ে। ওই কর্মচারী ২০১৪ সালে অবসর নেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি মারা যান। এখন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বোন এসে পেনসন দাবি করছেন। কিন্তু ওই স্ত্রীর কোনো কাবিন নামা দেখাতে পারেননি তারা। এ নিয়ে মূলত ফাইলটি ছাড়তে পারছিলেন না সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী। আর ওই ফাইল ছাড়ার জন্য ইউএনও মঙ্গলবার ইউসুফ আলীর খাস কামারায় গিয়ে তাকে শাসিয়ে আসেন। এসময় ইউসুফের এক কর্মচারীকেও শার্টের কলার ধরে ইউএনও মারপিটের হুমকি দিয়েছিলেন। তার আধা ঘন্টা পরই ঘটে হামলার ঘটনা। কাজেই এর সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনার সম্পৃক্ততা নেই। ইউএনও এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
তবে স্থানীয়রা জানান, শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সাবেক এক কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর মারা যান। এরপর তার স্ত্রী প্রতিবন্ধী মেয়ের অনুকূলে পেনসনের টাকা দিতে সুপারিশের জন্য সাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর কাছে যান। এ কাজের জন্য তাকে অতিরিক্ত টাকাও দিয়েছেন। তবে ১৫ মাস ধরে ঘুরেও কোনো সুরাহা মেলেনি। উল্টো অশালীন আচরণ করেন। শুধু তিনি নন, সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে তিনি এমনটা করেন। এছাড়া দলিল লেখকদের সঙ্গেও অসদাচরণ করেন বলে অভিযোগ আছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা এমনটা ঘটিয়েছেন।
তারা জানান, গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ১০ দিন দলিলে অতিরিক্ত টাকা আদায়, দলিল লেখকদের কথায় কথায় শোকজ, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি বন্ধ, দলিল লেখকদের সঙ্গে অসদাচরণসহ জেলা রেজিস্ট্রারের বেঁধে দেয়া নীতিমালার দাবিতে কলম বিরতি পালন করেছিলেন দলিল লেখকরা।

ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসি

0

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের ধীরগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন িপ্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব। আলাপ-আলোচনা করে এগুলোকে যতটা ওভারকাম করা সম্ভব আমরা সেটি চেষ্টা করব।
বুধবার রংপুর সিটি নির্বাচনে ইভিএমের ধীরগতি নিয়ে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সিইসি একথা বলেন। সিইসি বলেন, সম্প্রতি রংপুরে সিটি করপোরেশনে যে নির্বাচনটি হয়েছে, নির্বাচন সুন্দর হয়েছে, সুষ্ঠু হয়েছে, অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। কিন্তু সেখানে কিছু সংকটের কথা বলা হয়েছে। কিছু অভিযোগ আমরা তখনই পাচ্ছিলাম মিডিয়ার সুবাদে। যেমন ভোট স্লো হচ্ছে, একটা বড় ধরনের অভিযোগ ছিল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্টও মিলছিল না।
তিনি বলেন, আসলে কেন ভোট বিলম্বিত হচ্ছে, এ অভিযোগটা এর আগে আমরা কখনো পাইনি। এটা আমাদের খুব উদ্বিগ্ন করে তুলল। আমরা তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এ বিষয়গুলো যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন, যারা মিডিয়ার কর্মী হিসেবে সেখানে কাজ করেছেন এবং আমাদের নির্বাচন কর্মকর্তা সেখানে থেকে যারা নির্বাচন ম্যানেজ করেছেন—তাদের আমরা সভায় আহ্বান করে ফিডব্যাক নেব।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বৈঠকে পাওয়া মতামতগুলো পর্যালোচনা করে চেষ্টা করব সংকটগুলো ওভারকাম করার জন্য। একই সঙ্গে আপনাদের বলছি, অন্যান্য নির্বাচনগুলোতে কিন্তু আমরা এ সমস্যাগুলো পাইনি। আমাদের মিডিয়া কর্মীরা কিছু কিছু বলেছেন সেগুলো যৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। যেটাই হোক, ফিডব্যাক নেয়ার দরকার ছিল। আমরা সেটি নিয়েছি। ফিডব্যাক নিয়ে আমরা চাই স্বচ্ছ নির্বাচন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। সেখানে এ জিনিসগুলো আমাদের প্রত্যাশা। এ ব্যাপারে আপনারা আমাদের সবসময় সহযোগিতা করেছেন। সবসময় সহযোগিতা করবেন।

রিফাত হত্যা : মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে হাইকোর্টের অপারগতা

0

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার জামিন আবেদনটি শুনতে অপারগতা জানান।
আদালতে মিন্নির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন ও অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। পরে জামিউল আহসান ফয়সাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত মিন্নির জামিন আবেদন শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। বেঞ্চের কনিস্ট বিচারপতি আবেদনটি শুনতে চাননি। পরে আবেদন ফেরত দেন। আমরা এখন হাইকোর্টের অন্য কোনো বেঞ্চে জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করব।’ গত ১৬ অক্টোবর বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।
এরপর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ/ ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা। পরে ২০১৯ সালের ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হন।
হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওই দিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন। ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক—দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন রয়েছেন। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়।
পরে সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক শেষে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ডেও দণ্ডিত করেন। বাকি চারজনকে খালাস দেয়া হয়।

ম্যুরালে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এমপির ছবি: ৭ দিনের মধ্যে সরাতে বলেছে হাইকোর্ট

0

ম্যুরালে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে নিজের ছবি যুক্ত করে দিয়েছিলেন সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। শুধু তিনিই নন, তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মলে হোসেন রুকনের ছবিও যুক্ত করে দেন। থাকা অন্য ছবি সরাতে সাত দিনের সময় দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সরকারিভাবে নির্মিত ম্যুরালের মূল নকশা পরিবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির নিচে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়।
গত রোববার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এ ঘটনায় আদালত বলেন, ‘এটা তো গুরুতর অসদাচরণ।’ এ সময় সাত দিনের মধ্যে এসব ছবি অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’-এর ম্যুরাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এডিপির অর্থায়নে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় এই ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। এতে ম্যুরালের মূল নকশা পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবির সঙ্গে স্থানীয় এমপি ও তার ভাইয়ের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়।
এই ছবি কেন যুক্ত করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা চেয়ে ম্যুরাল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. ইজাজুর রহমান রানাকে চিঠি দেন সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান। এরপর এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করেন মধ্যনগরের অধিবাসী রাসেল আহম্মেদের স্ত্রী আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা আহম্মেদ। সূত্র-দৈনিক কালবেলা।

বিরোধে জড়িয়ে যাচ্ছেন আইনজীবী ও বিচারকরা

0

দেশের অধস্তন তথা বিচারিক আদালতে চার মাসে চারটি ঘটনায় দেখা গেছে, বিচারকদের সঙ্গে আদালতেই বাদানুবাদ-কলহবিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন আইনজীবীরা। এমনকি রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটরও (পিপি) জড়িয়েছেন এমন অপ্রীতিকর ঘটনায়। তাঁদের বিরুদ্ধে এজলাসেই বিচারকদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন ও হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাসে হট্টগোল, বিচারক ও আদালতের কর্মচারীদের ‘গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের’ ঘটনা ঘটে। দুই বিচারক ও একজন নাজিরের অপসারণ চেয়ে আইনজীবীরা গত বৃহস্পতিবার থেকে কার্যদিবস আদালত বর্জন করেছেন; বঞ্চিত করেছেন বিচারপ্রার্থী নাগরিকদের। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিনজনকে আগামী ১৭ জানুয়ারি হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ৫ জানুয়ারি আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
এর আগে বিদায়ী বছরের শেষ তিন মাসে অনুরূপ আরও তিনটি ঘটনার নজির আছে, যার দুটিতে সংশ্নিষ্ট আইনজীবীরা হাইকোর্টে ক্ষমা চেয়ে নিস্কৃতি পেয়েছেন। এর একটিতে পিরোজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমান গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের
রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দেন। পরে প্রধান বিচারপতি লিখিত অভিযোগটি নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে পাঠান। আলাউদ্দিনকে ১৫ নভেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। তিনি আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমার আবেদন করেন।
অপরটিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারক (বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ) নির্মলেন্দু দাশের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। পরে সাইফুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীকে তলব করেন হাইকোর্ট। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করা হয়। ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে ক্ষমা চাইলে তা মঞ্জুর করা হয়।
অধস্তন আদালতের একাধিক বিচারক বলেছেন, বিচারকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় কারও শাস্তি না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটে চলছে।
গত নভেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ শারমিন নিগারের বিরুদ্ধে আইনজীবীরা ‘আদালতে দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগে’ তাঁর অপসারণ দাবি করে আসছেন।
এ ছাড়া গত দুই বছরে ঝিানইদহ, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের ঘটনা ঘটেছে। বর্জন করা হয়েছে সংশ্নিষ্ট আদালতের বিচারকাজ।
বিচার ব্যবস্থায় বার (আইনজীবী) ও বেঞ্চের (বিচারক) সুসম্পর্ক অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আইনজীবীদের ভূমিকার জন্য বিচারকরা আইনের সঠিক প্রয়োগের সুযোগ পান, বিচারপ্রার্থীরাও সহায়তা পান। কোনো রায় ও আদেশ নিয়ে বিচারপ্রার্থী বা আইনজীবীদের ভিন্নমত থাকলে সংক্ষুব্ধরা সংশ্নিষ্ট আদালতে আইন অনুযায়ী অনাস্থা আবেদন করতে পারেন। এতে মামলাটি পরে অন্য আদালতে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। আর প্রশাসনিক কোনো বিষয়ে ভিন্নমত থাকলে সংশ্নিষ্ট বিচারকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, অর্থাৎ জেলা জজ বা সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানোর সুযোগ রয়েছে। তার পরও অঘটন ঘটছে।
২০২০ সালের ৩ মার্চ পিরোজপুর-১ আসনে সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন না দেওয়ার ঘটনায় জেলার সংশ্নিষ্ট বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের অশোভন আচরণের ঘটনা ঘটে। শতাধিক ‘আইনজীবীদের তোপের মুখে’ ওই দিন দুপুরে জেলার সংশ্নিষ্ট জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নানকে বদলি করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। পরে জেলার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নাহিদ নাসরিনকে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ওই দিন বিকেলেই এ কে এম এ আউয়াল ও তাঁর স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন দেন। এ ঘটনা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে।
গত ২৭ ডিসেম্বর দেশের জেলা জজদের উদ্দেশে দেওয়া অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আইনজীবীদের কোনো অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করবেন না। বিচারকদের সুশৃঙ্খলভাবে আদালত পরিচালনা করতে হবে।’
বিচারকরা চাকরিবিধি অনুযায়ী গণমাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে না পারলেও তাঁদের কয়েকজন একান্ত আলাপে বলেছেন, বিভিন্ন জেলা আইনজীবী সমিতির প্রভাবশালী আইনজীবীদের কেউ কেউ ক্ষমতার দাপট দেখাতে অভ্যস্ত। তাঁদের সিদ্ধান্তের বাইরে আদেশ হলে আদালতেই তাঁরা হৈ-হট্টগোল শুরু করেন। বিচারকরা সিদ্ধান্তে অটল থাকলে দেখা গেছে, দুর্নীতি-অনিয়ম ধরনের অভিযোগ এনে সমিতিগুলো আদালত বর্জনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। কখনও কখনও নামে-বেনামে প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) মিথ্যা বা হয়রানিমূলক অভিযোগ পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে জেলা আদালতে অনেক বিচারক দায়িত্ব পালনে তটস্থ থাকেন।
জানতে চাইলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’-এর মহাসচিব (জেলা ও দায়রা জজ) মো. মজিবুর রহমান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার একটি ভিডিওতে যা তাঁরা দেখেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি বলেন, ‘কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার ভাষা এটা হতে পারে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো যেত। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
তবে এ ধরনের ঘটনার জন্য বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতিগত ত্রুটিও দায়ী বলে মনে করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক। তিনি সমকালকে বলেন, ‘দেশে প্রতিবছর গড়ে ১৫ লাখ মামলা দায়ের হচ্ছে। বিচারকাজ করছেন গড়ে সাড়ে ১ হাজার ৮০০ বিচারক। সেই হিসাবে বিচারকপ্রতি মামলা প্রতিবছর দায়ের হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০। অর্থাৎ, বিচারকরা প্রচণ্ড চাপে থাকেন। অন্যদিকে, গত ১০-১২ বছরে আইনজীবীর সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। ফলে আইনজীবীদের বছরে গড় মামলাও অনেকটা কমেছে।
আবার বার কাউন্সিলও (আইনজীবীদের সনদ প্রদানকারী সরকারি সংস্থা) আইনজীবীদের সনদ দেওয়ার ব্যাপারে মান বজায় রাখতে পারছে না। তুলনামূলক কম দক্ষতাসম্পন্ন আইনজীবীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের ওপর নানাভাবে অহেতুক চাপ তৈরি হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বিচারকাজ এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিফলন ঘটছে বিচারক ও আইনজীবীদের প্রকাশ্যে তির্যক বাদানুবাদের মধ্য দিয়ে।’ তাঁর মতে, জেলা বারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সার্বক্ষণিক পদ হিসেবে তাঁদের পদে থাকা অবস্থায় আইন পেশা থেকে বিরত থাকা উচিত। এটাই উন্নত ও গণতান্ত্রিক দেশের রেওয়াজ।
গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের এজলাসে হট্টগোলের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। পরে সংশ্নিষ্ট বিচারকের পক্ষ থেকে বিষয়টি লিখিত আকারে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে জানানো হয়। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অভিযোগের বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) মো. আক্কাস আলী ও জুবায়ের ইসলামকে তলবসহ রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ১৭ জানুয়ারি তাঁদের আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।সূত্র-দৈনিক সমকাল।

হাজী সেলিমের জামিন

0

দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ১০ বছর দণ্ডের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
সে অনুসারে শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে ১০ বছরের দণ্ড বহাল থাকলেও তিন বছরের সাজা থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। একইসঙ্গে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
চলতি বছরের ৯ মার্চ এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এসময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন হাজী সেলিম। আদালতের দণ্ড মাথায় নিয়ে হাজী সেলিম দেশ ছাড়ায় শুরু হয় বিতর্ক।
এরপর ৫ মে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন হাজী সেলিম। দেশে ফিরেই লালবাগে তার নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন। পরে লালবাগ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন তিনি।
২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে আত্মসমর্পণ করার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার আবেদন জানান। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। ২৪ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দণ্ডের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদনও করেছিলেন হাজী সেলিম।