ঢাকা   রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২   দুপুর ১:৩৩ 

Home Blog

সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব পাচ্ছে আমেরিকান কোম্পানি এক্সনমোবিল!

0

সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব পাচ্ছে আমেরিকান কোম্পানি এক্সনমোবিল!

জ্বালানীখাতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমেরিকান কোম্পানি এক্সনমোবিল( ExxonMobil) বঙ্গপোসাগরে বাংলাদেশের সীমানায় ১৫ টি ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধানের প্রস্তাব দিয়েছিলো বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে। তাদের প্রস্তাবটি নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল এবং ঝুলিয়ে রাখে।
ফলে নিস্পত্তি হয়নি বঙ্গোপসাগরের গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের কাজ। সেই ১৫ টি ব্লক শেষ পর্যন্ত আমেরিকান কোম্পানিই পাচ্ছে।
পেট্রোবাংলার তথ্য মতে বর্তমানে দেশের তেল গ্যাস অনুসন্ধান ব্লকের সংখ্যা ৪৮টি। এর মধ্যে স্থলভাগে ব্লকের সংখ্যা ২২ টি। বঙ্গোপসাগরে ব্লক রয়েছে ২৬ টি। এর মধ্যে ১৫ টির অবস্থান গভীর সমুদ্রে আর ১১ টির অবস্থান অগভীর সমুদ্রে। বর্তমানে অগভীর সমুদ্রের অংশে দুটি ব্লকে ভারতীয় দুটি কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ লিমিটিড এবং ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড অনুসন্ধানকাজ চালাচ্ছে। স্থলভাগের চারটি ব্লকের মধ্যে ৩ টিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে আমেরিকান কোম্পানি শেভরন এবং ১ টিতে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি ক্রিস এনার্জি।
জ্বালানী অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মার্কিন কোম্পানির প্রস্তাব বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ সামনে এসেছে। বাংলাদেশের জ্বালানি সংকটের মুহূর্তে তেল গ্যাসের এই অনুসন্ধানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কোম্পানি এক্সনমোবিল এগিয়ে এসেছে। তারা দু’বছর টু-ডি সিসমিক সার্ভে এবং তিনবছর থ্রি-ডি সিসমিক সার্ভে চালাবে। সরকারের সঙ্গে পিএসসি (উৎপাদন অংশীদারীত্ব চুক্তি) সই হবে। সেখানে নিশ্চিত লেখা থাকবে তেল গ্যাসের খনি পেলে কার ভাগে কতোটুকু থাকবে।
বাংলাদেশ গ্যাসের ওপর ভাসছে, তেলের ওপর ভাসছে এমন নানাকথা গত কয়েকদশক ধরে শুনে আসছি। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। বেশ কয়েকটি বিদেশী কোস্পানী তেল গ্যাস অনুসন্ধান করে লাভজনক না হওয়ায় সরে গেছে। অনেক কোম্পানির পর্যাপ্ত সামর্থ নেই অনুসন্ধানের। অর্থাৎ অর্থ ও প্রযুক্তিগত সামর্থ নেই। সে অবস্থায় মার্কিন জায়ান্ট কোম্পানির প্রযুক্তি সক্ষমতা ও আর্থিক সামর্থ দুটোই রয়েছে। বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের জন্য। ভূতত্ব বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন গভীর সমুদ্রে বিপুল পরিমাণ তেল গ্যাস মজুদ আছে। কিন্তু সেটা অনুসন্ধানের মতো আর্থিক সামর্থ ও প্রযুক্তি নেই আমাদের। আমারিকান কোম্পানি এক্সনমোবিল যদি সফল হয় সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক নতুন দীগন্তে পৌঁছবে।
বাংলাদেশের গ্যাস রফতানির কোনো সুযোগ নেই কারণ আমরা নিজেরাই গ্যাস সংকটে ভূগছি। আর ৯ বছরের মধ্যে গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে যাবে। এ অবস্থায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কার হলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তেল গ্যাসের অনুসন্ধান ও উৎপাদন কাজে নিয়োজিত মার্কিন এই জায়ান্ট কোম্পানি এক্সনমোবিল।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা নিয়ে যে বিরোধ ছিল আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে তার মীমাংসা হয়েছে। আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সমুদ্রসীমায় তেল গ্যাসের খনির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমার তার সমুদ্রসীমায় অনুসন্ধান করে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে উত্তোলন শুরু করেছে এবং উত্তোলিত গ্যাস চায়নাতে রফতানি করছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও অনুসন্ধানই শুরু করতে পারে নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যতো দ্রুত অনুসন্ধান শুরু করে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে দেশের জন্য ততো লাভ হবে।
শংকর মৈত্র: সিনিয়র সাংবাদিক।

সচিবালয়ে ঢুকে বিক্ষোভের ঘটনায় ২৬ শিক্ষার্থী গ্রেফতার

0

এইচএসসিতে ‘বৈষম্যহীন’ ফলাফলের দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা এই মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর ২৮ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান।

তালেবুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অবৈধ প্রবেশ করে বিক্ষোভের ঘটনায় ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছিল। এই ঘটনায় শাহবাগ থানার মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি ২৬ জনকে তাঁদের অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আরও অজ্ঞাত ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

দুই মাস আগে সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে স্থগিত এইচএসসি-সমমানের পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল শিক্ষা বিভাগ। ফল প্রকাশের পর এসএসসির সব বিষয় ‘ম্যাপিং’ করে নতুনভাবে ‘বৈষম্যহীন’ এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দাবিতে গতকাল সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন একদল শিক্ষার্থী।

গতকাল সচিবালয়ের ভেতরে এই বিক্ষোভ ঘিরে ব্যাপক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অনেককে মারধর করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরাও শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ সময় পুলিশ ৫৪ জনকে আটক করে।

এ বছরের এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। ব্যবহারিক পরীক্ষাও বাকি ছিল। একপর্যায়ে স্থগিত পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গত ২০ আগস্ট সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তখন স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।

স্থগিত হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা আন্দোলনের মুখে বাতিলের কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হয় ভিন্ন পদ্ধতিতে। বাতিল হওয়া পরীক্ষাগুলোর মূল্যায়ন হয়েছে পরীক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং)। অর্থাৎ এসএসসিতে যে নম্বর পেয়েছিলেন শিক্ষার্থী, সেটি এইচএসসিতে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আর এইচএসসিতে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়েছিল, সেগুলোর উত্তরপত্রের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। এ দুই মূল্যায়ন মিলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।

১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন শুধু এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন ১১ লাখ ৩১ হাজার ১১৮ জন। এর মধ্যে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

ফলাফল প্রকাশের পর একদল শিক্ষার্থী বলে আসছেন, ইতিমধ্যে যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ জন্য এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সব বিষয়ের ওপর ‘ম্যাপিং’ করে ফলাফল নতুন করে প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে রোববার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে বিক্ষোভ করেন এসব শিক্ষার্থীর একটি অংশ। শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে সেদিন চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। সেই অনুযায়ী সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমাও দেন তিনি।

একই ধরনের দাবিতে আরও কয়েকটি শিক্ষা বোর্ডেও বিক্ষোভ, তালা দেওয়া, ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, সেদিন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে কর্মসূচি চলাকালে তাঁদের ওপর হামলা হয়। হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। অন্যদিকে বোর্ডের কর্মকর্তারা বলে আসছেন, শিক্ষার্থীরা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে, এমনকি কক্ষের সামনেও ভাঙচুর চালান।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই দাবি আদায়ে গতকাল সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা তিনটার দিকে দেখা যায়, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে (সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবন) মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যদের দেখা যায়।
সচিবালয় রাষ্ট্রের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর (কেপিআই) একটি। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই সচিবালয় থেকে মূলত দেশ পরিচালিত হয়। তাই সচিবালয়ে ঢুকতে গেলে বিশেষ পাসের (অনুমতিপত্র) প্রয়োজন হয়। সূত্র- প্রথম আলো।

আপিল খারিজ : শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা চলবে

0

গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে করা আবেদন আপিল বিভাগেও খারিজ করে দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হিাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ আজ (২০ আগস্ট) এ আদেশ দেন।

ফলে শ্রম আদালতে এ মামলার বিচার চলবে বলে জানান আইনজীবীরা।
গত বৃহস্পতিবার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের চারজনের নামে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার শ্রম আদালত। শ্রম আদালতের আদেশটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূস।
গত ২৫ জুলাই চেম্বার কোর্ট স্থগিতাদেশ না দিয়ে ৩ আগস্ট পর্যন্ত মামলাটিতে স্থিতাবস্থা দেয়া হয়। একইসঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ আগস্ট মামলাটির রুল শুনানির জন্য হাইকোর্টে নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেন আপিল বিভাগ। সে অনুযায়ী শুনানি শেষে ৮ আগস্ট রায় দেয়া হয়। রায়ে গত ১৯ মে শ্রম আদালতের আদেশটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে করা আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ড.ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের নামে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা ও গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

মামলায় অপর তিন আসামি হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। বাসস।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায়: অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন

0

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূলহোতা ও বাস্তবায়নকারী ১৯ জনকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের ওপর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্যে প্রায় প্রস্তুত।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ কথা বলেন।
বাসস’কে তিনি আরো বলেন, হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ডেথ রেফারেন্স বেঞ্চ এখন নিম্ন আদালতের ৩ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক নিয়ে কাজ করছে যেখানে মামলার বিস্তারিত সবকিছু রয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আমরা আশা করছি ডেথ রোফারেন্স শুনানির জন্যে মামলা প্রস্তুত করতে মাত্র একদিন শুনানির পর বাকি পৃষ্ঠাগুলো পড়া শেষ হবে।
আমিন উদ্দিন বলেন, আমি মনে করি মামলাটি নিষ্পত্তির জন্যে হাইকোর্টের ১০ থেকে ১২টি শুনানি লাগতে পারে।
তিনি আরো বলেন, তার ধারনা চলতি অক্টোবরের মধ্যে হাইকোর্টে শুনানি শেষ হতে পারে।
ঢাকার একটি আদালত ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরো ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
তৎকালীন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুরুদ্দিন আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন এবং তার রায়ে হামলার পটভূমি, উদ্দেশ্য ও পরিণতি সম্পর্কে ১২ দফা পর্যবেক্ষণ ছিল।
বিচারিক আদালতের রায় অনুযায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিলেন যদিও তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। তবে তিনি শ্রবণশক্তি হারান।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সমাবেশে এই হামলায় দলের মহিলা শাখার প্রধান এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং ৫শ’ জন আহত হন।
এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা থাকায় এবং দোষীরাও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল একসঙ্গে শুনানি হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘দুই সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতির অসুস্থতার কারণে মামলার শুনানি আংশিকভাবে বিলম্বিত হয়, তবে আশা করা যায় একবার বেঞ্চ পুনরায় শুনানি শুরু করলে এতে বেশি সময় লাগবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা (অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়) পুরো রায়টি দেখেছি, একে যথার্থ বলে মনে হয়েছে। আমরা আইনের পয়েন্টগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করার পরে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার জন্য আবেদন করব।’
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মতে, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী কর্তৃক মনোনীত বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে ডেথ রেফারেন্স এবং দোষীদের আপিলের শুনানির প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এখানে আসলে দুটি মামলা রয়েছে; একটি খুন এবং অন্যটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে, দুটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ চক্রান্তকারীরা সেই নজিরবিহীন আক্রমণের মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল।’
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- তৎকালীন উপ-মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই জঙ্গি হুজি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাবেক মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি আসামিরা হলেন জঙ্গি মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, আবদুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ, আবু সাঈদ, আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ আবু তাহের, হোসেন আহমেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ, রফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ উজ্জল এবং পরিবহন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ।
তারেক রহমান ছাড়াও যেসব রাজনৈতিক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তারা হলেন-সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী এবং বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। জঙ্গি শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, আবদুর রউফ, সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান, হাফেজ ইয়াহিয়া, আবু বকর, আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন, আনিসুল মুরসালিন, মোহাম্মদ খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মোহাম্মদ ইকবাল, লিটন, শফিকুর রহমান, আবদুল হাই ও রাতুল আহমেদ বাবুকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে হামলাকারীরা ‘আর্জেস’ গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালায়।
গ্রেনেড হামলার পরদিন ২২ আগস্ট, ২০০৪ এ হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়।
ভয়াবহ ওই ঘটনার পর আনীত মামলায় নিরীহ জজ মিয়াকে দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে মূল ঘটনা ও অপরাধীদের আড়ালের অপচেষ্টা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের প্রভাবশালী মহল।
২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেনেড হামলার তদন্ত ফের শুরু করলে হামলার নেপথ্যের অনেক তথ্যই দেশবাসীর সামনে বেরিয়ে আসে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের উচ্চপর্যায়ের মদদে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, সিআইডি ও পুলিশের তখনকার উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মকর্তা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ব্যাপারে অবহিত ছিল এবং অনেকেই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে এতে জড়িতও ছিলেন।
সাক্ষ্য প্রমাণে বের হয় যে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসভবনে বৈঠক করেই এ হামলার পরিকল্পনা করা হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করার। আবদুল সালাম পিন্টুর ভাই জঙ্গি তাজউদ্দিনের সম্পৃক্ততা এবং আর্জেস গ্রেনেড ঘাতকদের হাতে হস্তান্তর করার তথ্য প্রমাণ বের হয়ে আসে। আসামিদের জবানবন্দীতেই হামলার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের ওই সময়ের পরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালক আবদুর রহিম, জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল ও মন্ত্রী আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ (যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), জঙ্গীনেতা তাজউদ্দিন, মাওলানা ফরিদ, মুফতি আবদুল হান্নান (অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), মাওলানা আবদুল সালাম এবং কাশ্মীরী জঙ্গী আবদুল মাজেদ ভাটের নামসহ সংশ্লিষ্ট সব ঘটনা ও জড়িতদের বৃত্তান্ত উঠে আসে।

১১ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ১৩ সেপ্টেম্বর

0

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতাসহ ১১টি মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। রোববার (২০ আগস্ট) অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) ফয়সাল আতিক বিন কাদের শুনানি মুলতবি করে নতুন এই দিন ধার্য করেন।
বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি মুলতবি করা হয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া খালেদা জিয়া বর্তমানে অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
১১টি মামলার মধ্যে ২০১৫ সালের প্রথম ৩ মাসে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ১০টি এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে দেশদ্রোহী মন্তব্যের অভিযোগে ঢাকার আদালতে একটি মামলা করা হয়। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির আরও ৩টি মামলা বর্তমানে ঢাকার ৩টি বিশেষ আদালতে বিচারাধীন। তা ছাড়া, দ্বিতীয় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও আরও ২টি মামলা বিচারাধীন।

তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত কি নতুন করে আলোচনা চায়?

0

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তার জল ভাগাভাগি নিয়ে একটি খসড়া চুক্তির রূপরেখা তৈরি হয়ে আছে প্রায় এক যুগ হতে চলল। যদিও ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিশেষ করে পশ্চিববেঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে তিস্তা চুক্তি আজও সই করা সম্ভব হয়নি।
কিন্তু ভারত এখন সেই চুক্তির বয়ানে পরিবর্তন এনে বা বিকল্প কোনও প্রস্তাব পেশ করে তিস্তা নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু করতে চাইছে কি না – সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দিল্লিতে একটি সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের পর সে প্রশ্ন তৈরি হয়।
গত ২৫শে জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে তাদের রিপোর্ট পেশ করে বলেছে, তারা সরকারকে আহবান জানাচ্ছে যাতে তিস্তা চুক্তি নিষ্পত্তি করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘অর্থবহ সংলাপের সূচনা’ করা হয়।
যে কমিটি এই সর্বসম্মত রিপোর্টটি পেশ করেছে তাতে ভারতের প্রায় সব বড় দলের প্রতিনিধিত্ব আছে।
এমনকি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন যে তৃণমূল কংগ্রেসের বাধায় তিস্তা চুক্তির জট খুলছে না বলে মনে করা হয়, সেই দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা অভিষেক ব্যানার্জিও এই কমিটির অন্যতম সদস্য।
বস্তুত তৃণমূলের একাধিক এমপি এই কমিটিতে আছেন, এবং তারা কেউই এই রিপোর্টে কোনও আপত্তি প্রকাশ করেননি বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেননি – যা থেকে ধরে নেয়া যায় এই সুপারিশে তাদেরও সায় আছে।
তিস্তার অমীমাংসিত ইস্যুটি যে ওই কমিটি দ্রুত নিষ্পত্তির ডাক দিয়েছে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারও।
কিন্তু কমিটি যে একই সঙ্গে তিস্তা নিয়ে ‘নতুন আলোচনার সূচনা’ করতে বলেছে, সেই বিষয়টি তাদের কিছুটা উদ্বেগেও ফেলেছে।
বাংলাদেশের একটি শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, পুরনো চুক্তির খসড়াটি অবিকৃত রেখেই নতুন করে আলোচনার কথা বলা হচ্ছে, নাকি ভারতের পার্লামেন্টারি কমিটি সম্পূর্ণ নতুন আকারে চুক্তি নিয়ে কথাবার্তা শুরু করার কথা বলতে চাইছে – তারা সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।

এই পটভূমিতে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিবিসি বাংলাকে জানানো হয়েছে, তাদের দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধে নন – কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করে’ কোনও চুক্তি করার চেষ্টা হলে তৃণমূল সেটা কিছুতেই মেনে নেবে না।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসেই জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবে দিল্লি সফরে আসছেন – ফলে তার ঠিক আগে তিস্তা নিয়ে ভারতে নতুন করে একটা ‘জলঘোলা’ যে চলছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
কী আছে রিপোর্টে?
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্তমান চেয়ারপার্সন হলেন বিজেপি-র এমপি পি পি চৌধুরী। শাসক ও বিরোধী দল মিলিয়ে মোট ৩০জন এমপি এই কমিটিতে আছেন।
দিন পনেরো আগে তারা লোকসভা ও রাজ্যসভায় ভারতের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ (প্রতিবেশীরা সবার আগে) পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেন – যাতে একটা বড় অংশ ব্যয় করা হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে।
ওই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি বিবিসির হাতেও এসেছে – আর তাতে তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে :
“তিস্তা নদীর জল ভাগাভাগির ইস্যুটি যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত, কমিটি সে বিষয়ে অবগত। আমাদের অভিপ্রায়, বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নততর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বার্থে এই ইস্যুটি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করা হোক।”
“বাংলাদেশের সঙ্গে এ ব্যাপারে অর্থবহ সংলাপের সূচনা করতে এবং নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছতেও কমিটি মন্ত্রণালয়কে আহবান জানাচ্ছে। সেই আলোচনায় কী অগ্রগতি হল বা কী ফল পাওয়া গেল, সেটাও কমিটিকে জানানো উচিত হবে।”
বস্তুত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই ধরনের সব অমীমাংসিত বিষয় নিয়েই নতুন উদ্যোগ নিতে ও অর্থবহ সংলাপ প্রক্রিয়া শুরু করতে কমিটি প্রস্তাব করছে।
রিপোর্টে অবশ্য পাশাপাশি এটাও বলা হয়েছে, তিস্তা চুক্তি সই করার ব্যাপারে ভারতের অঙ্গীকার সম্পূর্ণ অক্ষুণ্ণ আছে – এ ব্যাপারে শুধু ‘কনসেন্সাস’ বা ঐকমত্য তৈরির অপেক্ষা।
এই বক্তব্যের প্রথম অংশটি নিয়ে বাংলাদেশ যথারীতি খুবই খুশি।
বস্তুত গত ৩রা অগাস্ট ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন ভারতের পার্লামেন্টারি কমিটির ওই রিপোর্টকে খুবই ‘উৎসাহব্যঞ্জক’ ও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলেও বর্ণনা করেছেন। কিন্তু সমস্যাটা দেখা দিচ্ছে অন্য জায়গায়।
বাংলাদেশেরই একটি শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে বলেছেন, “তিস্তা নিয়ে দু’দেশের সমঝোতা কিন্তু অনেক আগে থেকেই হয়ে আছে। শুধুমাত্র ভারতের ভেতরে তাদের নিজস্ব সমস্যার জন্য এটা এখনও সই করা যায়নি।”
“এখন নতুন আলোচনা শুরু করা বা নতুন করে কনসেন্সাস তৈরির কথা বলে তারা আসলে কী বোঝাতে চাইছেন সেটা আমরাও কিন্তু ভাল করে বুঝতে চাইছি”, জানাচ্ছেন তিনি।
বিজেপির অবস্থান
বাংলাদেশের ওই সিনিয়র কর্মকর্তার তোলা এই প্রশ্নটি বিবিসির তরফ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপার্সন ও রাজস্থানের পালি থেকে নির্বাচিত বিজেপি এমপি পি পি চৌধুরীর কাছে।
মি চৌধুরী প্রথমেই জানান, “যা বলার আমরা তো রিপোর্টেই বলে দিয়েছি। সত্যি কথা বলতে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আমার আর বাড়তি কিছু যোগ করার নেই।”

যখন নির্দিষ্ট করে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় – কমিটি কি পুরনো খসড়া চুক্তি নিয়েই আলোচনা চাইছে নাকি সম্পূর্ণ নতুন করে নতুন চুক্তি আলোচনা করতে বলছে? তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
একটু ইতস্তত করেই মি চৌধুরী জবাব দেন, “আসলে খুব লম্বা রিপোর্ট ছিল তো, আমার ঠিক অতটা মনে নেই। ভালো করে জিনিসটা আবার না দেখে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
তবে তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতের শাসক দল বিজেপির অবস্থান হল, নরেন্দ্র মোদী সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তি করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও তার দল তৃণমূলের বাধাতেই তা সম্ভব হচ্ছে না।
তিস্তা যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েই বাংলাদেশে ঢুকেছে, তাই ভারতের রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ওই রাজ্যের সম্মতি ছাড়া তিস্তা নিয়ে কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি করা সম্ভব নয়। চুক্তি সম্পাদন না করতে পারার যুক্তি হিসেবে ভারত বরাবরই বাংলাদেশকে এ কথা বলে এসেছে।
মাত্র মাস দুয়েক আগেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জির অবস্থানের প্রতি ইঙ্গিত করেই মন্তব্য করেছিলেন, “কেন তিস্তা চুক্তি করা যাচ্ছে না সেটা আপনারা খুব ভালভাবেই জানেন।”
২০১৯ সালের অগাস্টে বাংলাদেশ সফরে গিয়েও মি জয়শঙ্কর বলেছিলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত সরকারের ‘কমিটমেন্ট’ অপরিবর্তিত আছে। অবস্থান এতটুকুও পাল্টায়নি বলেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য।
তবে এই পটভূমিতে পার্লামেন্টারি কমিটির রিপোর্টে তৃণমূল কংগ্রেসের এমপি-দের সম্মতি বিষয়টিকে একটি ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে নি:সন্দেহে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এতদিনের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৃণমূলও এখন পুরনো খসড়া চুক্তিতেই সায় দিচ্ছে – না কি তারা নতুন আকারে কোনও চুক্তির কথা ভাবছে সেই প্রশ্নটাই তাই এখন সামনে চলে আসছে যথারীতি।
তৃণমূলের বক্তব্য:
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটিতে আছেন তৃণমূল কংগ্রেসের অঘোষিত ‘নাম্বার টু’ অভিষেক ব্যানার্জি, যাকে সকলেই মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী হিসেবে চেনেন।
সেই অভিষেক ব্যানার্জি বিশেষ কিছু না ভেবেচিন্তেই তিস্তা চুক্তি নিয়ে রিপোর্টের বক্তব্যে সায় দিয়ে দিয়েছেন, পর্যবেক্ষকরা কেউই সে কথা বিশ্বাস করছেন না।
বরং ওই চুক্তি নিয়ে ভারতের দিক থেকে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে, সেই আভাস পেয়েই হয়তো তৃণমুলের তরফে তিনি রিপোর্টে সম্মতি দিয়েছেন, এমনটাই তারা ধারণা করছেন।
এই মুহুর্তে অভিষেক ব্যানার্জি নিজে বিদেশ সফরে রয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্যও জানা যায়নি।
তবে কমিটিতে তৃণমূলের দ্বিতীয় যে সদস্য আছেন, সেই শ্রীরামপুরের এমপি কল্যাণ ব্যানার্জি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন কমিটিতে যেদিন তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল তিনি সেদিন উপস্থিত ছিলেন না।
“আমাদের রাজ্যে তখন পঞ্চায়েত নির্বাচন চলছিল, আমি তো প্রায় দু’মাস দিল্লি যেতেই পারিনি। ফলে কমিটির সব মিটিংয়ে হাজির ছিলাম না, তিস্তা নিয়ে কী কথাবার্তা হয়েছে বলতে পারব না”, জানাচ্ছেন তিনি।
কিন্তু ২০১১তে তিস্তা চুক্তি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যে অবস্থান ছিল, সেখান থেকে কি আজ দলের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন হয়েছে?
রাজ্যে দলের প্রধান মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এর জবাবে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “প্রথম কথা হল মমতা ব্যানার্জি তিস্তা চুক্তির বিরুদ্ধে, এই ধারণাটা কিন্তু ঠিক নয়। তিনি শুধু পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করে কোনও চুক্তি করার বিরোধী।“
“মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশকে ও সে দেশের মানুষকে খুবই ভালবাসেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গেও তাঁর দারুণ সম্পর্ক … কাজেই তিস্তা চুক্তি সই হলে তিনি তো খুশিই হবেন!”
“কিন্তু শুষ্ক মরশুমে আমাদের রাজ্যে তিস্তা অববাহিকার জেলাগুলো যাতে পর্যাপ্ত জল পায়, সেটা আগে নিশ্চিত করতে হবে। ওই মানুষগুলোকে পথে বসিয়ে তৃণমূল কোনও চুক্তিতে সায় দিতে পারবে না”, সাফ জানাচ্ছেন কুনাল ঘোষ।
অন্যভাবে বললে, যদি এমন কোনও তিস্তা চুক্তির অবতারণা করা যায় যাতে ‘পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে’ – সেটায় তৃণমূলের অনুমোদন থাকবে দলের পক্ষ থেকে এই বার্তাই দেয়া হচ্ছে।
আর ঠিক এ কারণেই ‘নতুন আকারে’ কোনও তিস্তা চুক্তির অবতারণা ভারতের দিক থেকে করা হলেও হতে পারে, এই জল্পনাও ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
কী বিকল্প হতে পারে?
২০১১ সালে যে তিস্তা চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছিল, তাতে নদীর প্রবাহ বজায় রাখার জন্য একটা নির্দিষ্ট অংশ ছেড়ে দিয়ে বাকি জল দুই দেশের মধ্যে সমান ভাগাভাগির কথা বলা হয়েছিল।
যদিও ভারত বা বাংলাদেশ কেউই সেই চুক্তির খসড়াটি প্রকাশ করেনি, তার পরেও দুই দেশের বিশেষজ্ঞরাই পরে বলেছেন এই আধাআধি ভাগের ফর্মুলা নিয়েই তখন ঐকমত্য হয়েছিল।
কিন্তু এখন মমতা ব্যানার্জির দাবি মানতে গেলে সেই পুরনো ফর্মুলা অনুযায়ী চুক্তি করা সম্ভব নয়। বরং এক্ষেত্রে দুটো বিকল্প রাস্তা তৃণমূল সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
এক, শুষ্ক মরশুমে ভারতের হিস্যা কিছুটা বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা অববাহিকার জেলাগুলোকে বাড়তি সেচের জল পাইয়ে দেয়া।
সেক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী বলতে পারবেন দেশের স্বার্থে চুক্তিতে রাজি হলেও পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থের সঙ্গে তিনি কোনও আপষ করেননি।
কিন্তু এই প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষে মেনে নেয়া প্রায় অসম্ভব। ভারত যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি জল পায় এবং বাংলাদেশের হিস্যা ৫০ শতাংশর নিচে নেমে যায়, সেটা রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনার জন্যও ‘রাজনৈতিক পরাজয়ের’ সামিল হবে।
দিল্লিতে বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রায়শই বলতেন, “তিস্তায় পানি কমেছে বুঝলাম, কিন্তু যেটুকু আছে তা আধাআধি ভাগে সমস্যা কোথায়?”
তাঁর যুক্তি ছিল, পানি যদি ষোলো আনার বদলে আট আনা থাকে তাহলে চার আনা চার আনা ভাগ হবে, আর ছয় আনা থাকলে দুই দেশই তিন আনা করে পাবে।
বাংলাদেশ সেই অবস্থানে অনড় থাকলে প্রথম বিকল্পটি কোনও কাজে আসবে না বলাই বাহুল্য।
দ্বিতীয় বিকল্পটি বাতলেছিলেন মমতা ব্যানার্জি নিজেই – যখন সোয়া ছ’বছর আগে ২০১৭র এপ্রিলে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দিল্লিতে তাঁদের দুজনের দেখা হয়েছিল।
মমতা ব্যানার্জি তখন বলেছিলেন, তিস্তার জল না-দিতে পারলেও উত্তরবঙ্গে তোর্সা-দুধকুমার-সঙ্কোশ-ধরলার মতো আরও যে সব নদীতে উদ্বৃত্ত জল আছে তা খাল কেটে বাংলাদেশের তিস্তা অববাহিকায় পাঠানো যেতে পারে।
এই প্রক্রিয়াটি অবশ্যই সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল – তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিন্তু তাদের এই বিকল্প প্রস্তাব থেকে এখনও সরে আসেনি।
বাংলাদেশ অবশ্য এই প্রস্তাব নিয়ে কখনোই বিশেষ আগ্রহ দেখায়নি, আবার সরাসরি নাকচও করে দেয়নি।
পুরনো তিস্তা চুক্তির খসড়া নিয়েই নতুন করে চুক্তি সম্পাদনের আলোচনা আবার শুরু হলে কোনও সমস্যা নেই – কিন্তু সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ভারত যদি সম্পূর্ণ নতুন করে তিস্তা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করতে চায় তাহলে অবধারিতভাবে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে জটিল একটি কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হবে।
সৌজন্যে: শুভজ্যোতি ঘোষ, বিবিসি নিউজ বাংলা, দিল্লি।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ: আইজিপি

0

দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালনের জন্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপিদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ।
বুধবার (৯ আগস্ট) পুলিশ সদর দফতরের হল অব প্রাইড-এ ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়া তিন পুলিশ কর্মকর্তার র‍্যাংক ব্যাজ পরিধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।
পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপিরা হলেন–সেলিম মো. জাহাংগীর, দেবদাস ভট্টাচার্য ও হাবিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান পদোন্নতিপ্রাপ্তদের র‍্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন। এ সময় পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা দক্ষতা, যোগ্যতা ও মেধার স্বাক্ষর রেখে আজ এ পর্যায়ে এসেছেন। আমি আশা করি, আগামী দিনেও আপনারা সেবার ব্রত নিয়ে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে যেকোনও চ্যালেঞ্জ সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল পুলিশ। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ। জঙ্গি দমনে পুলিশের ঈর্ষণীয় সাফল্য রয়েছে।
পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পক্ষে অতিরিক্ত আইজিপি সেলিম মো. জাহাংগীর তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি আমাদের যে অঙ্গীকার রয়েছে আমরা তা পূরণ করতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আমরা জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান এবং হাইওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খাঁন বক্তব্য রাখেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপিরা, ঢাকাস্থ বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের প্রধানরাসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।

নভেম্বরে তফসিল, ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে নির্বাচন

0

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নভেম্বরের যেকোনো দিন ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। ভোট হতে পারে ডিসেম্বর বা জানুয়ারীর শুরুতে।
আজ বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনব্যবস্থা সহজ করার জন্য একটি অ্যাপস তৈরি করছি। এটি সংসদ নির্বাচনের আগেই চালু করতে চাই। আশা করি এটি আগামী নভেম্বরে চালু করা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমরা সাধারণত ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করে থাকি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময় ধরে যথাসময়ে তফসিল ঘোষণা করা হবে।’
আইন সংশোধনের জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকার কারণে আগামী সংসদ নির্বাচনে অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবেই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি।
আনিছুর রহমান জানান, দুর্গম ও দ্বীপাঞ্চল ছাড়া যেসব জায়গায় যোগাযোগব্যবস্থা ভালো সেখানে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।
সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আর ডাকা হবে কি না, জানতে চাইলে আনিছুর রহমান বলেন, ‘না, আমরা আর ডাকব না। আমরা ডেকেছিলাম, তারা সাড়া দেয়নি। রাজনৈতিক বিষয়গুলো রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকুক।’

বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্ব রক্তের বাঁধনে বাঁধা


৭১’এ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদের এককোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। থাকা খাওয়া চিকিৎসা যতটুকু সম্ভব সব দিয়েছে।
আমাদেরকে ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। অস্ত্র গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করেছে।
ডিসেম্বর’৭১ এ আমাদের সাথে জোট বেঁধে যুদ্ধ করেছে। সেই যুদ্ধে তাঁদের পাঁচ হাজারের অধিক সেনা নিহত হয়েছে। প্রায় সতের হাজার সেনা আহত হয়েছে।
পাকিস্তানিরা পরাজয় নিশ্চিত জেনে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা যথা রাস্তাঘাট, ব্রিজ, রেল, পোর্ট সব ধংস করে দেয়। ভারত দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চলাচলের উপযোগী করে দেয়।।
স্বাধীনতার দু-মাসের মধ্যে ভারত তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী ফিরিয়ে নিয়ে যায় যা ইতিহাসে বিরল।
গত কয়েক বছরে ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়েছে। সাত দশকের ঝুলে থাকা ছিট মহল ও সীমান্তরেখা সমস্যার সমাধান হয়েছে। আমাদের মহান নেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিকেল নেতৃত্বের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি ভারতে সরকারি দল, বিরোধী দল সবাইকে একমত করিয়ে এই কঠিন সমস্যার সমাধান করেছেন। কারণ এখানে ভারতের সংবিধান সংশোধনীর বিষয় ছিলো। দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন ছাড়া এই সংশোধনি সম্ভব ছিলো না।এই প্রশ্নে সবাইকে এক করেছিলেন।
শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারনে বর্তমানে সীমান্তে শান্তি ফিরে এসেছে। বর্ডার কিলিং একেবারে বন্ধ না হলেও অনেক অনেক কমে গেছে। এক সময় শূণ্যের কোটায় নেমে আসবে।
দুদেশের বাণিজ্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিপূর্বে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিলো খুবই সামান্য। সম্প্রতি তা দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ভারত বিশাল দেশ তাই তাদের রপ্তানি বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। শেখ হাসিনা সরকারের সফলতায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আইন কানুনের প্রতিবন্ধতাগুলো শিথিল হচ্ছে, আমাদের রপ্তানি ও বাড়ছে। তবে ধৈর্য ধরলে রপ্তানি অবশ্যই অনেক বাড়বে।
ভারতের সহায়তায় আমাদের রেল অনেক অনেক এগিয়েছে। সামনে আরো এগুবে।
আমাদের শিল্পের কাঁচামাল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ভারত থেকে সহজে পাওয়া যায়। সময় ও খরচ তুলনামূলক কম দামে।
এছাড়া বিপুল সংখ্যক মানুষ ভারতে চিকিৎসা ও ভ্রমনে যায়। নিকট বৃহৎ প্রতিবেশীর সাথে কিছু সমস্যা থাকবেই যেমন তিস্তার পানি। কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেও পশ্চিম বাংলা সরকারের “ভোট রাজনীতি”র কারণে এই চুক্তিটি সম্পাদন সম্ভব হয়নি। আরো চুয়ান্নটি নদীর পানি নিয়েও সমস্যা আছে। ধীরে ধীরে সমাধান হবেই।
কিছু অন্ধ ভারত বিরোধীতার কারণে এক সময় আমাদের সম্পর্কে চিড় ধরেছিলো। সেটা এখন কেটে গেছে। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এগুলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া হবে শান্তি ও সমৃদ্ধির অঞ্চল।
লেখক: রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা।

পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের বৈঠক, এ অঞ্চলে শান্তি অগ্রগতির ওপর গুরুত্বারোপ

0

ভারত সফররত আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার(৮ আগস্ট) ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার নেতা (লিডার অব দ্যা আপার হাউস) পীযূষ গয়ালের সঙ্গে তাঁর পার্লামেন্ট কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে তারা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক বিষয়ে আলোচনা করেন বলে বৈঠক সূত্র জানায়।
বৈঠকে গয়াল এ অঞ্চলের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির স্বার্থে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন বিজেপি’র রাজ্যসভার প্রভাবশালী এ নেতা বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের আমলে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে গয়াল প্রতিনিধি দলকে বলেন, খাদ্যশস্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় ভারত সক্রিয়ভাবে তা বিবেচনা করবে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে ভারত যাতে বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করতে পারে- সেজন্য তিনি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আরও পণ্যের নাম প্রস্তাব করার অনুরোধ জানান। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পচনশীল পণ্য রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও আলোচনা হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে বলেন, বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ও বন্ধু হিসেবে ভারত সবসময় বাংলাদেশের সব বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনা করে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অ্যারোমা দত্ত এমপি ও অধ্যাপক মেরিনা জাহান এমপি উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) “বিজেপিকে জানুন” কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলটির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফর করছেন।
বৈঠক শেষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে’ অনুষ্ঠিত আলোচনায় ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইস্যু উঠে এসেছে।
বিকেলে দিল্লিতে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার সর্বোচ্চ ফোরাম জি-২০ এর ভারত সম্মেলনের আহবায়ক সাবেক রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সাথে বৈঠক করেন তারা।
এর আগে, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ইন্ডিয়া গেট সার্কেলে জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন। স্মৃতিসৌধটি স্বাধীন ভারতের সশস্ত্র সংগ্রামে লড়াই করা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সৈনিকদের সম্মান ও স্মরণ করিয়ে দেয়।