স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় চলমান একাদশ সংসদের একাদশ অধিবেশন শুরু হয়।
নিয়ম অনুযায়ী বছরের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সাধারণত বছরের প্রথম অধিবেশন দীর্ঘ হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সংসদ সদস্যরা অধিবেশন জুড়ে ওই ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। বছরের শুরুর অধিবেশন ৩০ কার্যদিবস চলারও রেকর্ড আছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবারের অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হতে পারে বলে আগেই জানিয়েছেন সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
এবার ১২ থেকে ১৪ কার্যদিবস অধিবেশন চালানো হতে পারে। সাধারণত কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ঠিক করা হয়। তবে মহামারীর কারণে গত পাঁচটি অধিবেশনের আগে ওই কমিটির বৈঠক হচ্ছে না।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার প্রথমে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন করেন। এবার অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন নজরুল ইসলাম, আফতাব উদ্দিন সরকার, আব্দুস সালাম মুর্দেশী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মমতাজ বেগম।
স্পিকার- ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন।
এদিন অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়নের পর স্পিকার শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সাবে ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সাবেক সংসদ সদস্য আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন, খালেদুর রহমান টিটো, শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, মোহাম্মদ আলী মোহাম্মদ আবু হেনা, এম হাসেম, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন খান, সামসুদ্দীন আহমেদ, নুরজাহান ইয়াসমিন, খালেদা পান্নার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারী কোরবান আলীর মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচী শেখ রাজিয়া নাসের, জা রওশন আরা ওয়াহেদ, এমপি হাজি সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়শা খানম, কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, ভাষা সৈনিক জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া, কবি মনজুরে মাওলা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান, অভিনেতা আলী যাকের, সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ শাহাদাৎ হোসেন খান, বীর উত্তম ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ, অভিনেতা আব্দুল কাদের, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের স্ত্রী বুলা আহাম্মেদ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতেও সংসদে শোক প্রকাশ করা হয়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশ-বিদেশে যারা মারা গেছেন, তাদের সবার মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করে সংসদ। সেই সঙ্গে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।
শোক প্রস্তাব উত্থাপনের পর এক মিনিট নীরাবতা পালন এবং মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
মহামারীকালের অন্য চারটি অধিবেশনের মত এবারও স্বাস্থ্যবিধির বাধ্যবাধকতার কারণে সীমিত সংখ্যক সংসদ সদস্য অধিবেশনে অংশ নেবেন। প্রথম দিন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া সংসদ সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন। এরপর প্রতি কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৯০ জনকে পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মরতদেরও অধিবেশন চলার সময় সংসদ ভবনে প্রবেশ সীমিত থাকবে। একমাত্র দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সংসদে ঢুকতে পারবেন। তবে তাদের করোনাভাইরাস নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে।
সংসদ অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহ করতে সাংবাদিকরা শুধুমাত্র প্রথম দিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় সংসদ ভবনে যাওয়ার অনুমতি পাবেন। সেজন্য প্রত্যেক সংবাদমাধ্যম থেকে একজন প্রতিবেদককে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানো হয়েছে।
পরের দিনগুলোতে সংসদ টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার দেখে সংবাদ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়াও এ অধিবেশনে কয়েকটি বিল উত্থাপন ও পাসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।