প্রেমের টানে বাড়ি ছেড়েছিলেন পটুয়াখালীর বাউফলের কনকদিয়া ইউনিয়নের এক তরুণ ও কিশোরী। ঘটনাটির সুরাহায় ডাকা সালিশে গিয়ে কিশোরীকে দেখে পছন্দ হওয়ায় খোদ চেয়ারম্যানই বিয়ে করে ফেললেন। এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। নেটিজনরা সমালোচনায় নামেন। খবর হয় সংবাদ মাধ্যমেও।নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের। নানা সমালোচনার মুখে পরদিনই ৬০ বছর বয়েসী চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ১৪ বছরের মেয়েটিকে তালাক দেন। কিন্তু দায় এড়াতে পারছেন না। হাইকোর্টের নজরে আসায় ঘটনা তদন্ত করে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত কনকদিয়া ইউনিয়নের নির্বাচনে দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শাহিন হাওলাদারের (৬০)। তিনি আবার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরও সভাপতি।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, জেলা নিবন্ধক ও পিবিআইকে বিষয়টি তদন্ত করে পৃথক প্রতিবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে বলেছে হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ জারি করেন। রুলে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এছাড়া আরেক আদেশে ওই কিশোরীকে নিরাপত্তা দিতে এসপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সালিশে কিশোরী বিয়ে নিয়ে শনিবার সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরমধ্যে একটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম ও ইকরামুল হক টুটুল। পরে আদালত আদেশের পাশাপাশি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৮ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সুত্রে জানা যায়, কনকদিয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে একই ইউনিয়নের নারায়ণপাশা গ্রামের রমজান নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দুজন পালিয়ে যান। বিষয়টি কিশোরীর বাবা কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে শুক্রবার কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে যেতে বলেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে যান। সেখানে কিশোরী মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান এবং দুপুরেই বিয়ে করে ফেলেন।
এদিকে বিয়ের পর তা জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তেই। এ কারণে পরদিন শনিবার ওই একই কাজীর মাধ্যমেই তাদের তালাক সম্পন্ন হয়। পরে মেয়েটি তার প্রেমিকের ঘরে ফিরে যায় এবং রোববার আবার তাদের মধ্যে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।