ঢাকা   সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১   ভোর ৫:২৫ 

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ক্ষমতাধর হলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

চীনে নতুন একটি আইন আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে যাতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আরো ক্ষমতাবান করে দিচ্ছে। এই আইনে বিদেশিদের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। নতুন এই আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট শি আরো ক্ষমতা পেলেন এবং তাকে পশ্চিমাবিরোধী আরো ক্ষমতা দেয়া হলো। বৃহস্পতিবার এই আইনটি পাস করেছে ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, শি জিনপিং এই আইনে বিপুল পরিমাণ ক্ষমতার অধিকারী হবেন। নতুন এই আইনে চীনের স্বার্থের ক্ষতি করে এমন যেকোনো এনটিটিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে চীন। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে সীমালংঘন হবে তা এতে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এর ফলে বিশ্বজুড়ে বেইজিংয়ের স্বার্থবিরোধী যে কোন উদ্যোগের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিতে পারবেন। বাণিজ্য, প্রযুক্তি, হংকং এবং সিনজিয়াং ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেয়া চীন বিরোধী পদক্ষেপকে কাউন্টারি দিতে ব্যবহার করা হবে এই আইন।
এতে বলা হয়েছে, চীনা নাগরিক বা তাদের কোনো এনটিটির বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ নিলে বা নেয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তি বা এনটিটিকে ‘এন্টি স্যাংশন লিস্টে’ নাম তোলা হবে। যারা এই তালিকায় থাকবেন তারা চীনে প্রবেশ করতে পারবেন না অথবা তারা চীনে থাকলে বহিষ্কার করা হবে। চীনের ভিতরে থাকা তাদের সম্পদ জব্দ করা হবে। চীনের কোনো এনটিটি বা নাগরিকের সঙ্গে তাদের ব্যবসায় বিধিনিষধ দেয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনই বলে দিচ্ছে চীন এখন কতটা আগ্রাসী কূটনীতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এছাড়া নতুন আইন ১লা জুলাই থেকে কার্যকর হলেও তা কতটা সক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে তা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। করোনা পরবর্তী সময়ে বিদেশী বিনিয়োগের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে চীন। এমন সময়ে এ রকম একটি আইন করে শি জিনপিংকে আরও শক্তিশালী করা হলো।
ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আইনের প্রফেসর জ্যাক ডিলাইসলে বলেন, এই আইনটি তুলনামূলকভাবে বাক সর্বস্ব এবং যথেষ্ট পরিচিত। তবে এর মধ্যে অধিক পরিমাণ বৈদেশিক নীতিগত বিষয় রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী অবস্থানের কথা বলা হয়েছে এতে।
চীনের রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম দ্য গ্লোবাল টাইমস বলছে, পশ্চিমা আধিপত্য বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এই আইন। কার্নেই চায়না-এর নন রেসিডেন্সিয়াল স্কলার ডক্টর চোং জা-লান বলেন, এটা হল চীন কোন প্রবণতার দিকে অবস্থান নেবে তার একটি ইঙ্গিত। ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক তক্ষশীলা ইনস্টিটিউশনে চায়না স্টাডিজ প্রোগ্রামের নেতৃত্বদানকারী মনোজ কেওয়ালরামানি বলেছেন, চীনের নেতারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য অন্তর্নিহিত উত্তেজনা বোধ করেন।
বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে কয়েক বছর ধরেই সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে দুই সুপারপাওয়ার একে অন্যের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানির স্থানীয় অফিস বন্ধ করে দিয়ে পশ্চিমা বিরোধী ধারাবাহিক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। ব্যাপকভাবে এটাকে দেখা হচ্ছে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া বাণিজ্য এবং প্রযুক্তিগত বিধিনিষেধের পাল্টা হিসেবে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রো থেকে তৈরি করা পণ্যগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চীন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত