চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে মাদক আইনের মামলায় চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এই মামলাটি প্রায় দ্রুততার সঙ্গেই তদন্ত শেষে করে ৪২ দিনের মাথায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
তবে তাদের সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া তিন নারীকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে চার্জশিটে।
বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলাটির চার্জশিট গত ২৭ জুলাই মহানগর হাকিম আদালতের ডেসপ্যাচ শাখায় জমা হয় বলে জানিয়েছেন আদালত পুলিশের সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
তিনি বলেন, “গত ৮ অগাস্ট মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল। কিন্তু সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে নিয়মিত আদালত না থাকায় চার্জশিট আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।”
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ন কমিশনার হারুণ অর রশিদ জানান “নাসির এবং অমির বিরুদ্ধে মাদকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা বেশকিছুদিন আগে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি।”
গুলশান গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান রহমান জানান, নাসির এবং অমির কাছ থেকেই মাদক পাওয়া গেছে। তাই অভিযোগপত্র থেকে তাদের বাদ দেয়ার সুযোগ নেই।
“সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করেছি, (মাদক) রিকভারও করেছি। যেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা করে নিষিদ্ধ মাদক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।”
চার্জশিটে তিন নারীকে অন্তর্ভুক্ত না করার কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা সেখানে প্রলোভনের কারণে ছিলেন। একটা ঘোরের মধ্যে ওই কাজে তারা তাদের নিয়ে গেছে। কেউ কর্মচারী ছিলেন, কাউকে ভরণপোষণ দিয়ে থাকেন। সে কারণে এগুলো স্বেচ্ছাকৃত না, জবরদস্তিমূলক বিষয়।”
ঢাকার তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত বোট ক্লাবে ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে গত জুনে চিত্রনায়িকা পরীমনি অভিযোগ করেন। পরে সাভার থানায় ১৫ জুন এই ঘটনায় একটি মামলা হয়।
এই মামলার সূত্রে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ উত্তরার একটি বাসা থেকে নাসির, অমি এবং তিন নারীকে গ্রেপ্তার করে।
সে সময় ওই বাসা থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথাও জানানো হয়।
পরে বিমানবন্দর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের এসআই মানিক কুমার শিকদার। এই মামলায় নাসির ও অমিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
পরীমনির করা ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মামলায়ও নাসিরের সঙ্গে আসামি অমি।
এই দুই মামলাতেই জামিন পেয়ে কারামুক্ত হয়েছেন ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি) নাসির উদ্দিন।
তবে মানবপাচার ও পাসপোর্ট আইনের মামলায় জামিন না হওয়ায় অমি এখনও কারাগারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী এএইচ ইমরুল কাওছার।
পরীমনির দায়ের করা ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মামলার তদন্ত এখনও চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।