এক আইনজীবীকে ‘দুই ঘণ্টা আটকে রাখার’ অভিযোগে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের ‘অপসারণ’ চেয়ে আদালতে বিক্ষোভ করছেন আইনজীবীরা।
বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা বুধবার সকালে মিছিল করে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরসহ কয়েকজন বিচারকের এজলাসে ঢুকে পড়েন এবং বিচার চেয়ে শ্লোগান দিতে শুরু করেন।
এ সময় হৈ চৈয়ের মধ্যে আদালতপাড়ার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং বিচার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
আইনজীবীরা ওই বিচারকের এজলাসে তালা লাগিয়ে দেন এবং পুরানো মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ভবনের কলাপসিবল গেইটেও তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদশীরা জানান।
আইনজীবীরা জানান, মঙ্গলবার ‘এজলাসে উঠে বিচারকের আসন গ্রহণ করতে দেরি হওয়ায়’ প্রতিবাদ করেছিলেন রুবেল আহমেদ ভূইয়া নামের একজন আইনজীবী। এর জেরে ওই আইনজীবীকে ‘দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন’ হাকিম আসাদুজ্জামান নূর।
এর প্রতিবাদে বুধবার সকালে বিক্ষোভ শুরু করেন আইনজীবীরা। খবর পেয়ে বারের আইনজীবী নেতারা বিষয়টি সুরাহা করতে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ভবনে আসেন।
আইনজীবীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা বারের সাধারণ সভা আহ্বান করবেন।
ওই বিচারকের বিষয়ে ‘যথাযথ আইনি ব্যবস্থা’ নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনা সম্পর্কে আইনজীবী মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান , আইনজীবী রুবেল আহমেদ ভূইয়া মঙ্গলবার বেলা ১১টায় একটি মামলার শুনানি করতে বিচারক আসাদুজ্জামান নূরের এজলাসে যান।
“অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর ওই আদালতের পেশকার জানান, দুপুর ১২টায় বিচারক এজলাসে উঠবেন। তখন আইনজীবী বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময় বলা হোক, তা না হলে আমাদের সমস্যা হয়। সকালে অন্য আদালতেও মামলা থাকে। এক মামলার শুনানি করতে গেলে অন্যটিতে করা যায় না।’
“পরে বিচারক এজলাসে উঠে ওই আইনজীবীকে অন্য মামলা সেরে আসতে বলেন। অন্য মামলা সেরে আসার পর আইনজীবী রুবেল তার কনিষ্ঠ সহযোগী আইনজীবীকে পাঠান এ মামলা শুনানি করতে। তখন বিচারক বলেন, ‘সেই আইনজীবীকে আসতে হবে, যিনি সময় বিভ্রাটে পড়েছেন’।
“আইনজীবী রুবেল এজলাসে এলে কোনো কথা না শুনেই বিচারক এজলাসে থাকা পুলিশকে নির্দেশ দেন ওই আইনজীবকে আটক করার জন্য। পরে অন্য আইনজীবীরা বিচারককে অনুরোধ করে তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।”
এর আগে মঙ্গলবার লক আপে আটকে রাখার অভিযোগে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন দিয়েছেন ভুক্তভোগী আইনজীবী। আবেদনে তিনি বলেন, মঙ্গলবার আমি ওই আদালতে মামলা পরিচালনা করতে যাই। এ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারক এজলাসে উঠবেন বলে জানান। কিন্তু ১১টার দিকেও বিচারক না ওঠায় বিষয়টি পেশকারের কাছে জানতে চাই। পরে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বিচারক আমার মামলা না শুনে পরে আসতে বলেন। পরে গেলে আমাকে দুই ঘণ্টা লক আপে আটকে রাখেন এবং বলেন, আমার সনদ বাতিল করে দেবেন এবং সব ম্যাজিস্ট্রেটকে বলে দেবেন, আমার মামলা না শোনার জন্য। আমি বিষয়টিতে চরম অপমান বোধ করছি এবং উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।