সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকে অত্যন্ত ঘৃণিত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে। মানবাধিকারের প্রতি সরকারের যে প্রতিশ্রুতি তা সব সময় পালন করার চেষ্টা করবে এবং চলমান করোনা পরিস্থিতিতেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সরকারের কোন আপোষকামিতা হবে না।
“ঘুরে দাঁড়াবো আবার, সবার জন্য মানবাধিকার” প্রতিপাদ্য নিয়ে মানবাধিকার দিবস ২০২০ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গৃহ নির্যাতন ও যৌন নির্যাতনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এসব অপরাধ কখনই সহ্য করা হবে না। সরকার জনগণকে সে বার্তা দিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, শুধু আইন করে ও সাজা বাড়িয়ে এসব নির্যাতন বন্ধ হবে না। জনগণকেও সোচ্চার হতে হবে। এ ব্যাপারে মানবাধিকার কমিশনেরও যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে এসব অপরাধ অবশ্যই কমবে।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়। এক্ষেত্রে মানবাধিকার কমিশন একটি চেক এন্ড ব্যালান্সের কাজ করবে। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে তা প্রথমে সরকারকে জানাবে। এরপর সরকার কোন পদক্ষেপ না নিলে তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার কোন বার্তা সরকারকে অবহিত করলে সরকার অবশ্যই সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মুক্ত আলোচনায় উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বৈষম্য বিরোধ আইন আগামী বছর একটি আইন হিসেবে জনগণ দেখতে পাবেন। এই আইন প্রণয়নের কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মানবাধিকারের বিষয়গুলো গভীরভাবে উপলব্ধি করে ধারণ করে। কোভিড ১৯ আমাদের মানবাধিকারের গতানুগতিক চিন্তাধারা বদলে দিয়েছে। সেজন্যই অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে এবছর ঘুরে দাঁড়াবো আবার, সবার জন্য মানবাধিকার, প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও জীবন-জীবিকা নির্বাহের অভিজ্ঞতা থেকে বেড়িয়ে এসে নতুন করে জীবন সাজাতে হবে এবং সেখানে মানবাধিকারকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে মানবাধিকারের অনেক লঙ্ঘন হচ্ছে। আমাদেরকে এসব অপরাধের জবাব দিতে হবে যাতে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সে ব্যবস্থা করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশকেও মোকাবিলা করতে হবে। কারণ বাংলাদেশ পৃথিবীর বাইরে নয় এবং এখানকার মানুষ কোভিড -১৯ এ যথেষ্ঠভাবে আক্রান্ত হয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে জনগণের জীবন-জীবিকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য। জনগণের জীবন-জীবিকার স্থিতি দেওয়ার জন্য সরকার ১৪.১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। দরকার হলে আরও প্রণোদনা দিবে।
তিনি বলেন, সরকার বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। এ রোগের ভ্যাক্সিনও বিনামূল্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জনগণকে দেওয়া হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মূখার্জী, বাংলাদেশে জাতিসংঘর আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এক মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।