শুধু বিশেষ পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল আদালত: আইনমন্ত্রী
মহামারীর মধ্যে সামাজিক দূরত্বের বিধি রক্ষায় ভার্চুয়াল আদালত চালুতে জারি করা অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত হলেও তা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হবে না বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবন মিলনায়তনে রোববার সহকারী জজদের অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
ভার্চুয়াল আদালত সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকদের পাশাপাশি আইনজীবীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীতে ভার্চুয়াল কোর্ট প্রথা চালু হবে এটাই স্বাভাবিক।
“কিন্তু এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ভার্চুয়াল কোর্ট স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বদলে বিকল্প হিসেবে কাজ করার জন্য নয়।
“সংবিধান, সিআরপিসি, সিপিসি এবং সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী আদালতের কাজ স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যে প্রচলিত পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হয় সেটাই বলবৎ থাকবে।”
কোন কোন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ভার্চুয়াল আদালত চলবে সে বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “শুধু অস্বাভাবিক বা বিশেষ কোনো পরিস্থিতির জন্য ভার্চুয়াল কোর্ট প্রথা অবলম্বন করা হবে। ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশটি স্থায়ী আইনে পরিণত হলেও সেটার ব্যবহার হবে বিশেষ পরিস্থিতিতে।”
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ তৈরি করতে একটি অধ্যাদেশের খসড়ায় গত ৭ মে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
সরকার গত ৯ মে সেই অধ্যাদেশ জারি করে। এরপর গত ১১ মে থেকে সীমিত পরিসরে ডিজিটালি বিচারকার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালরে তথ্যানুযায়ী, ১১ মে থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ৩৫ কার্যদিবসে সারা দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকরা ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে ৯৫ হাজার ৫২৩টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন। এই সময় ৪৯ হাজার ৭৬২ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সেবার সঙ্গে বিচারক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সমানতালে এগিয়ে নিতে চায়।
“সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায় যেখানে সকল মানুষ তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় সেবাগুলো সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন।”
গত ১ জানুয়ারি সহকারী জজ ও জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেটদের চারমাস মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু করা হয়। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত ২৩ মার্চ সেই কোর্সটি স্থগিত করা হয়।
এখন সেই কোর্স অনলাইনের মাধ্যমে শেষ করা হবে, রোববার যার উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য দেন।