ঢাকা   সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১   বিকাল ৪:৫১ 

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মা সেতুর বিরোধিদের খুঁজে বের করতে হবে : হাইকোর্ট

পদ্মা সেতু নিয়ে বিরোধিতাকারীদের খুঁজে বের করতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দ সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যে থেকে ষড়যন্ত্রে জড়িতদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন প্রশ্নে স্বপ্রণোদিত জারি করা রুল শুনানির জন্য উঠলে আদালত বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বারোপ করে মন্তব্য করেন। শুনানিকালে আদালত বলেন, পদ্মা সেতু জাতীয় সম্পদ, জাতীয় উন্নয়ন। আমাদের অহংকার। জাতীয় স্বার্থে পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারীরা উন্নয়নের বিরুদ্ধে। এ ধরনের জাতীয় স্বার্থ ও উন্নয়নের বিরুদ্ধে যাঁরা থাকেন, তারা জাতির ও দেশের শত্রু। তাদের খুঁজে বের করতে হবে। আদালত প্রয়োজনীয় আদেশের বিষয়টি কালও ধার্য থাকবে বলে আদেশ দেন।
এটর্নি জেনারেল, দুদক কৌঁসুলিসহ সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন বলে জানিয়েছেন আদালত। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন ও দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানিতে ছিলেন।
পদ্মা সেতু নির্মাণ চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য ২৭ জুন দিন ধার্য ছিল।
একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ইউনূসের বিচার দাবি : আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো একাট্টা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরদিন ওই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের কথা উল্লেখ করে এ রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রুলে প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে ‘ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৬৫ (৩ ধারা)’ অনুসারে কমিশন গঠন এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত রুল জারি করেন হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, আইন ও যোগাযোগ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান এবং আইজিপিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। পাশাপাশি এ কমিটি বা কমিশন গঠনের বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়। পরে ওই বছরের ২০ মার্চ রুলের জবাব ও প্রতিবেদন দিতে আট সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৭ মে পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে কয়েক দফা সময়ের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে কমিশন গঠনের জন্য ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর একজন সদস্যের নাম মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তিনি হলেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (কারিগরি) মো. কামরুজ্জামান। পরবর্তীতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হওয়ার রুলটি আর শুনানিতে ওঠেনি।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মাসেতু নির্মাণে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার ঘটনা গোটা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে ওই ঘটনা ফলাও করে প্রচার করায় বাংলাদেশ এবং বর্তমান সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। সাড়ে তিন বছর আগের ওই ঘটনার পর বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তির দৌঁড়ঝাপ, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়াকর্ম ও মিডিয়ার অতি উৎসাহ পদ্মা সেতু ইস্যুতে সরকারকে বিপাকে ফেলে দেয়। যা ছিল সরকারের জন্য চরম অবমাননাকর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে।
নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে গত ২৫ জুন শনিবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় স্বপ্ন, আবেগ ও আত্মমর্যাদার পদ্মা সেতু নির্মিত হলো। গতকাল রোববার সকাল থেকে পদ্মা সেতুতে গাড়ী চলাচল শুরু হয়েছে। বাসস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত