ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১   বিকাল ৩:২৯ 

সর্বশেষ সংবাদ

উজারা জেয়া দেখা করে ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার: অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের সাক্ষাতের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে ছিলেন—দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারের কথা ব্যক্ত করেন। অন্যদিকে মার্কিন প্রতিনিধি দল বলছে, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করতে তাঁদের ভিসা নীতি।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাতে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়।
সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করা তাঁর অঙ্গীকার। সব সময় বলে আসছি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা করেছি, আগেও করেছি।’

ছাত্র জীবন থেকে তিনি এবং তাঁর পরিবার সব সময় মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। জনগণ তাঁদের প্রতিনিধি বাছাই করবে।’
জনগণের এই অধিকার আদায়ে সব সময় তাঁর দল সংগ্রাম করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি অতীতে বিএনপি কীভাবে ভোট কারচুপি করেছে। আমরা সংগ্রাম করে সেটি পরিবর্তন করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এটা আমরা চালু করেছি।’
বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও তাঁদের মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অগ্নি সন্ত্রাসে ৫০০ জন নিহত হয়েছেন।
বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। সেখানে নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা মানবপ্রাচীর তৈরি তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছিল।
বাংলাদেশের ওপর আরোপিত মার্কিন ভিসা নীতি প্রসঙ্গে উজরা জেয়া বলেন, ভিসা পলিসি হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করতে এই ভিসা নীতি।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, কোনো দলের প্রতি তাঁদের পক্ষপাতিত্ব নেই। তাঁরা একটা নিরপেক্ষ, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চান।
সাক্ষাতে রোহিঙ্গা বিষয়ে কথা বলেন উজরা জেয়া। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি।
রোহিঙ্গাদের তাঁদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালন ব্যয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে বলে জানান উজরা জেয়া। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দুটি এলাকায় বর্তমানে ১ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানব পাচার, অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যেটি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। শ্রমিক ইস্যুতে আলোচনাকালে তিনি বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এক সঙ্গে কাজ করবে এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মালিকদের চাপ দিয়ে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়েছেন।
সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত