রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বিয়ে করেছেন। কনে দিনাজপুরের বিরামপুরের মেয়ে শাম্মী আকতার মনি। গত শনিবার (০৫ জুন) ঢাকার উত্তরায় কনের বাসায় তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পারিবারিক ছোট পরিসরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে। কনে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশাসন বিভাগে চাকরি করেন। এ ছাড়া ‘ল’ পাস করে হাইকোর্টে এক সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে প্র্যাকটিস করছেন। এসব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাম্মী আকতার মনির বড় ভাই মো. মিলন হোসেন।
তবে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বলেন, সবকিছু চূড়ান্ত হলে তিনিই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাবেন। ইতিমধ্যে বিয়ের ব্যাপারটি কিছু দূর এগিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
অবশ্য মন্ত্রী সরাসরি স্বীকার না করলেও তাঁর ঘনিষ্ট লোকজন বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর বিয়ে করলেন নুরুল ইসলাম সুজন। প্রথম স্ত্রী নিলুফার জাহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে এবং তিন সন্তানেরই বিয়ে হয়েছে।
রেল মন্ত্রীর নতুন স্ত্রীর বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর নতুন বাজারে। তাঁর বাবা মৃত আব্দুর রহিম। তিনি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) লাইনম্যান পদে চাকরি করতেন। তাদের মূল বাড়ি পাবনা। চাকরির সুবাদে তিনি বিরামপুর আসেন এবং নতুন বাজার এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি করে স্থায়ী হন। রেলমন্ত্রীর স্ত্রীরা দুই ভাই এক বোন। দুই ভাই বর্তমানে বিরামপুরের বাড়িতে থাকেন এবং তারা ব্যবসা করেন।
মিলন হোসেন বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ঘরোয়াভাবে গত শনিবার আমার বোনের সঙ্গে রেলমন্ত্রীর বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে বরপক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বাসিন্দা হাইকোর্টের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনেপক্ষে আমি ও আমার ভাই উপস্থিত ছিলাম।
মিলন হোসেন বলেন, আমার বোন বর্তমানে উত্তরার বাসায় আছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে স্বামী রেলমন্ত্রী সুজনের বাড়িতে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন এবং মন্ত্রীকে ফোনে বলেছেন, দেখেন আপনার বিয়েতে উপস্থিত থাকতাম। কিন্তু করোনার কারণে থাকতে পারলাম না। আপনি বিয়ে করে ফেলেন। আমি পরবর্তী সময়ে বউকে বরণ করবো। এজন্য আগামী ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বাসায় নেবেন রেলমন্ত্রী। এখন প্রায়ই বোনের উত্তরার বাসায় যান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজুন।
তিনি আরও বলেন, আমার বোনের এর আগে কুষ্টিয়ায় বিয়ে হয়েছিলো। পারিবারিক সমস্যার কারণে ২০১১ সালে ডিভোর্স হয়ে যায়। ওই ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকে আমার বোন। ঈদ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিরামপুরের বাড়িতে বেড়াতে আসতো; মাঝেমধ্যে আমরাও যাই।
বিয়ের বিষয়ে জানতে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকে একাধিকবার ফোন দিলেও ধরেননি। তবে রেলমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) রাশেদ প্রধান সাংবাদিকদের বলেছেন, বিয়ের বিষয়টি আমরা শুনেছি। যা বলার মন্ত্রী নিজেই বলবেন। আমাদের কাছে এখনও ধোঁয়াশা। পরিষ্কার করে কিছুই বলতে পারছি না।
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, রেলমন্ত্রী বিয়ে করেছেন এটি সঠিক। বিষয়টি আমি তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে শুনেছি। তবে তার পরিবারের অনেকেই এখনও বিষয়টি জানেন না। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরাও বিষয়টি জানেন না। বিয়ের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রী নিজেই জানাবেন। ৬৫ বছর বয়সী নূরুল ইসলাম ১৯৫৬ সালের ৫ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে জন্মগ্রহণ করেন।
পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হন সুজন।