দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের জামিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতেও হয়নি। জামিন না দিয়ে আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন চেম্বার আদালত। হাজী সেলিমের লিভ টু আপিল এবং জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
গত ২৪ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেছিলেন হাজী সেলিম। তার আগে গত ২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে বিচারিক আদালেত আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রায়ে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক। এরপর দুদক মামলাটিতে চার্জশিট দাখিল করে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে প্রায় ২৬ কোটি ৯২ লাখ ৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন ও প্রায় ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগের এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল রায়ে তার একটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অপর ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনে হাজী সেলিমকে সহযোগিতা করার দায়ে তার স্ত্রী গুলশান আরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেন।
হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে আপিল করে দুদক। আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেই নির্দেশনার আলোকে গত বছর ৯ মার্চ হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন।