‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগদান করে সভাপতিত্ব করেন এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসস।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘‘আজ একটা বিষয় কেবিনেটে এসেছে- সেটা হলো ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান করার বিষয়ে। এটা কেবিনেটে আলোচনা হয়েছে। ২০২০ সালে হাইকোর্টে একটি রায়ও আছে- ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা কেবিনেটে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, ‘জয় বাংলা’কে কেবিনেট থেকে একটি সার্কুলার দিয়ে জাতীয় স্লোগান হিসেবে প্রচার করে দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে একটা নোটিফিকেশন করে দেবো।”
নোটিফিকেশন করতে কতদিন লাগবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দু- চারদিন এর বেশি লাগার কথা নয়।’
কোথায় কোথায় ‘জয় বাংলা’ বলতে হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “তিন-চারটি ক্যাটাগরির কথা জাজমেন্টে আছে। সাংবিধানিক পদধারীগণ, রাষ্ট্রের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী রাষ্ট্রীয় বা সরকারি অনুষ্ঠানের শেষে এটা বলবেন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসাসহ তাদের কোনো সভা-সেমিনার যদি হয়, অ্যাসেম্বলি বা যে কোনো ধরনের সমাবেশ হলে সেখানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে হবে।”
‘যদি কোনো অনুষ্ঠান হয়, অ্যাসেম্বলি হয় সরকারি-বেসরকারি যারা থাকবেন জয় বাংলা স্লোগান ব্যবহার করবেন। এটা কেবিনেটের সিদ্ধান্ত’ বলেন তিনি।
উল্লেখ্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বশির আহমেদ জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেছিলেন। ২০২০ সালে হাইকোর্ট ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান করার নির্দেশনা দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিবৃতি:
জাতীয় স্লোগান হিসেবে ‘জয় বাংলা’র অনুমোদন দেয়ায় সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৮ নাগরিক। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখন থেকে মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ রাষ্ট্রীয় শ্লোগান হিসাবে ঘোষণা করেছে সরকার। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে প্রায় সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার ৪৭ বছর রাষ্ট্রীয় আচার থেকে নির্বাসিত ছিল আমাদের প্রাণের শ্লোগান ‘জয় বাংলা’। আজ ৪৫ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান আবারো রাষ্ট্রের শরীরে প্রতিস্থাপিত হলো।’এজন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা। বিবৃতিদাতারা হলেন, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সারওয়ার আলী, আবেদ খান, সেলিনা হোসেন, লায়লা হাসান, আবদুস সেলিম, মফিদুল হক, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবীর, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ ও গোলাম কুদ্দুছ।