সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা করার অভিযোগ একজন অতিরিক্ত সচিবসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। কিন্তু ঘটনা তদন্তে মন্ত্রণালয়ের যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে সেটার প্রধান করা হয়েছে একজন যুগ্মসচিবকে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠছে উর্ধতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অধস্তন কর্মকর্তা তদন্ত করবেন কেমনে? এটা কি মন্ত্রণালয়ের লোক দেখানো তদন্ত ? মঙ্গলবার (১৮ মে) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠনের কথা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে এটাও সোমবারের তারিখ দিয়ে করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা) মো. সাইফুল্লাহিল আজমকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন উপসচিব (প্রশাসন-২ শাখা) মো. আবদুছ সালাম ও উপসচিব (জনস্বাস্থ্য-১) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
সোমবার (১৭ মে) বিকেল ৩টার দিকে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। স্বাস্থ্য সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে ফাইল থেকে নথি সরানোর অভিযোগে তাকে ওই রুমে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। নিজের ওপর নির্যাতনেরও অভিযোগ তোলেন রোজিনা। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর তাকে শাহবাগ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তা ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছার বিরুদ্ধে। তিনি রোজিনার গলা চেপে ধরেন এবং তার ব্যাগ, মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকও জানান, অতিরিক্ত সচিব ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং তার সঙ্গে দুজন উপসচিবও ছিলেন। প্রশ্ন হলো অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যুগ্মসচিব তদন্ত করবেন কি ভাবে? উল্লেখ্য সোমবার রাতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় চুরি ও অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা করা হয়। মঙ্গলবার সকালে রোজিনাকে আদালতে তুলে পাঁচদিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানির তারিখ রাখা হয়। পরে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।