করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভা গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়ার পর শনিবার রাষ্ট্রপতি এ অধ্যাদেশ জারি করেন যা লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে সবার সশরীরে উপস্থিতিতে আদালত পরিচালনার সুযোগ না থাকায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে যার যার অবস্থানে থেকে বিচার কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা করতে সরকারকে অনুরোধ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।
বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী আদালতে মামলার পক্ষ-বিপক্ষ বা তাদের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবীদের সশরীরে উপস্থিতি থেকে মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়।ভিডিও কনফারেন্সে বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় তার দরকার হবে না।
দীর্ঘ সময় ধরে আদালত বন্ধ থাকায় মামলাজট বাড়ার পাশাপাশি বিচারপ্রার্থীরা বিচারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ডিজিটাল মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম করার অধ্যাদেশের খসড়া মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করে আইন মন্ত্রণালয়। কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে অধ্যাদেশ প্রকাশ হওয়ায় এখন সুপ্রিম কোর্ট প্র্যাকটিস নির্দেশনা জারি করবে।
সেই নির্দেশনার আলোকেই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে অধ্যাদেশে।
সেখানে বলা হয়েছে, “সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাই কোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।”
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, “ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যে কোনো আদালত এই অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারিকৃত প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যে কোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্য গ্রহণ বা যুক্ততর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় প্রদান করতে পারবে।”
অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতে দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে বলে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে।
“কোনো ব্যক্তির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনের অধীন আদালতে তার সশরীরে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শর্ত পূরণ হয়েছে বলে গণ্য হবে।”
অধ্যাদেশে ভার্চুয়াল উপস্থিতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “অডিও-ভিডিও বা অনুরূপ অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির আদালতের বিচার বিভাগীয় কার্যধারায় উপস্থিত থাকা বা অংশগ্রহণ।”