আমি বুঝিনা, ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী আরেকটা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ফোন নিয়ে বাংলাদেশের এক শ্রেণির লোক লাফাচ্ছে কেনো? এতো মাতামাতি কেনো? পাকিস্তানের সঙ্গে কি বাংলাদেশ কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন ছিল ? শেখ হাসিনা কি বলেছেন বাংলাদেশের কেউ কথা বলবে না পাকিস্তানিদের সঙ্গে?
কারও ফোনে কি বাংলাদেশের অবস্থান পরিবর্তন হয়ে যাবে? পাকিমনা ভাইয়েরাই বা এতো উল্লসিত কেনো?
বাংলাদেশ বিশেষ করে শেখ হাসিনার কুটনীতি সবার সঙ্গে সু সম্পর্ক রাখা। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় উদীয়মান তারকা। অনেক সূচকে ভারত পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার চেয়ে আমরা এগিয়ে। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে অবশ্যই পারস্পরিক স্বার্থে। গিভ এন্ড টেকের সম্পর্ক। মুক্ত বাজার মুক্ত পৃথিবী। পাকিস্তানের সঙ্গেও আমরা সম্পর্ক ভালো রাখতে চাই। কিন্তু তার জন্যতো কিছু শর্ত মানতে হবে। আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করবেন, গ্রেনেড মারবেন আর আপনার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবো তা হবে কেনো?
সবার আগে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানের ক্ষমা চাইতে হবে, এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সেনাকর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে, আমাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সমর্থন জানাতে হবে, পাকিস্তানি পার্লামেন্টে যে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে তা বাতিল করতে হবে, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নিতে হবে, একাত্তর পূর্ব একত্রে থাকা অবস্থায় আমাদের যেসব সম্পদ তারা নিয়ে গেছে তার পাওনা অর্থাৎ তৎকালীন সময়ের ৩২ হাজার কোটি টাকা ফেরত দিতে হবে।
এগুলো আমাদের ন্যায্য দাবি। ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাইলে পাকিস্তান এ শর্তগুলো মানুক। আমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবো। কিন্তু তারা তা করলো না, আমাদের এখানে গণহত্যা করলো, নারী ধর্ষণ করলো আর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে কেমনে? শুধু ধর্মের ভিত্তিতে? তার ফয়সালাতো ৭১’এ হয়ে গেছে। নতুন করে যারা ধর্মের জিগির তুলছেন তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের বংশধররা। পাকিস্তানিদের রক্তের উত্তরাধিকার তারা। বীর বাঙালীর রক্ত যার শিরায় আছে তারা ভুলতে পারবে না একাত্তরের নৃশংসতার কথা, গণহত্যার কথা, নারী ধর্ষনের কথা। যারা ভুলে গেছে তারা জামাত আল বদর রাজাকারদের উত্তরসূরি।