যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া সভ্যতার কোনো ইতিহাসই নেই। পৃথিবীর সব সভ্যতাই যুদ্ধবিগ্রহের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টি। এক কথায় বলা যায় যুদ্ধ রক্তপাত ছাড়া মানুষের কোনো ইতিহাস নেই। মানুষ আরেকজনকে শক্তি দিয়ে পদানত করেই নিজের ক্ষমতা জাহির করেছে। সেই বরফ যুগ, প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত মানুষ কখনো প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কখনো অন্য প্রাণির সঙ্গে লড়াই করে কখনো নিজের গোত্রের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হচ্ছে। ১০ লাখ বছর আগে সেই বরফ যুগের জাভা মানব,পিকিং মানবদের টিকে থাকার ইতিহাসটা জেনে দেখুন। কতো লড়াই করে তারা টিকে ছিল। পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাসগুলো সেটা মেসোপটেমিয়া হউক,ব্যাবিলনিয় হউক, পারস্য গ্রীক কিংবা ভারতবর্ষের সিন্ধু সভ্যতার ইতিহাসই হউক সব ইতিহাসই গড়ে ওঠেছে ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতা দখল করে প্রতিপক্ষকে পদানত করে শাসন করেছে শোষন করেছে। ভারতীয় সভ্যতা বা সিন্ধু সভ্যতার সেই হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো ধংস হয়েছিল আর্যদের হাতে। সেখানে মারামারি কাটাকাটি হয়েছিল। আর্যরা ক্ষমতাবান হয়েছিল। এর পরের বৈদিক সভ্যতায় যুদ্ধ বিগ্রহ মারামারি লেগেই ছিল। মারামারিতে যে জয়ী হতে পারতো সেই রাজা হতো, শাসন করতো। সিন্ধু সভ্যতা থেকে গত ৫ হাজার বছরের ইতিহাস এমন কি বর্তমান সময় পর্যন্ত মানুষের ইতিহাস মারামারি কাটাকাটি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষ আসলে মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, মারামারি করেই শাসন করছে, টিকে আছে। প্রেম ভালোবাসা দিয়ে শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে এমন কোনো নজির ইতিহাসে নেই। প্রেমের কথা, ভালোবাসার কথা কেউ শুনেনি। এমন কি মানুষ যে ধর্মের কথা বলে, পৃথিবীর সব ধর্ম প্রতিষ্ঠা হয়েছে যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে। ধর্মের মর্মবাণী শান্তি প্রেম ভালোবাসা হলেও তা প্রতিষ্ঠা হয়েছে রক্তপাতের মাধ্যমে।
আমরা মনে করি মানুষ তার ইতিহাসটা জানুক। মানুষের শাসনের ইতিহাসে যুদ্ধ আর পদানত করা ছাড়া কিছুই নেই। শুধু প্রেম ভালোবাসা দিয়ে শাসন হয় না। এজন্য দরকার শাসনের কঠোরতা। অন্যায়কারির কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করতে পারলে সমাজে অন্যায় বাড়তেই থাকবে। আমরা চাই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনের সঠিক ও যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত হউক।