প্রতি জেলায় একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আছেন।
তারা কোথায়? এমপিরা কোথায়? জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কোথায়? উপজেলা চেয়ারম্যান কোথায়?
পৌরসভার চেয়ারম্যান কোথায়? সিটি করপোরেশনের মেয়ররা কোথায়? ঢাকার দুই সিটির মেয়র কোথায়? কোথায়?
তাদের কোথাও দেখা মিলছে না।
ত্রাণ নিয়ে দৌঁড়াচ্ছেন শুধু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আর মেম্বাররা।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্খ্যকর্মিরা। আর আছেন আইনশৃংখলা বাহিনী।
তা হলে জনপ্রতিনিধিরা কখন আসবেন? তারা গেলেন কোথায়?
জনতার কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই?
তারা সবাই কী ত্রাণ লুট করবে? তাদের প্রতি কোনো বিশ্বাস নেই?
দেশের মানুষের এই বিপদের মুহূর্তে জনপ্রতিনিধিরা কী দেশপ্রেমের পরিচয় দেবেন না?
জনপ্রতিনিধি চাইলে প্রতিটি গ্রামে পাড়া মহল্লায় ত্রাণ নিতে ইচ্ছুক কিংবা দরিদ্র মানুষের তালিকা করা কোনো বিষয়?
২৪ ঘন্টার মধ্যেই তা করা সম্ভব।
প্রতিটা গ্রামে মহল্লায় স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করুন।
দলমতের উর্ধে উঠে তাদের নির্বাচিত করুন।
দেশের তরুণরা এগিয়ে আসবে।
ভালোভাবে ডাক দিন।
এ লড়াই বাঁচার লড়াই।
মাথার উপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকুন। তিনি আমাদের ভরসা।
কিন্তু একা সব পারবেন না।
অন্যদেরও ডাকুন।
এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না। রাজনৈতিক সমস্যা না। আওয়ামীগ বিএনপির সমস্যা না। এটা বৈশ্বিক সমস্যা।
এ সমস্যায় মহা ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র ধরাশায়ী হয়ে যাবে। কিন্তু টিকে যাবে বাংলাদেশসহ কৃষিপ্রধান দেশগুলো। আমরা যদি ফসলটা তুলতে পারি, জীবনের এই একটিবার অস্তিত্বের লড়াইয়ে দেশপ্রেমের পরিচয় দিই তা হলে আমাদের কোনো অভাব হবে না। আমাদের চাহিদা কম। ঘরে চাল ডাল থাকলেই হবে। মাছ, মাংস,ডিমের উৎপাদন নিশ্চিত করুন। এ শিল্পগুলোকে সহায়তা করুন। দেখবেন চাহিদার কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন হবে। উর্বর মাটি আমাদের। যত্ন পেলে শাক সবজিতে ভরে যাবে দেশ। গার্মেন্টসওলাদের কথা পরে ভাবুন। তাদের প্রণোদনা পরে দিন। উন্নয়নকাজ বছরখানেক বন্ধ রাখুন। বিলাসী পণ্যের দরকার নেই। চুরি চামারিটা বন্ধ রাখুক। বিদেশে টাকা পাচারকারিরা টাকা ফেরত এনে দেশের কাজে লাগাক। মোটকথা এবার সবাই ভাবুন দেশটা আমার। এ দেশ ছাড়া কোথাও রক্ষা নেই। আমেরিকা,কানাডা,ইংল্যান্ড সব ধরাশায়ী। মুত্যুপুরি হয়ে গেছে। সবার ক্ষমতা শূণ্যে নেমেছে।
বড়ত্বের অহমিকা করে আর লাভ নেই।
সজাগ হোন।
জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আস্থা নেই বলেই হয়তো ৬৪ জেলায় ৬৪ সচিবকে দায়িত্ব দেয়া হলো। জনগণের সেবক হিসেবে তারা মাঠে নামবেন এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু তাদের অফিসারগিরি মানসিকতা, সাহেবী মানসিকতা,আমলাতান্ত্রিকতা পরিহার করতে হবে। সেবক হিসেবে মাঠে নামবেন এটাই প্রত্যাশা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে দিকনির্দেশনা দেয়া আপাতত বন্ধ রাখবেন সচিবরা এটাই প্রত্যাশা।
হাওরে এ মুহুর্তে ধান ওঠছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কয়েকজন সচিব,সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য সেখানে পাঠান। তারা হাওর এলাকায় থেকে তদারকি করুন। দেখবেন সোনার ফসল নির্বিঘ্নে কৃষকের গোলায় ওঠবে। শুরুতেই সরকারি উদ্যোগে ধানচাল কিনে ফেলা হোক।
থানায় থানায় কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদের দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করতে বলুন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক ইঞ্চি জায়গাও পতিত না রাখার জন্য। কিন্তু বেশিরভাগ কৃষকই জানেন না কোন জমিতে কোন ফসল কখন এবং কোন উপায়ে ফলানো যাবে। তারা আন্দাজের উপর ফসল ফলান। ফলে শত শত একর জমি অনাবাদি থাকে সঠিক ফসল ফলে না। থানার কৃষিকর্মকর্তা যদি সঠিক পরামর্শ দেন তা হলে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না এটা নিশ্চিত।
আবারো বলছি দেশের অস্তিত্বের লড়াই,আমাদের বেঁচে থাকার লড়াই। হিংসা, দোষারোপ, রাজনৈতিক বাগবিতণ্ডা পরিহার করে সবাই চলুন দেশের জন্য দাঁড়াই । ##