সংবিধান অনুযায়ি অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ঘোষণা পাঠ করে শোনানোর মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন।
শেষ দিনে রেওয়াজ অনুযায়ি সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাপনি ভাষণ দেন।
এছাড়া বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরও বক্তৃতা করেন।
অধিবেশন সমাপ্তির আগে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় দেয়া ভাষনের অডিও ভিডিও শোনানো ও প্রদর্শন করা হয়।
এ অধিবেশনে গত ৩ জুন অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বর্তমান সরকারের এ মেয়াদের তৃতীয় বাজেট পেশ করেন। করোনা পরিস্থিতিতে বাজেট তৈরিতে মানুষের জীবন-জীবিকাকে গুরুত্ব দিয়ে ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শ্লোগান শীর্ষক ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর ১১ জুন অর্থমন্ত্রী ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করেন।
এবারো বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণের (কোভিড-১৯) দুর্যোগের মধ্যেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য ও প্রত্যাশাকে সামনে রেখে জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট পেশ করা হয়।
এবারের বাজেট অধিবেশন গত ২ জুন শুরু হয়ে মোট ১২ কার্য দিবস চালানো হয়। সম্পূরকসহ বাজেটের উপর মোট ১৫ ঘন্টা ৩২ মিনিট আলোচনা হয়েছে। এর ওপর আলোচনায় অংশ নেন ৮৫ জন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্য।
বাজেট পাসসহ এ অধিবেশনে ৭টি সরকারি বিল পাস হয়। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কার্যাবলী সম্পাদনের পাশাপাশি কার্য প্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে ৪০টি নোটিশ পাওয়া যায়।
এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরদানের জন্য সর্বমোট ৭৩টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে তিনি ৩০টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য প্রাপ্ত মোট ১০৫৮টি প্রশ্নের মধ্যে ৭শ’টি প্রশ্নের জবাব দেয়া হয়।
এর আগে স্পিকার বলেন, নানা বিচারে এবারের বাজেট দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা প্রসূত একটি আর্থিক প্রস্তাবনা।‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর অগ্রাধিকারসমূহের সাথে সঙ্গতি রেখেই এবারের বাজেট প্রণীত হয়েছে। অতীতের অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামী দিনের আশা জাগানিয়া সকলের জন্য সমৃদ্ধির ভিত্তিভূমি স্থাপনের এক কৌশলী দলিল।
তিনি বলেন, বাজেটে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়নের প্রতিফলন ঘটেছে। ২০৩০ সালে এসডিজি’র লক্ষ্যসমূহ অর্জনের সময়সীমা, ‘রুপকল্প-২০২১’ এর মত ‘রুপকল্প-২০৪১’কে সামনে রেখে এবারের বাজেট প্রণীত হয়েছে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। যেখানে অর্থনীতির চালিকা শক্তি হবে উন্নত প্রযুক্তি ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি।
এ অধিবেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় সংসদ সদস্যদের সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য স্পিকার সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদানের জন্য স্পিকার সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
এছাড়া তিনি চিফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, বিরোধী দলীয় নেতা, উপনেতাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর পর স্পিকার অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করেন। বাসস।