ঢাকা   মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   সন্ধ্যা ৬:২৬ 

সর্বশেষ সংবাদ

বিয়ে না করেও একসাথে থাকছেন বাংলাদেশের যে তরুণ তরুণীরা

বাংলাদেশের আইনে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ের লিভ টুগেদার করার পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো পরিষ্কার আইন নেই। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও লিভ টুগেদারের পক্ষে নয়। অর্থাৎ বিষয়টিকে সহজভাবে নেয়া হয় না। কিন্তু তারপরও প্রাপ্ত বয়স্ক একটি ছেলে ও মেয়ে পরস্পর সমঝোতার মাধ্যমে একসঙ্গে থাকছে। এই দুজন কিংবা তাদের ঘনিষ্ট বৃত্ত ছাড়া বিষয়টি কেউ জানেনা। এ নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আইন-আদালত’এর পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনটি করেছেন সায়েদুল ইসলাম।

ধরা যাক, ঢাকার বাসিন্দা ছেলেটির নাম ‘ক’ আর মেয়েটির নাম ‘খ’। বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে দুইজনের পরিচয়।”প্রথমে আমরা বন্ধু ছিলাম, সেখান থেকে ভালো লাগা শুরু। আমরা বেশ ক’বছর রিলেশনে ছিলাম। তারপরে আমরা ভাবলাম, যেহেতু আমাদের একটা পার্মানেন্ট রিলেশনে যাওয়া বা বিয়ের ব্যাপারে একটা চিন্তাভাবনা হচ্ছে নিজেদের ভেতরে, তখন ভাবছিলাম যে, সেটা পসিবল কিনা বা আমরা পরস্পরের জন্য ঠিক আছি কিনা। সেটা বোঝার জন্যেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করা,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ‘খ’।
বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে উন্নত অনেক দেশের মতো বিয়ে বা সামাজিকভাবে স্বীকৃত সম্পর্কের বাইরে গিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের একত্রে বসবাস বা লিভ টুগেদারের চল দেখা যাচ্ছে।
পশ্চিমা দেশগুলোতে যদিও লিভ টুগেদার সামাজিকভাবে স্বীকৃত, কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজে ছেলে-মেয়ের বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক বা একত্রে থাকা ভালো চোখে দেখা হয় না।
ফলে বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের সম্পর্ক খুবই সীমিত পরিসরে এবং গোপনে রয়েছে। তবে বিশ্বায়ন ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের সম্পর্কের সংখ্যা ধীরে হলেও বাড়ছে বলে সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন।
কেন লিভ টুগেটারের প্রতি যুগলদের আগ্রহ
এই বিষয়ে বিবিসি বাংলার কথা হয়েছে ঢাকায় বসবাসকারী দুই যুগলের সঙ্গে, যারা প্রচলিত সম্পর্কের বাইরে গিয়ে একত্রে বসবাস করছেন। তাদের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে কারও নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
‘ক’ বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ”আমাদের বিয়ের ব্যাপারে দুই পরিবারই প্রাথমিক সম্মতি জানিয়েছে । কিন্তু যখন আমরা দ্বৈত-জীবন শুরু করি এসব চিন্তা মাথায় ছিল না। দুই পরিবারই তুলনামূলক রক্ষণশীল হওয়ায় তখন এতটা অন্তরঙ্গতা মেনে নিতেন না। তাই আমরা পরিবার এ সংক্রান্ত কিছুই জানতে দেইনি। পরস্পরের বোঝাপড়া দারুণ ছিল তাই পারিবারিক স্বীকৃতির কথা না ভেবেও আমরা একসাথে থাকা শুরু করেছিলাম।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকুরীজীবী একজন তরুণী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”একত্রে চাকরি করতে গিয়ে আমাদের দুজনের দুজনকে ভালো লাগে। কিন্তু ওর পরিবারে অনেক দায়িত্ব রয়েছে, এখন তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। আমিও এখনি বিয়ে করতে চাই না।”
ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় তারা একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে থাকেন। ভাড়া নেয়ার সময় তারা স্বামী-স্ত্রী হিসাবে থাকবেন বলে পরিচয় দিতে হয়েছে।
এই তরুণী বলছিলেন, ”আমাদের দুজনকেই ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হতো। তখন ভাবলাম, তাহলে একসাথেই কেন থাকি না। দুজনের খরচ যেমন কমনে, পাশাপাশি দম্পতি হিসাবে আমরা কেমন হবো, বোঝাপড়া কেমন হবে, সেটাও পরিষ্কার হবে। এসব ভেবেই একসঙ্গে বাসা ভাড়া করে থাকতে শুরু করি।”
তবে দুজনের পরিবার তাদের একত্রে থাকার বিষয়ে এখনো জানে না।
লিভ টুগেদারে আগ্রহ কতটা বেড়েছে?
লিভ টুগেদারে বাংলাদেশের যুগলরা কতটা আগ্রহী হয়ে উঠেছে, এ নিয়ে বাংলাদেশে এখনো কোন গবেষণা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে যখন যুগলদের মধ্যে নানা সমস্যা দেখা দেয়, তখন তাদের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে কোন আইনগত বা সামাজিক সম্পর্কের বাইরে গিয়ে এভাবে একত্রে বসবাসের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
‘খ’ জানাচ্ছিলেন, তার পরিচিত এরকম বেশ কয়েকটি যুগল রয়েছে, যারা এভাবে একত্রে বসবাস করছেন। কয়েকটি দম্পতি রয়েছে, যারা একসময় লিভ টুগেদার করতেন, তবে এখন বিয়ে হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ রয়েছেন, যারা একসময় লিভ টুগেদারে থাকলেও সেই সম্পর্ক এখন ভেঙ্গে গেছে। তবে অনেকের মধ্যেই এ ধরনের সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে বলে তিনি জানান।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক নীনা গোস্বামী বলছেন, ”আমাদের কাছে এমন অনেক অভিযোগ আসে, যে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে একত্রে বসবাস করেছেন। কিন্তু এখন বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। তারা সরাসরি লিভ টুগেদার করার কথা বলে না। কিন্তু এ ধরণের অভিযোগের সংখ্যা একেবারে কম নয়।”
এসব ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতারণা বা বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়।
বাংলাদেশের ধর্মীয় বা সামজিকভাবে গ্রহণযোগ্য না হলেও অনেকে বিয়ে ছাড়াই একত্রে থাকার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন
খোঁজ নিয়ে যানা যাচ্ছে, শুধু উচ্চবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো নয়, সমাজের নিম্নবিত্ত পরিবারের মধ্যেও এভাবে বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া একত্রে বসবাসের চল রয়েছে।
একটি কারখানার কর্মকর্তা সিদরাতুল মুনতাহা বলছেন, ”পেশাগত কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, নিজেদের মধ্যে ভালোলাগা থেকে অনেক কর্মী বা শ্রমিক আনুষ্ঠানিক কোন সম্পর্ক ছাড়াই একত্রে বসবাস করছেন। সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হলে অনেক সময় আমাদের কাছে অভিযোগও আসে। আবার কিছুদিন পরে হয়তো তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়, আবার নতুন কারও সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। ”
প্রেম থেকে, একাকীত্ব কাটানো বা আর্থিক সাশ্রয়ের কথা ভেবে অনেকে এভাবে সম্পর্কে জড়ান বলে তিনি ধারণা করেন।
স্বামী-স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকতে হয়
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে যারা বিয়ে ছাড়া একত্রে বসবাস শুরু করেছেন, তাদের বেশিরভাগই এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। বিবিসি বাংলার সঙ্গে যারা কথা বলেছেন, তারাও সামাজিকতার কথা ভেবে পরিচয় প্রকাশ করতে আগ্রহী নন।
তবে বাংলাদেশের রক্ষণশীল সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে লিভ টুগেদার করতে গিয়েও তাদের নানারকম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
যেমন বাসা ভাড়া নেয়া বা বাসার কাজের লোকজনের কাছে বিবাহিত হিসাবে পরিচয় দিতে হচ্ছে এই যুগলকে।
‘ক’ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”আমরা বিবাহিত, এটা বলে আমাদের বাসা নিতে হয়েছিল এবং সবসময়ই সতর্ক থাকতে হয়েছিল বাড়ির মালিকের সামনে। তবে সুখের বিষয়, তিনি আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব বেশি কৌতূহলী ছিলেন না। ”ইংরেজি প্রচলিত টার্ম ‘লিভ টুগেদার’ না বলে একে দুইজন মানুষের দ্বৈত-জীবন বলে বর্ণনা করতে চান ‘ক’।
ঢাকার একটি বাসায় তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। কিন্তু তারা যে বিয়ে না করে একত্রে বাস করছেন, সেটা হাতেগোনা খুব কয়েকজন কাছের বন্ধু জানেন। এমনকি দুই পরিবারের লোকজনও এই বিষয়ে জানে না।
”যারা আমাদের জাজ করবে না বা বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচকভাবে দেখে না, শুধু তারাই আমাদের এই বিষয়টি জানে।”
তিনি বলছিলেন, ”দ্বৈত-জীবন শুরু করা সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরস্পরের মানসিকতার সামঞ্জস্য না হলে একসাথে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। আমাদের বেলায় কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে দুই পক্ষকেই। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আমার যতটুকু করার ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি সঙ্গীর থেকে। এটা সম্ভব হয়েছে তার সাথে মানসিকতার মিল থেকেই।”
‘খ’ বলছিলেন, বাড়িওয়ালা বা বুয়া বা আশেপাশের লোকজন অনেক সময় ব্যক্তিগত বিষয় জিজ্ঞেস করে শ্বশুর বাড়ি কেমন, কীভাবে বিয়ে হল। তখন আমাকে সবসময়ে একটা গল্প তৈরি করে রাখতে হয়। মনে রাখতে হয়, আমি আগেরবার কী বলেছি, সেটার সঙ্গে যেন মিল থাকে। খুবই সাবধানে থাকতে হয় বিষয়টা নিয়ে।”
একজন সঙ্গীর বাড়ির লোকজন এলে তখন অন্যজন বন্ধু বা অন্য কোথাও কয়েকদিন থেকে আসেন।
তার পরিচিত যারা এভাবে থাকছেন, তারাও নিজেদের সম্পর্কের বিষয়টি গোপন করে এভাবে থাকছেন বলে তিনি জানান।
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি কি পাল্টাচ্ছে?
এখনো বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ বিয়ে অথবা সামাজিক সম্পর্কের বাইরে গিয়ে ছেলে-মেয়ের একত্রে বসবাসকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সমাজবিজ্ঞানী ড. মাহবুবা নাসরীন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”সমাজ তো পরিবর্তন হচ্ছে। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলেও বিশ্বায়নের কারণে মানুষের আচরণে একটা পরিবর্তন তো পড়েছেই। উন্নত দেশ, আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার কিছু দেশেও ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে একসাথে বসবাসের চল তৈরি হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এখনো সামাজিকভাবে স্বীকৃত না হওয়ায় এটা লুকানো রয়েছে। তবে এই অনুশীলন কিন্তু দেখা যায়।”
”বিশ্বায়নের কারণে অনেক কিছুর অনুকরণ হতে দেখি। সেটার একটা প্রভাব তো সমাজের ওপর পড়ে। সেই পরিবর্তনের ছোঁয়া সব জায়গাতেই লাগে। সমানভাবে না লাগলেও কোথাও কোথাও সেটা স্পর্শ করে যায়। সেটাই আমরা দেখতে পাচ্ছি,” মাহবুবা নাসরীন বলছেন।
অধ্যাপক নাসরীন বলছেন, ”আমি বলবো, প্রতিবেশী দেশ বা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে হয়তো সংখ্যাটা এখনো নগণ্য। তবে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন কোন কোন জায়গায় হচ্ছে, সেটা তো পরিষ্কার। তবে মানুষের মধ্যে এই ধরনের জীবনযাপন বাংলাদেশে ধর্মীয় বা সামাজিকভাবে এখনো গ্রহণযোগ্য নয়। ” বলছেন অধ্যাপক নাসরীন।
‘খ’ বলছেন, তাদের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে সহপাঠী বা বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক সময় নেতিবাচক কথাও তাকে শুনতে হয়েছে।
অন্য যুগলরাও বলছেন, ‘লিভ টুগেদার’ এখনো বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ নেতিবাচক চোখে দেখে। কারণ এটা জানতে পেরে অনেকেই সহজে মেনে নিতে পারেন না। তাদের সঙ্গে অন্যরকম আচরণ করতে শুরু করেন।
কিন্তু যেভাবে সমাজের একটি অংশ এরকম সম্পর্কে জড়াচ্ছে, তাতে একসময় মানুষের সেই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে বলে তারা আশা করছেন।
বাংলাদেশে এ নিয়ে কোন জরিপ বা গবেষণা হয়নি বলে তিনি জানান।
‘কখনো কখনো অপরাধবোধ কাজ করে’
‘খ’ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বৈবাহিক সম্পর্ক না থাকার পরে একত্রে বসবাসের কারণে অনেক সময় তিনি অপরাধবোধেও ভোগেন।
”আমার নিজের ধারণাও এই বিষয়ে কন্ট্রাডিক্টরি (পরস্পরবিরোধী) । মাঝে মাঝে ধর্মীয় বিষয় মাথায় আসে যে, যা করছি সেটা ঠিক হচ্ছে না, একটা পাপ করছি। আবার আরেকদিন থেকে মনে হয়, এটা ঠিক আছে, অন্যদেরও এভাবে থেকে দেখা উচিত। কারণ অনেক সময় দেখা যায়, একজন আরেকজনকে সাপোর্ট দেয়ার কথা দিচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে না। একত্রে থাকতে গিয়েও অন্যজনকে আরেকভাবে চেনা যায়,” তিনি বলছেন।
তবে একজন মেয়ে হিসাবে এটা তার জন্য ভালো অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে। কারণ বাংলাদেশের বাস্তবতায় একটি মেয়ে হিসাবে তাকে হয়তো পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার এবং বাসা-দুইটাই দেখেশুনে রাখতে হয়। বাস্তবে সেটা কতটা সম্ভব হবে, সেই ধারণা তিনি এখনি পেয়ে যাচ্ছেন।
‘খ’ বলছিলেন, ”আমি বুঝতে পারছি, কতটুকু কোথায় মেইনটেইন করতে হবে, কতটুকু আমি করতে পারবো, পার্টনারের কাছ থেকে কতটুকু সাপোর্ট পাবো, সেটা বুঝতে পারছি। একসাথে থাকার কারণে অনেক গ্রো করেছি বলা যায়। ”
তবে এরকম সম্পর্কে থাকার কারণে ভবিষ্যতে কোন সমস্যা দেখেন না ‘খ’।
”যদি কখনো আমার অন্য রিলেশনে মুভ করতে হয়, তাহলে অবশ্যই আমি এমন একজনকে বেছে নেবো, যে এগুলো শুনে বা তার কোন সমস্যা হবে না। স্বাভাবিকভাবে এটা মেনে নেয়া উচিত বলে আমার মনে হয়। মানুষের তো প্রেম ভেঙ্গে যায়, বিয়েও ভেঙ্গে যায়, তাই না?” তিনি বলছেন।
বেসরকারি চাকুরীজীবী একজন তরুণী বলছিলেন, ”বিয়ে হয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার চেয়ে যদি লিভ টুগেদার করে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়, আমি তো বলতো সেটা অনেক ভালো। আনুষ্ঠানিক সম্পর্কে জড়িয়ে, আত্মীয়স্বজন সবাইকে নিয়ে একটা সম্পর্কে যাওয়ার আগে সেটা কতটা ভালো রিলেশন হবে, এটা তার একটা পরীক্ষা বলতে পারেন।”
বাংলাদেশের আইন কী বলে?
বাংলাদেশের আইনে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ের লিভ টুগেদার করার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন পরিষ্কার আইন নেই বলে বলছেন ব্যারিস্টার মিতি সানজানা।
”বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোন নারী-পুরুষ যদি একসঙ্গে বসবাস করতে যায়, তাহলে তাকে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিবাহিত হতে হয়। যেমন মুসলিম আইন অনুযায়ী তাকে রেজিস্ট্রেশনও করতে হবে। কিন্তু কেউ রেজিস্ট্রেশন না করেও ধর্মীয় বিধান মেনে সাক্ষীর উপস্থিতিতে যদি বিয়ে করে, সেটাও গ্রহণ করা হয়,” তিনি বলছেন।
ব্যারিস্টার সানজানা বলছেন, বিবাহিত ব্যক্তি যদি কোন বিবাহিত বা অবিবাহিত ব্যক্তির সঙ্গে লিভ টুগেদার করে, সেটা নানারকম আইনের মধ্যে পড়ে, নানা শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়ে যদি একত্রে বসবাস করে, সেক্ষেত্রে আইনে সরাসরি বা পরিষ্কারভাবে কিছু বলা নেই।
”তবে প্রত্যেকটা ঘটনার ক্ষেত্রে আসলে ফ্যাক্টচুয়ালি ডিপেন্ড করবে। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো পাবলিক ইনডিসেন্সি মনে করা হতে পারে। তবে সরাসরি কোন আইনের ধারায় সরাসরি কিছু করার সুযোগ নেই। সাধারণত যা হয়, এরকম ক্ষেত্রে আইনি বিষয় চলে এলে তখন নানারকম আইনের আওতায় কোন একটাভাবে তাদের ফেলে দেয়া হয়,” বলছিলেন ব্যারিস্টার মিতি সানজানা।
উন্নত দেশগুলোয় একত্রে বসবাস করলে সঙ্গীর একটা অধিকার তৈরি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এরকম কোন বিধান নেই বলেও তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত