ঢাকা   শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১   সকাল ৯:৪৩ 

সর্বশেষ সংবাদ

কলেজ ছাত্রকে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ তরুণীর বিরুদ্ধে

পটুয়াখালীতে এক তরুণীর বিরুদ্ধে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগে মামলা করেছেন একজন কলেজ ছাত্র।
পটুয়াখালীর আদালতে এই মামলা দায়েরের পর আদালত সেটি এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে ওই তরুণী স্ত্রীর সম্মান দাবি করে কলেজ ছাত্রটির বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। ওই কলেজ ছাত্র পটুয়াখালীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তরুণীও ঢাকায় পড়ালেখার পাশাপাশি বেসরকারি গবেষণার চাকরি করেন। এই বিয়ের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
মামলায় যে অভিযোগ:
মামলায় একজন তরুণীকে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা ছয় সাত জনকে আসামী করা হয়েছে। পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩ অক্টোবর দায়ের করা ওই মামলায় বলা হয়েছে, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ওই ছাত্রকে তরুণী অনেকদিন ধরে ফোনে এবং সামাজিক মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তাতে ছাত্রটি রাজি না হওয়ায় তার চোখ বেঁধে তাকে অপহরণ করা হয়। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে সাত আটজন ব্যক্তি বলপূর্বক একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে তাকে বাধ্য করে। এ নিয়ে একটি কাবিননামা তৈরির পায়তারা করা হচ্ছে বলে তারা সন্দেহ করছেন।
এই বিষয়ে কলেজ ছাত্রের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ”আমার মক্কেলকে যে জোর করে বিয়ে করা হয়েছে, সেটা ভিডিও দেখলেই প্রমাণ হয়ে যায়। সেখানেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই বিয়েতে আমার মক্কেল রাজি নন। তাকে জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।”
তাই এর বিচার চেয়ে তারা আদালতে মামলা করেছেন।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এখন এ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

অভিযুক্ত তরুণী যা বলছেন:
যে তরুণীর বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই তরুণী গত ১৫ই অক্টোবর থেকে স্ত্রীর পরিচয়ের দাবিতে কলেজ ছাত্রের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
জোর করে বিয়ের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন ওই তরুণী।
তিনি বিবিসি বাংলাকে টেলিফোনে বলছেন, ” গত বছর (২০২০) এপ্রিল মাস থেকেই ওই ছেলের সঙ্গে আমার প্রেম। আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একত্রে বাসাতেও থেকেছি। এখন শুনতে পেয়েছি, আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। এই কথা আমার বড়ভাই, স্বজনদের জানানোর পর তারা ছেলের সঙ্গে কথা বলে। সে নিজের ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছে।” তরুণীর দাবি, ঢাকার রায়ের বাজারের একটি কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়েছে। গত তিনদিন ধরে তিনি ছেলের বাড়িতে এসে উঠেছেন।
”আমার যাই হোক, আমাকে মেরে ফেললেও আমি এখানেই থাকবো,” তিনি দাবি করেন।
ভাইরাল ভিডিওতে যা দেখা গেছে:
এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিওটি সেই সময়ের বলে নিশ্চিত করেছেন তরুণীটি। এই ভিডিওর একটি কপিও আদালতে মামলার সঙ্গে জমা দেয়া হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন তরুণী একটি নীল কাগজের বইতে স্বাক্ষর করছেন। পাশেই তরুণ ছাত্রটি বসে রয়েছেন। পেছনে একজন দাঁড়িয়ে তার ঘাড় চেপে তাকে সোজা তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করছে।
সেখানে আরও কয়েকজনের উপস্থিতি দেখা যায়।
স্বাক্ষর করার পর একজন লাল শার্ট পরিহিত ব্যক্তি প্রথমে মেয়েটিকে মিষ্টি খাইয়ে দেন। এরপর তরুণের মুখে জোর করে মিষ্টি দেয়া হলে তিনি সেটা ফেলে দেন। তখন তাকে সেই ফেলে দেয়া মিষ্টি উঠিয়ে খাওয়ার জন্য ধমক দেন লাল শার্ট পরা ব্যক্তি। বিবিসি বাংলা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত