বিশ হাজার টাকার জন্য বাড়ির মালিককে খুন। তারপর সেই মৃতদেহ বাথরুমে ফেলে উধাও হত্যাকারী। কিন্তু তার সেই পলায়ন বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি, হত্যার দুইদিনের মধ্যে সে ধরা পড়ে পুলিশের জালে। উদঘাটন হয় একটি ক্লুলেস হত্যা মামলার মূল রহস্য।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এর কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুব এ খোদা জানান, গত ১৫ জুলাই,বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দক্ষিণ পানিশাইল পদ্মা হাউজিং প্রকল্পে এ ব্লকে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ৩য় তলার বাথরুমে অর্ধ গলিত গলাকাটা একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। যা স্থানীয়রা উক্ত বাড়ির মালিক আমিনুল ইসলাম খন্দকার ওরফে বাবুল (৬০) এর বলে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় কাশিমপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়।
গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া অপরাধ (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ জানান, নির্মাণাধীন ভবনের এই হত্যা মামলাটি ছিল সম্পূর্ন ক্লুলেস। তাই থানা পুলিশের পাশাপাশি একাধিক টিম এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মৃতদেহ পাওয়ার মাত্র দুই দিনের মধ্যেই ১৭ জুলাই ভোর রাতে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকারী জাহাঙ্গীর আলম সোহাগকে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি।
হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গত ১৩ জুলাই, রাত অনুমান আটটায় আসামী জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ ভিকটমের নির্মাণাধীন ৫ম তলা ভবনের ৩য় তলায় উঠে ভিকটিমকে ফোন করে বলে আপনার নির্মাণাধীন ভবনে ২/৩ জন লোক উঠেছে। ভিকটিম তখন উপরে উঠে মোবাইল ফোনের আলোতে লোক খুঁজতে থাকেন। কাউকে না পেয়ে ৩য় তলায় ঘটনাস্থল কক্ষে চেক করার সময় পেছন থেকে জাহাঙ্গীর তার মুখ চেপে ধরে বিশ হাজার টাকা দাবি করে। আমিনুল ইসলাম টাকা দিতে না চাইলে আসামীর কাছে থাকা ধারালো গার্মেন্টস এর কাটিং ছুরি গলায় ধরে ভয় দেখায়। তখন তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় এতে করে জাহাঙ্গীরের হাত সামান্য কেটে ও ছিলে যায়। আমিনুল ইসলাম বাঁচার জন্য আসামীর ডান হাতের আঙ্গুলে কামড় দিলে জাহাঙ্গীর ভিকটিমের গলায় ধারালো কাটিং ছুরি দিয়া আঘাত করে। ভিকটিম এর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর জাহাঙ্গীর ভিকটিমের পাঞ্জাবীর পকেট থেকে ৯৯৭ টাকা নিয়ে নেয় এবং মৃতদেহটি বাথরুমের ভিতর লুকিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ বেশকিছু সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই খুনের রহস্য উদঘাটন করতে ও খুনিকে ধরতে সক্ষম হয়।