ঢাকা   মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   সন্ধ্যা ৬:০৩ 

সর্বশেষ সংবাদ

বরিশালে রাস্তায় প্রকাশ্যে শিশু গৃহকর্মীকে মারধর করলেন ডিবির ওসির স্ত্রী

বরিশাল নগরীতে রাস্তায় প্রকাশ্যে শিশু গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে পরিদর্শকের ছেলেও স্থানীয়দের সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর চৌমাথা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মীর নাম মনি (১১)। সে বাবুগঞ্জ উপজেলার মন্টু হাওলাদারের মেয়ে। ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
শিশু গৃহকর্মী অভিযোগ করে- সে রূপাতলী এলাকায় ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমানের বাসায় কাজ করত। এ সময় তাকে অনেকবারই বকাঝকা করা হতো। বৃহস্পতিবার সে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে নগরীর চৌমাথা এলাকায় মিজানুর রহমানের স্ত্রী রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করে। এ সময় তার ছেলেও চড়-থাপ্পড় দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, মেয়েটি চৌমাথা বাজারের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিল। এর মধ্যে এক মহিলা ও একজন ছেলে মেয়েটির হাত ধরে টান দেয় এবং মারা শুরু করে। এ সময় মেয়েটি বলতে থাকে- ‘মুই আমনেগো লগে যামু না, ওই বাসায় মইরা গেলেও যামু না’। এ সময় লোকজন জমা হয়ে যায় এবং শিশুটিকে মারার কারণ জানতে চান। পাশাপাশি মারধরকারী ওই মহিলা ও ছেলেকে পুলিশে দেয়ার কথা বললে ওই মহিলা ও তার ছেলে উল্টো পুলিশকে গালাগালি করে।
আরও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী রাস্তায় মেয়েটির ওপর নির্যাতনের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত মহিলার স্বামী জেলা ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তিন দিন আগে শিশুটির মা-বাবা আমাদের বাসায় রেখে যান। আমার স্ত্রী অসুস্থ। আজ সকালে সে রিপোর্ট দেখানোর জন্য বাইরে বের হয়েছে। আমি বাসায় একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এই সুযোগে শিশুটি ঘরের বাইরে বের হয়ে যায়।
১২ বছরের শিশু আপনার বাসায় কী কারণে রেখেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিশুটি অসহায় হওয়ায় তার মা আমার বাসায় দিয়ে গিয়েছিলেন। আমার সন্তানদের সঙ্গী হিসেবে থাকতো শিশুটি। তাকে গৃহকর্মী হিসেবে রাখা হয়নি।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির সঙ্গে কথা বলেছি। ৬ দিন আগে সে ওই বাসায় কাজ শুরু করেছে। সেখানে বকাঝকা করায় মেয়েটি ক্ষুদ্ধ হয়ে বাসা থেকে আজ সকালে বের হয়ে যায়। পরিদর্শকের পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়, ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে পেলে তারা বাসায় নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু মেয়েটি না যেতে চাইলে টানাহেঁচড়া হয়। যে বিষয়টি দৃষ্টিকটু। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। শিশুটি বর্তমানে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে, তার পরিবার এসে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, যেহেতু শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেহেতু শিশুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। ভিকটিমের জবানবন্দি ও বাবা-মায়ের অভিযোগ সব কিছু শুনেই ঘটনার তদন্ত করে যা সামনে আসবে সেভাবেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন সবার জন্য সমান। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত