একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
বুধবার অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি দাবির পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশ মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রায় ছয় ঘণ্টা এ মানববন্ধন কর্মসূচি চলে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সর্বইউরোপীয় শাখার সভাপতি তরুণকান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তব্য দেন নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, ব্রিটিশ মানবাধিকার নেতা জুলিয়ান ফ্রান্সিস, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষাসংগ্রামী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী সমাজকর্মী আরোমা দত্ত এমপি, অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির এমপি লরি ফার্গুসন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, খেমাররুজ ট্রায়ালের কম্বোডিয়ান টাস্কফোর্সের উপদেষ্টা গণহত্যা বিশেষজ্ঞ ড. হেলেন জার্ভিস, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিম চৌধুরীর কন্যা অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, ভারতের লেখক সাংবাদিক হিরণ্ময় কার্লেকার, টার্কিশ পেন-এর সাবেক সভাপতি কবি ও নাট্যকার তারিক গুনারসেল, ভারতের জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার ভরদ্বাজ, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় গ্রহণকারী ইরানের মানবাধিকার নেতা বানাফশে যাদ, পোল্যান্ডের মানবাধিকার কর্মী নাটালিয়া সিনায়েভা পাঙ্কোভস্কা, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী ড. জেফ মুডি, যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার নেতা ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, টোয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি ফোরাম ফর হিউম্যানিজম-তুরস্কের সভাপতি লেখক, চলচ্চিত্র নির্মাতা ফেরহাত আতিক, ফোরাম ফর সেক্যুলার ইজিপ্ট অ্যান্ড মিডল ইস্টের সভাপতি মানবাধিকার নেতা সাংবাদিক মহসিন আরিশি, সুইজারল্যান্ডের আর্থ ফোকাস ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি নিকোলাস ফুরে, সুইজারল্যান্ডে আশ্রয় গ্রহণকারী বেলুচ মানবাধিকার নেতা মুনির মেঙ্গাল, ওয়ার্ল্ড সিন্ধি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা ড. লাকু লুহানা, যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় গ্রহণকারী সিন্ধি মানবাধিকার নেতা ড. সাগর শেখ, ভারতের ভূ-রাজনৈতিক বিশ্নেষক ও লেখক প্রিয়জিৎ দেব সরকার, ইংল্যান্ডের মানবাধিকার নেতা ভাল হার্ডিং এবং পাকিস্তানের মানবাধিকার নেতা তাহিরা আবদুল্লাহ।
বক্তারা বলেন, একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিলে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে।
২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এ গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখনও এ কার্যক্রম চলছে। ইতিহাসের এত বড় গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া না হলে বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।