ঢাকা   শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১   সকাল ১১:০২ 

সর্বশেষ সংবাদ

৫ বছরে ৫’শ তরুণী ভারতে পাচার, ‘মূল হোতা’ ‘বস রাফি’সহ ৪জন গ্রেফতার

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক তরুণীকে ভারতে পাচার করেছে আন্তর্জাতিক নারী পাচারচক্র। এই চক্রে দুই দেশের প্রায় ৫০ জন সদস্য রয়েছে। পাচার করে তাদের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয় এবং জোরপূর্বক যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়। এমন একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব জানায়, চক্রের অন্যতম ‘মূল হোতা’ ঝিনাইদহের আশরাফুল মণ্ডল ওরফে ‘বস রাফি’ (৩০)।
রাফি গত পাঁচ বছর ধরে নারীপাচারের সঙ্গে জড়িত। দুই বছর আগে তার সঙ্গে টিকটক হৃদয়ের পরিচয় হয়। রাফি টিকটক হৃদয়ের মাধ্যমে অন্তত অর্ধশতাধিক তরুণীকে ভারতে পাচার করেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরানবাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
সম্প্রতি ২২ বছরের এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গত ২৭ মে ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে টিকটক হৃদয়সহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে দেশটির পুলিশ।
এ ঘটনার পর গত দুই দিনে অভিযান চালিয়ে রাফিসহ চার জনকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। অন্য তিন জন হলেন, যশোরের সাহিদা বেগম ওরফে ম্যাডাম সাহিদা (৪৬), ইসমাইল সরদার (৩৮) ও আবদুর রহমান শেখ ওরফে আরমান শেখ (২৬)। ঝিনাইদহ ও যশোরের অভয়নগর ও বেনাপোল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র‌্যাব জানায়, ভারতে গ্রেপ্তারকৃত টিকটক হৃদয় রাফির অন্যতম সরবরাহকারী বা এজেন্ট। টিকটক হৃদয় অনলাইনে টিকটক ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের তরুণীদের টিকটক মডেল বানানো ও অন্যান্য প্রলোভন দেখিয়ে উশৃঙ্খল জীবনে আকৃষ্ট ও অভ্যস্ত করতেন। পরবর্তীতে তাদেরকে পার্শ্ববর্তী দেশ বা উন্নত দেশে বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাফির মাধ্যমে ভারতে পাচার করতো। মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই পার্শ্ববর্তী দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে তাদের পাচার করা হতো বলে জানায় র‌্যাব। র‌্যাব জানায়, রাফির শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। আট বছর আগে থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে তার যাতায়াত আছে। তিনি সেখানে ট্যাক্সি ড্রাইভার, হোটেলে রিসোর্ট কর্মচারী ও কাপড়ের ব্যবসা করতেন। রাফি তামিল ভাষা রপ্ত করেছিলেন, এক্ষেত্রে তার ভাষাগত দক্ষতা ব্যাপক ভূমিকা রাখে। একপর্যায়ে তিনি রিং লিডার হয়ে যান। সেখানকার এজেন্ট তাকে খদ্দের প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা কমিশন দিতেন বলেও জানায় র‌্যাব। র‌্যাব আরও জানায়, বেঙ্গালুরুতে রাফির বেশ কয়েকটি সেফ হাউস আছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে তার সেফ হাউস রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত