ঢাকা   শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১   বিকাল ৪:৫৩ 

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়ান্ন বছর বয়েসি মসজিদের ইমামের পরকিয়া, প্রেমিকার স্বামীকে গলাকেটে হত্যা করে লাশ রাখেন সেপটিং ট্যাংকে

চুয়ান্ন বছর বয়েসি মসজিদের ইমাম পঁচিশ বছর বয়েসী এক নারীর সঙ্গে পরকিয়ায় জড়িয়ে পথের কাঁটা সরাতে ওই নারীর স্বামীকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। শুধু হত্যাই নয়, ওই ব্যক্তির লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে মসজিদের সেপটিক টেংকির ভেতরে ঢুকিয়ে রাখা হয়।পঁচা লাশের গন্ধে আশপাশের লোকজন র‍্যাবকে খবর দিলে জানাজানি হয় বিষয়টি। ভয়ঙ্কর এই খুনের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায়।

বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংএ র‍্যাব জানায়, রাজধানীর দক্ষিণখান জামে মসজিদের পাশেই পোশাকশ্রমিক আজহারুলের ইসলামের ভাড়া বাসা। মসজিদটির ইমাম আবদুর রহমান আজহারুল ও তাঁর ছেলেকে তাঁদের বাসায় গিয়ে আরবি পড়াতেন। গত ফেব্রুয়ারিতে রহমানের সঙ্গে আজহারুলের স্ত্রী আসমা বেগমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সন্দেহ হলে রহমানকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন আজহারুল। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আজহারুলের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এরপর আজহারুলকে সরিয়ে দিতে ঈদুল ফিতরের সাত দিন আগে রহমানের সঙ্গে আসমা হত্যা পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে আজহারুল ও ছেলেকে নিয়ে আসমা টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যান। মা–ছেলে থেকে গেলেও ২০ মে আজহারুল ঢাকায় ফিরে কাজে যোগ দেন। সেখান থেকে ফিরলে ওই দিন এশার নামাজের পর রহমান মসজিদের দোতলায় তাঁর ঘরে আজহারুলকে ডেকে নেন। এসময় তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। হাতাহাতিরও ঘটনা ঘটে। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কোরবানির গরু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে আজহারের গলায় আঘাত করেন ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আজহারের মরদেহ ছয় টুকরা করে তাঁর দুই হাত, পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেন। ট্যাংকের ঢাকনার ওপর সিমেন্টের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখেন। মঙ্গলবার আসমা ও মাওলানা রহমান জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন বলে র‍্যাব জানায়।
র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত সোমবার রাতে কয়েকজন মুসল্লি দক্ষিণখানের ওই মসজিদের দোতলায় ওঠার সিঁড়িতে রক্তের দাগ দেখতে পেয়ে র‍্যাব-১–কে জানান। পরে র‍্যাব সদস্যরা সেখানে গিয়ে মসজিদের পাশের বাড়ির বাসিন্দা আজহারুলের নিখোঁজ থাকার তথ্য জানতে পারেন। মসজিদ এলাকা থেকে তখন দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছিল। এরপর রহমানকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে আসমার সঙ্গে রহমানের সম্পর্কের বিষয়টি আজহারুল জানার পর তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। রহমান একটি সিম কিনে দিয়ে আসমার সঙ্গে যোগাযোগ এবং বাসার বাইরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে থাকেন। র‍্যাব জানায়, রহমান জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার কথা জানান। পরে রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে আজহারুলের ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে আসমা বেগমকে আটক করে র‍্যাব। হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি ছুরিও উদ্ধার করে র‍্যাব। আটক দুজনকে দক্ষিণখান থানায় সোপর্দ করা হয়। ওই ঘটনায় আজহারুলের ছোট ভাই আবুল হাসান বাদী হয়ে আসমা ও রহমানকে আসামি করে দক্ষিণখান থানায় হত্যা মামলা করেন। দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক জানান, আসমা ও মাওলানা রহমানকে ১০ দিনের রিমান্ডে চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত