ঢাকা   মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   বিকাল ৫:০৩ 

সর্বশেষ সংবাদ

ধর্ষণের মামলায় নুর-মামুনদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ, ঢাবির সেই ছাত্রী অনশনে

ধর্ষণ মামলার আসামি হাসান আল মামুন, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ সাধারণ ছাত্র পরিষদের ছয় নেতাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মামলার আসামী ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু প্রকাশ্যে সভা সমাবেশে বক্তব্য করা এবং তাকে গ্রেপ্তার না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী।
অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ওই তরুণী। আসামিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রী সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।

ভুক্তভোগী ওই তরুণী জানান, বর্তমানে ধর্ষণ একটা মহামারি আকার ধারণ করেছে। আমিও একজন ভুক্তভোগী। এর আগে লালবাগ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছি। কিন্তু ১৭ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি৷ লালবাগ কোতোয়ালি থানায় মামলা করার পর একাধিকবার আমি থানায় যোগাযোগ করেছি। থানা থেকে বলা হচ্ছে আমরা আসামিকে ধরার চেষ্টা করছি৷ আমরা ইতিমধ্যে নেটওয়ার্কের জাল বিছিয়ে দিয়েছি৷ আসামিরা টেকনলোজিতে এক্সপার্ট। তারা কোন ডিভাইস ইউস করছে না। তাই আমরা তাদের ধরতে পারছি না।

আসামিরা প্রভাবশালী তাই পুলিশ তাদের ধরছে না এমন দাবি করে ঢাবির এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার মামলা করার পর এমসি কলেজ, সাভারসহ দেশে বেশ কিছু ঘটনায় ধর্ষণের মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় আসামি গ্রেপ্তারও হয়েছে। আমার মামলা করার আজকে ১৭ দিন। ১৭ দিন পরেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমার মনে হচ্ছে পুলিশ কারও দ্বারা প্রভাবিত।

এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সেখানে অবস্থান নেন কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জেরিন তাসনি পূর্ণি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারজানা নিপা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশিসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেত্রীরা।

ঢাবি ছাত্রীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে ডাকসুর সাবেক সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। সে অনশন করছে তাই সাহস যোগানোর জন্য আমরা তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হওয়া তার পাশে থাকব।

এছাড়া রাতেই ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নেতাকর্মীও একাত্মতা জানিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন। পরে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে এই শিক্ষার্থীর দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর লালবাগ থানায় মামুনকে প্রধান আসামি করে ছাত্র অধিকার পরিষদের ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রাজধানীর লালবাগ থানায় ধর্ষণের মামলা করেন ওই ছাত্রী। এই মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরকে ধর্ষণে সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরপর গত ২১ সেপ্টেম্বর একই আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে অপহরণ, ধর্ষণ, ধর্ষণে সহযোগিতা এবং হেয় প্রতিপন্ন করতে ডিজিটাল মাধ্যমে অপপ্রচারের অভিযোগ কোতোয়ালি থানায় অরেকটি মামলা করেন ওই ছাত্রী।

উভয় মামলার আসামিরা হলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ, একই সংগঠনের অব্যাহতিপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি নাজমুল হুদা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহিল কাফি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত