ঢাকা   শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ১০:১৬ 

সর্বশেষ সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা চাইলেন আইনমন্ত্রী

দ্বিপক্ষীয় সব সমস্যা মিটিয়ে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় করার পথে হাঁটবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আইনমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি হলো। সে সম্পর্ক রক্ষার জন্য আগামীতে দুই দেশের মধ্যে এখন যেসব সমস্যা আছে, তা মিটিয়ে নতুন করে বন্ধুত্ব গাঢ় করার পথে হাঁটবে দুই দেশ। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হ্যাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।এসময় নতুন রাষ্ট্রদূতকে তাঁর দেশে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে সহযোগিতার অনুরোধ জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৈঠকের বিষয়ে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। এটি ছিল তাঁর সঙ্গে প্রথম বৈঠক। বৈঠকে দুটি নির্ধারিত এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী তাকে জানান, এই আইন কখনোই বাক-স্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি। এটা সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা হয়েছে। তিনি জানান, এর কিছু অপব্যবহার হয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, অনেক দেশের সংবিধানের তুলনায় বাংলাদেশের সংবিধান আলাদা। বাংলাদেশের সংবিধানে সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতাকে আলাদাভাবে গ্যারান্টি প্রদান করা হয়েছে মৌলিক অধিকারের মাধ্যমে। আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা যে জতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই-কমিশনারের অফিসের সাথে বেস্ট প্র্যাকটিসের ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরামর্শক এসেছিলেন তার সঙ্গে যে আলাপ করেছি, সেগুলো উল্লেখ করেছি। এরপর মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাকে বললেন, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে আমাদের সহায়তা করতে চায়। আমি বলেছি, এটা অবশ্যই বিবেচনাধীন থাকবে।’ প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আইনজীবীদের যদি এ ব্যাপারে প্রশিক্ষিত করা যায়, তাহলে সেটা ভালো হবে। তারা যে জজ ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এসেছেন, সেটাও আমি উল্লেখ করেছি। সেখানে যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হচ্ছে মানব পাচার ট্রাইব্যুনালের কাজে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে অত্যন্ত সন্তুষ্ট, সেটা তিনি বলেছেন।’যুক্তরাষ্ট্র মানব পাচার বিষয়ক প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখবেন জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘আর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেবেন তারা।’ আনিসুল হক বলেন, সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের দায়ের করা একটি মামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যেটা আদালতে বিচারাধীন। এ বিষয়ে বলেছি, ‘আদালত স্বাধীন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। এ মামলায় প্রসিকিউশনের দায়িত্ব যাতে সঠিকভাবে পালন করে সেটা আমরা দেখবো।’আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (রাষ্ট্রদূত) উল্লেখ করেছেন, দূতাবাস হয়তো তাদের একজন আইনজীবী সেখানে নিয়োগ করতে পারেন। সেই রকম একটা পারমিশন হয়তো চাইবেন। আমি বলেছি, সেখানে আমাদের কোন আপত্তি নেই।’ আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আলোচনার এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে । তিনি বলেন, রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে আরও আলোচনা করা হবে এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও চিঠি দেয়া হবে। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আইএলও’র সঙ্গে বাংলাদেশের কিছু বিষয় আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেক্ষেত্রে কী অগ্রগতি হয়েছে সেটাও আলোচনা করেছি।’ বৈঠকে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির এবং আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত