মন্ত্রিপরিষদ আগামী দুই মাসের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের জন্য ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনার অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে সভায় যোগ দেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রিসভা আগামী দুই মাসের মধ্যে সকল ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করার নির্দেশ দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রিসভা ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রয়োজনীয় জামানত জমা দেয়ার ও নির্দেশ দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণার চালিয়ে জনগণের মাঝে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিদেশ দিয়েছে।
বন রক্ষায় ডিজিটাল জরিপের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেশের সব বনাঞ্চলের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবিলম্বে ডিজিটাল জরিপ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিনি এ নির্দেশ দেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ভূমি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে অবিলম্বে সব বনের ডিজিটাল জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছেন।” তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বনাঞ্চলের ভেতরে বর্তমানে বসবাসকারী লোকদের স্থায়ী বসতি স্থাপনের জন্য ডিজিটাল জরিপ শেষ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় জনগণকে গাছের মালিকানায় অংশীদার করার মাধ্যমে বনায়নে সম্পৃক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় লোকজনকে বনভূমিতে বনায়নে নিয়োজিত করতে পারলে তারা বনের ক্ষতি করবে না।
টাঙ্গাইলের মদুবনগর, শেরপুরের গারো পাহাড়, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সুন্দরবনসহ বিভিন্ন বনাঞ্চলে বসবাসকারী অনেক মানুষ বন সংক্রান্ত অনেক মামলায় জড়িয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, এমনকি একজন ব্যক্তি ৪০ থেকে ৫০ টি মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন।
মামলাগুলোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে স্বস্তি দেয়ার স্বার্থে কোনো যৌক্তিক ভিত্তি না থাকা মামলাগুলো পর্যালোচনা করে অবিলম্বে সেগুলো প্রত্যাহার করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। জনগণ যাতে আর এ ধরণের মামলায় জড়াতে না পারে সে জন্য প্রচারণা চালানোর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রীসভা নীতিগতভাবে ৪৫,০০০-৪৬,০০০ একর জমির (ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলায়) আটিয়া বন রক্ষার জন্য আটিয়া বন (সংরক্ষণ) আইন-২০২১ এর খসড়া অনুমোদন করেছে। ‘আটিয়া বন (সুরক্ষা) অধ্যাদেশ ১৯৮২’ এর স্থলে প্রস্তাবিত আইনটি প্রতিস্থাপিত হবে’ উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আতিয়া বনকে প্রথম ১৯২০ এর দশকে একটি আইনের মাধ্যমে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী বনের ক্ষতি করা জামিন অযোগ্য অপরাধ। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে আটিয়া বনে তারপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বনে ডিজিটাল জরিপ করার কথা বলেন।
এছাড়াও মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে কপিরাইট আইন ২০২১ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে, এতে যে কোন কাজের মেধাস্বত্ব অধিকারের মেয়াদ হবে ষাট বছর।
মন্ত্রিসভা অবশ্য ড্রাগস অ্যাক্ট ২০২১ এর খসড়া অনুমোদন করেনি বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো পর্যালোচনা করতে বলেছে।
অন্যদিকে, কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষার্থীদের ১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় ১২টি কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ক্যাম্পেইনের অধীনে সারা দেশে কেন্দ্রসংখ্যা বাড়ানোর জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। বাসস।