ঢাকা   শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০   সন্ধ্যা ৬:৪০ 

সর্বশেষ সংবাদ

দু’দফায় ১৫০ জন ইউপি চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত, নজিরবিহীন বলছেন বিশেষজ্ঞরা

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের কাঠামো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার হিড়িক পড়েছে। প্রথম দফায় ভোটের আগেই ৬৯ জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবার দ্বিতীয় ধাপে ৮শ ৪৬টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮১ জন চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। দু’দফায় ১শ ৫০ জন ইউপি চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলেন। নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের সকলেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচনে এতো বিপুল সংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াকে নজিরবিহীন ঘটনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব এবং নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি অনীহার কারণেই এসব নজিরবিহীন ঘটনা ঘটছে। এতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে এবং জবাবদিহিতা কমে যাবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার শেষ দিনে বাকি প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ায় এসব জনপ্রতিনিধি একক প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন। বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে তিন হাজার ৩১০ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে নয় হাজার ১৬১ জন এবং সদস্য পদে ২৮ হাজার ৭৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ৮শ ৪৬ ইউপিতে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষে মাঠ পর্যায়ের একীভূত তথ্য জানায় ইসি সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখা। এতে জানানো হয়. বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে ৮১জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ এসব পদে আর ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না।
এর আগে প্রথম ধাপে ৬৯ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এছাড়া সাধারণ সদস্য ৬৩ জন এবং সংরক্ষিত ৬ জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। বুধবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এদিন থেকেই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার কার্যক্রম। আগামী ১১ নভেম্বর এসব ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে ৮শ ৪৬ ইউনিয়ন পরিষদে চার হাজার ৭৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী হন। তারা সবাই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী।
মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে ৫শ ৭২ জন নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ জনে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১৩টি উপজেলার ৮৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২১টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছেন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ৮১টি বাদে বাকি ৭৬৫ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন হাজার ৩১০ প্রার্থী।
ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৯৩ জন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ভোটের মাঠে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নয় হাজার ১৬১জন প্রার্থী। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন ৭৬ জন। একইভাবে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ২৮ হাজার ৭৪৭ জন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এক হাজার ৬৬৪জন। এ পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৩০ হাজার ৮৮৩জন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ২০৩ জন। বাকিদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত