ঢাকা   শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০   রাত ১:২৭ 

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, সেই তাসনিম খলিলের বিরুদ্ধে সুইডেনে মামলা

বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সুইডেনে কথিত সাংবাদিক তাসনিম খলিলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি, অস্ট্রিয়া প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক এম. নজরুল ইসলাম, সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, সুইডেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান ভূইয়া, প্রকৌশলী হেদায়েতুল ইসলাম শেলী ও দালিল উদ্দিন এই মামলা করেন।
স্টকহোম থেকে সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “তাসনিম খলিল বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত।

নজরুল ইসলামসহ মামলার বাদিরা।

এই তথাকথিত সাংবাদিক সুইডেন বসে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সরকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তার ‘নেত্র নিউজ’ নামের অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এইসব অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে।
একটি ঘৃণ্য চক্র অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। তাসনিম খলিল এই চক্রের অন্যতম সদস্য। লন্ডনে পলাতক বিএনপি নেতা তারেক রহমান এই চক্রের প্রধান। তাদের পেছনে আছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা। এই অপপ্রচারের জন্য তারা বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালছে।
নজরুল ইসলাম জানান, এ ধরণের অপপ্রচার আর চলতে দেয়া যায় না। আইনগতভাবেই এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সুইডেনের মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, এটা আমরা এই দেশের আইনের দৃষ্টিতে এনেছি।”

কে এই তাসনিম খলিলঃ

বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত স্বঘোষিত নাস্তিক তাসনিম খলিল। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাই যেন তার নেশা।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগেই ২০০৭ সালে তাসনিম খলিল অপকর্মের জন্য দেশ থেকে ‘পাততাড়ি’ গুটিয়েছেন। বিলাসী জীবনের হাতছানিতে বিভোর হয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে আয়েশে বসবাস করছেন সুইডেনে। এক যুগ ধরে সেখানে বসেই বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার যোগসাজশে বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন তিনি।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অস্থিতিশীল ও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির ‘খোয়াব’ তার চিরায়ত। এ কারণে এরই মধ্যে ‘গুজব গুরু’ হিসেবে আলাদা পরিচিতি পেয়েছেন। বিদেশে বসে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে কূটকৌশলই তার নেশা।
তাসনিম খলিল জামাত মতাদর্শে বিশ্বাসী একজন নামসর্বস্ব সাংবাদিক। মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে বিএনপি-জামাতের ‘গুজব সেলে’র পেইড কর্মী হয়ে কাজ করছেন তিনি। তার মূল কাজ হলো, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ও সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরিতে উসকানি দেয়া।
২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ডেইলি স্টার পত্রিকায় চাকরি করতেন তাসনিম খলিল। কিন্তু বিভিন্ন উদ্দেশ্য ও পক্ষপাতমূলক সংবাদের কারণে ডেইলি স্টার থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও তিনি সিএনএন-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি প্রকল্পে জড়িত ছিলেন। এসময় তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আক্রমণাত্মক লেখা লিখতে থাকেন।
সেই সময় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যাদের ব্যক্তিগত ইমেইলে ও মোবাইলে টেক্সট দিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিতেন তিনি। পরবর্তীতে ভিনদেশিরা বিপুল পরিমাণে অর্থ সহায়তার প্রলোভন দিলে তাসনিম দেশের নানা গোপন নথি দেশবিরোধী শক্তিকে সরবরাহ করে দেন।
এজেন্ডাভিত্তিক সাংবাদিকতায় নিয়োজিত তাসনিম আসলে জন্মভূমির প্রতি অকৃতজ্ঞ। সেখানেও দেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছেন। সাংবাদিক নাম নিলেও তিনি মূলত প্রতারক। আবার এগুলোই নিজেদের ভূইফোঁড় অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘নেত্র নিউজ’র প্রধান খোরাকও বটে! এসব গুজবের দৌঁড়ে ‘করিৎকর্মা’ হিসেবেই ক্রমশ নিজেদের মেলে ধরে যুক্তরাজ্যে পলাতক ও দণ্ডিত বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বোচ্চ আস্থাও কুড়িয়েছেন।
তাসনিম খলিলের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথে। সিলেট নগরের পৌরবিপনী মার্কেটে কিংশুক মুদ্রায়ণ নামে তাদের একটি পারিবারিক প্রেসের ব্যবসা ছিল। জামাত অনুসারি কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত তাসনিমের বাবা কাসেমি মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর ছিলেন।
সিলেট নগরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পরিবার হিসেবে তারা চিহ্নিত। তাছাড়া মাওলানা সাঈদীসহ কেন্দ্রীয় জামাত নেতারা সিলেট সফরে গেলে তাসনিমদের বাড়িতে নিয়মিত যেতেন। তাসনিম বর্তমানে সুইডেনের আরেব্রোতে বসবাস করছেন। জানা গেছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন নানা ভুল তথ্য দিয়ে তিনি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত