ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১   দুপুর ১:৩০ 

সর্বশেষ সংবাদ

আফগানিস্তানে ফের ফিরছে মৃত্যুদণ্ড, অঙ্গচ্ছেদের চরম শাস্তি

তালেবানের সাবেক ধর্মীয় পুলিশ প্রধান ও বর্তমান কারাপ্রধান মোল্লা নুরুদ্দিন তুরাবি বলেছেন, আফগানিস্তানে মৃত্যুদণ্ড এবং অঙ্গচ্ছেদের মতো চরম শাস্তির বিধান আবার চালু করা হবে।
বার্তা সংস্থা এপি’কে তুরাবি বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য’ হাত কাটার মতো শাস্তি দেয়া জরুরি। তবে এবারে সেই আগেরবারের তালেবান শাসনামলের মতো প্রকাশ্যে এই শাস্তি দেয়া নাও হতে পারে বলে জানান তিনি।
১৯৯০-এর দশকের শাসনামলে তালেবান অপরাধীদের শাস্তি দিত স্টেডিয়ামে শত শত মানুষের সামনে। অতীতে এমন প্রকাশ্যে মত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন তুরাবি।
তিনি বলেন, “প্রত্যেকেই আমাদের স্টেডিয়ামে শাস্তি দেয়া নিয়ে সমালোচনা করেছে। কিন্তু আমরা তো কখনও তাদের আইন আর শাস্তি দেয়ার পন্থা নিয়ে কিছু বলিনি। আমাদের আইন কেমন হবে, তা কাউকে বলে দিতে হবে না। আমরা ইসলাম অনুসরণ করব এবং কোরআনের ওপর ভিত্তি করে আমাদের আইন তৈরি করব।”
আফগানিস্তানে আগেরবারের তালেবান শাসনামলে খুনিদের মাথায় গুলি করে মত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত। আর চুরি করার শাস্তি ছিল হাত কেটে ফেলা। মহাসড়কে ডাকাতি করার শাস্তি হিসাবে ডাকাতিতে জড়িতদের এক হাত ও পা কেটে ফেলা হত।
এবছর তালেবান গত ১৫ অগাস্টে রাজধানী কাবুলের দখল নেয়ার পর থেকেই দেশে আগেরবারের চেয়ে নমনীয় শাসনব্যবস্থা চালুর কথা বলে আসছে। গোটা বিশ্বই তালেবানের কথা নয় বরং কাজ দেখার অপেক্ষায় আছে।
কিন্তু তালেবান যত নরম কথাই বলুক দেশজুড়ে মাঠ পর্যায়ে ভিন্ন চিত্র নজরে আসছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসি জানায়, মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, হেরাত-এ তালেবান নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়ার স্বাধীনতা দিচ্ছে না এবং বাধ্যতামূলক ড্রেস কোড আরোপ করেছে।
অগাস্ট মাসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, হাজারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৯ সদস্যকে হত্যার নেপথ্যে ছিল তালেবান যোদ্ধারা। অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, ঠান্ডা মাথার নৃশংস এসব হত্যাকাণ্ড তালেবানের অতীত রেকর্ডের কথাই মনে করিয়ে দেয় এবং তালেবান শাসনে কী হতে চলেছে তার এক ভয়াবহ আলামত পাওয়া যায়।
তালেবান এবার কাবুল দখলের দিন কয়েক আগেও বালখ প্রদেশের এক তালেবান বিচারক হাজি বদরুদ্দীন বিবিসি-কে বলেছিলেন, তিনি গোষ্ঠীটির কঠোর সাজার পদ্ধতি এবং ইসলামিক ধর্মীয় আইনের ব্যাখ্যা সমর্থন করেন। আর এখন মোল্লা নুরুদ্দিন তুরাবিরও তালেবানের সেই কঠোর পথে ফেরারই স্পষ্ট আলামত দিলেন।
তুরাবি তালেবানের প্রভাবশালী একজন নেতা এবং গোষ্ঠীটির এক অন্যতম সহপ্রতিষ্ঠাতাও। মানুষকে কঠোর সাজা দেয়ার কারণে তার কুখ্যাতি আছে। ১৯৯০ এর দশকের তালেবান আমলে তুরাবি ছিলেন আইন ও ধর্মীয় পুলিশ মন্ত্রী। অনৈসলামিক সঙ্গীত শোনা কিংবা দাড়ি ছাঁটার জন্য তিনি লোকজনকে ধরে কঠোর সাজা দিতেন।
এবার এপি বার্তা সংস্থাকে তুরাবি বলেছেন, কঠোর সেইসব সাজা চালু থাকবে। তবে এখন মানুষকে টিভি দেখা, মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, ছবি এবং ভিডিও তুলতে দেয়া হবে।
অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য তুরাবি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন। তিনি জানান, তালেবান মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা এখন সাজা প্রকাশ্যে কার্যকর করা হবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করছেন। এ ব্যাপারে তারা একটি নীতি নির্ধারণ করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত