ঢাকা   সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   রাত ৮:০৮ 

সর্বশেষ সংবাদ

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা গৃহঋণ পাবেন এক কোটি টাকা পর্যন্ত,অর্থমন্ত্রণালয়ের পরিপত্র জারি

প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা এখন থেকে ৪ শতাংশ সুদ দিয়ে গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক বলতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের বোঝানো হয়েছে। ঋণ পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে। এর আনুষ্ঠানিক নাম ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা’। ১ জুলাই ২০২১ সাল থেকে এটি কার্যকর। প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা এখন থেকে ৪ শতাংশ সুদ দিয়ে গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন
পরিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার। এই পরিপত্রের মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে গৃহ নির্মাণ ঋণ দেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগ মোট চারটি আলাদা পরিপত্র জারি করল। প্রথমটি হচ্ছে সরকারি কর্মচারী, এরপর অধস্তন আদালতের বিচারক ও তৃতীয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য। প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছাড়া সবারই ঋণ পাওয়ার সর্বোচ্চ সীমা ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। এতে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা গৃহ নির্মাণ বাবদ ঋণ প্রদানের সুবিধা রাখা হয়। সরকারি কর্মচারীদের গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালার আওতায় অধস্তন আদালতের বিচারকেরাও গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির পাশাপাশি আপিল বিভাগে বর্তমানে ৫ জন বিচারক রয়েছেন, আর হাইকোর্ট বিভাগে আছেন ৯২ জন বিচারক।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেক বিচারকের মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত খুবই সময়োপযোগী হয়েছে।’
প্রধান বিচারপতির পাশাপাশি আপিল বিভাগে বর্তমানে ৫ জন বিচারক রয়েছেন, আর হাইকোর্ট বিভাগে আছেন ৯২ জন বিচারক
নীতিমালা অনুযায়ী গৃহ নির্মাণ ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ সরল সুদ। সুদের ওপর সুদ আদায় করা যাবে না। ঋণগ্রহীতা দেবেন ৪ শতাংশ সুদ আর বাকি ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে বহন করবে সরকার।
ঋণ দেবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন তফসিলি ব্যাংকগুলো, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ও পাঁচটি বেসরকারি বাণিজ্যিক—ইসলামী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। সরকার চাইলে অন্য যেকোনো বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার কাজে নিয়োগ দিতে পারবে।
গৃহ নির্মাণ ঋণ বলতে বাড়ি (আবাসিক) নির্মাণের জন্য একক ঋণ, জমিসহ বাড়ি কেনার জন্য একক ঋণ, জমি কেনাসহ বাড়ি (আবাসিক) নির্মাণের জন্য গ্রুপভিত্তিক ঋণ, বাড়ি (আবাসিক) নির্মাণের জন্য গ্রুপভিত্তিক ঋণ ও ফ্ল্যাট কেনার ঋণকে বোঝাবে।
বলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে হবে। আবেদনের সর্বশেষ সময়সীমা হবে তাঁদের অবসরে যাওয়ার এক বছর আগপর্যন্ত। কেউ ঋণ নিয়ে অবসরে চলে গেলে তাঁকে ৯ শতাংশ হারেই সুদ পরিশোধ করতে হবে। একজন আবেদনকারী কেবল একবারই এ নীতিমালার আওতায় গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, একজন আবেদনকারী দেশের যেকোনো এলাকায় গৃহ নির্মাণের জন্য ঋণ নিতে পারবেন। ঋণ পাওয়ার জন্য প্রস্তাবিত ভূমি ও বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ দায়মুক্ত হতে হবে। ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে কেবল সম্পূর্ণ তৈরি ফ্ল্যাটের জন্য ঋণ নেওয়া যাবে। তবে ফ্ল্যাট যদি কোনো সরকারি সংস্থা তৈরি করে, সে ক্ষেত্রে ‘সম্পূর্ণ তৈরি ফ্ল্যাট’ এর শর্ত শিথিলযোগ্য।
বলা হয়েছে, ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ২০ বছর। ঋণের কিস্তি গ্রহীতার বেতন হিসাব থেকে ঋণের মেয়াদ পর্যন্ত মাসিক ভিত্তিতে কেটে নেওয়া হবে। ঋণগ্রহীতা অবসরে যাওয়ার পর সরকার সুদ ভর্তুকি দেবে না।
ঋণগ্রহীতা মারা গেলে ঋণের অপরিশোধিত কিস্তি তাঁর প্রাপ্য আনুতোষিক হতে জমা হবে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যদি আনুতোষিকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ঋণ আদায় নিশ্চিত না হয়, তাহলে সুদের হার অপরিবর্তিত রেখে তাঁর উত্তরাধিকারীর কাছ থেকে ঋণের অপরিশোধিত অংশ আদায়যোগ্য হবে। সূত্র -প্রথম আলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত