ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ১১:৫৯ 

সর্বশেষ সংবাদ

রাজধানীর বাড্ডায় জাল টাকার কারখানায় গোয়েন্দাদের হানা, ৪৩ লাখ জাল টাকাসহ ৫ জন গ্রেপ্তার

রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরির একটি কারখানার সন্ধানসহ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি গুলশান বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আব্দুর রহিম শেখ, ফাতেমা বেগম, হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।
সোমবার (১২ জুলাই) দুপুরে বাড্ডা থানার নুরের চালা সাঈদ নগর এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ লক্ষ তৈরিকৃত জাল টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ অভিযান সম্পর্কে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি চক্র, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারী এদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এদের তৎপরতা রুখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। ডিবির ডিসি মশিউরের নেতৃত্বে এ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
জাল টাকায় শুধু দেশবাসী প্রতারিত হচ্ছে না রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যারা অধিক টাকা বহন করবেন, তাঁরা নগদ ক্যাশ বহন না করে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য অনুরোধ করেন ডিবির এই কর্মকর্তা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, অভিযানকালে কারখানাটি থেকে ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের প্রায় ৪৩ লক্ষ তৈরিকৃত জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, দুইটি কালার প্রিন্টার, বিপুল পরিমাণে আঠা ও আইকা, বিভিন্ন ধরনের রং, জাল টাকা তৈরির জন্য A 4 সাইজের প্রচুর কাগজ, নিরাপত্তা সুতার বান্ডেল, লেমিনেটিং মেশিন, কাটার, বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সম্পন্ন বিশেষ কাগজ জব্দ করা হয়েছে। যা দিয়ে কয়েক কোটি মূল্যের জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জাল টাকা ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে জড়িত থেকে আগেও গ্রেফতার হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত ফাতেমা বেগম ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকা তৈরি করার সময় অপর সহযোগীসহ হাতে নাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু তার স্বামী রহিম ওই সময় পালিয়ে গিয়েছিল। ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করতো। গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে আগে জাল টাকা তৈরির কাজে নিয়োজিত থেকে বিপুল পরিমান জাল টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
১০০ টি কাগজের ১ হাজার টাকার নোটের এক বান্ডেল জাল টাকা তৈরি করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। তৈরিকারকরা প্রতি বান্ডেল পাইকারি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা আবার এ গুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি বান্ডেল ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। যা রুট পর্যায়ের জাল টাকার কারবারিরা কখনো কখনো গহনা, কখনো কাপড় চোপড়, ভোজ্য পণ্য এমনকি পশুর হাটে বিক্রি করে ছড়িয়ে দিয়ে থাকে বলে তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত