ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাইকোর্ট একটি মামলায় বিচারব্যবস্থাকে কুলষিত করার অভিযোগে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। বহুল আলোচিত নন্দীগ্রাম মামলার শুনানিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন মমত্ বন্দোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা। রায় ঘোষণার পরই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি কৌশিক চন্দ। এই বিচারপতির সঙ্গে বিজেপির যোগ থাকার অভিযোগে সরব তৃণমূল। চরমে ওঠে বিতর্ক। অভিযোগ-পালটা অভিযোগে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। অবশেষে মামলা থেকে সড়ে দাঁড়ালেন বিচারপতির কৌশিক চন্দ। পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করার অভিযোগে মামলাকারী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করলেন তিনি। বার কাউন্সিলে সেই টাকা জমা দিতে হবে।
বুধবার নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সড়ে দাঁড়ানোর আগে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, ‘যদি একজন আইনজীবী কোনও দলের হয়ে দাঁড়াতে পারেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে না। একজন বিচারপতিও সাধারণ মানুষ। তাঁরও কাউকে ভাল লাগতে পারে। তবে কাজের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।’ এখানেই শেষ নয়, বিচারপতি বদলের দাবিকে ঘিরে যা যা অভিযোগ করেছেন শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা। বুধবার সেই বিষয়টিও উল্লেখ করেন বিচারপতি। তিনি জানান, একজনের কথা মত বিচারপতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যান না। এরপর মামলাকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালতকে কলুষিত করার অভিযোগ করেন তিনি। সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। করোনায় সেবামূলক কাজে ব্যবহার করা হবে সেই টাকা। যদিও জরিমানার বিষয়টির বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। শাসকদলের নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, ‘একজন সাংবিধানিক প্রধানকে জরিমানা করা হচ্ছে কr কারনে ! আমরা এটা রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করব’।
কৌশিক চন্দের এজলাসে নন্দীগ্রাম মামলা উঠলে, বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে তৃণমূল শিবির। বিজেপির একটি অনুষ্ঠানে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কৌশিক চন্দের দুটি ছবি টুইট করেন ডেরেক ও’ব্রায়েন । এর পাশাপাশি আরও একটি টুইটে তিনি দাবি করেন, ১০টি মামলায় বিজেপির হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করেছেন আইনজীবী কৌশিক চন্দ। কৌশিক চন্দের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ দিন হাইকোর্টে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ।
বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাস থেকে মামলা অন্যত্র সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে প্রধান বিচারপতির কাছে তাঁর আইনজীবী জানান, ‘২০২১ সালের এপ্রিলে কৌশিক চন্দকে স্থায়ী বিচারপতি করার জন্য চিঠি দেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তখন আপত্তি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি ওই বিচারপতি বিজেপির সক্রিয় সদস্য। অতএব তিনি পক্ষপাতদুষ্ট। পরিশেষে অনুরোধ করছি, পক্ষপাত এড়ানোর জন্য মামলাটি অন্য বেঞ্চে পাঠানো হোক।’ সূত্র-জি২৪ ঘন্টা।