ঢাকা   শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১   রাত ১১:২৪ 

সর্বশেষ সংবাদ

আমেরিকা-চায়নার বিখ্যাত ব্রান্ডের হার্ট, কিডনি, যৌনশক্তিবর্ধকের নকল ওষুধ তৈরী হতো কারখানায়, গোয়েন্দাদের অভিযান, আটক ৫

রাজধানীতেই আমেরিকা-চায়নার নামিদামি ব্রান্ডের নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। ভেজাল এই কারাখানায় অভিযান চালিয়ে নকল ওষুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত চক্রের একনারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। এসব কারখানায় এই চক্র আমেরিকাসহ বিখ্যাত ওষুধ কোম্পানীর নামিদামি ওষুধের লেভেল লাগিয়ে হার্ট ,লিভার ,কিডনি রোগের ওষুধ তৈরী করতো। যৌনশক্তি বর্ধকের ওষুধও তৈরী হতো এবং এগুলো আবার বাজারজাতও হতো আমদানি করা পণ্য পরিচয়ে। গোয়েন্দা পুলিশ ভেজাল এই কারখানায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে লুবনা আক্তার (২৬), আনোয়ার কাজী (২৭), রাম চন্দ্র বসাক (৬২), এসএম তাজমুল তারিক (৬৩) ও কনক কুমার শাহা (৫২)সহ ৫ জনকে। উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমান ভেজাল ওষুধ।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে Motive Xtra Made in USA, J- Plus Made in USA, Desire S Aksim Lab Bangladesh, Issy R Omega3 Made in Guangzhou China, Cibacal D Made in Guangzhou China, Neogel Max TM Made in Guangzhou China, Neixit TM Made in Guangzhou China, Orcal TM Made in Guangzhou China, Orkid TM Made in Guangzhou China, Impale TM Made in Guangzhou China, Procare Probiotic4 Made in Guangzhou China. নকল ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায় ২৮ জুন (সোমবার) দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুল, রামপুরা ও মালিবাগে ধারাবাহিক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ গুলশান বিভাগের গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম এবং গুলশান জোনাল টিম।
গোয়েন্দারা জানায়,রাজধানীতেই আমেরিকা-চায়না ব্রান্ডের জীবনরক্ষাকারী নকল ওষুধ তৈরি হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে হাতিরপুল, রামপুরা ও মালিবাগে অভিযান চালানো হয়। অনুমোদনহীন এসব কারখানায় নারায়ণগঞ্জ জালকুড়িতে অবস্থিত আয়ুর্বেদিক দাওয়াইখানা থেকে তৈরি বিভিন্ন ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলকে কেজি দরে অথবা হাজার পিস ধরে কিনেআনা হয়। পরে তাদের ইচ্ছেমতো জেনেরিক নেইম/ ট্রেড নেইম দিয়ে কখনও হার্টের ওষুধ, কখনো লিভারের ওষুধ, কখনো হাড়ের ওষুধ এবং বেশিরভাগ সময় সেক্সের ওষুধ হিসেবে আমেরিকা অথবা চায়না থেকে আমদানি করা হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা ঢাকার চকবাজার, মিডফোর্ড এলাকা থেকে বস্তা ভরা প্লাস্টিকের সাদা লাল সবুজ রঙের বোতল, সিপি, সিলিকন সংগ্রহ করে। হাতিরপুল, নীলক্ষেত, ফকিরাপুল ও মালিবাগের বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকান থেকে ইংরেজিতে এ্যাম্বুস করে লেখা বিভিন্ন হলোগ্রাম, মনোগ্রাম সম্বলিত ঝকঝকে রঙিন স্টিকার ও লেবেল তৈরি করে। উক্ত লেবেলে (Allex International, Remedy Trade International, Organon Health Care, Ciba International, Corporation Frequient International, S.K.Trade International. SAN Corporation) বিভিন্ন ট্রেড কোম্পানির নামে ইমপোর্ট এবং মার্কেটিং করা হয় মর্মে লেখা থাকে। যার কোন অস্তিত্বই নেই। তৈরিকৃত স্টিকার ও লেবেলগুলোকে ঘরে বসে প্লাস্টিকের বোতলে সেটে দিয়ে কলেজে পড়ুয়া মেয়েদের মাধ্যমে এই সমস্ত তৈরিকৃত ভেজাল ওষুধ গুলশান-বনানী, কাকরাইল, ধানমন্ডি, উত্তরা ও মিরপুরের বিভিন্ন নামিদামি এবং পরিচিত ডিসপেন্সারিতে বিদেশী ওষুধ হিসেবে মার্কেটিং করে থাকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, দেশের ‘কিছু নীতিহীন ডাক্তার’ উপহার, কমিশন প্রাপ্তির লোভে অথবা রিকুয়েস্টেড হয়ে এসব ভেজাল ওষুধকেই রোগীদেরকে প্রেসক্রাইব করেন।
ভেজাল এসব ওষুধ একটি সিন্ডিকেট ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কক্সবাজার,সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। এ ঘটনার সসঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযাচন চালাচ্ছে পুলিশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন আমেরিকা এ চায়নার নামিদামি ব্রাণ্ডের ভেজাল এসব ওষুধ খেয়ে অনেকেই শারীরীকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। হার্ট, কিডনি,লিভার নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকেই হারিয়ে ফেলেছেন চোখের দৃষ্টি, যৌনশক্তি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত