প্রজেক্ট হিলসা। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়াঘাটে আলোচিত রেস্টুরেন্ট। চালু করার মাসখানেক যেতে না যেতেই স্যোসাল মিডিয়ার কল্যাণে পেয়ে যায় ব্যাপক পরিচিতি। রাজধানী থেকে দলে দলে লোকজন পদ্মাপাড়ে বেড়াতে এসে হিলসায় ঢু মারেন। আর এ সুযোগেই তারা জড়িয়ে পড়ে অনাচারে।অনেকটা ‘বাইরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট’এর মতো অবস্থাটা। আকাশচুম্বি দাম নিলেও মান আর পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ওঠেছে প্রশ্ন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লোকজন অভিযান চালিয়ে রেঁস্তোরাটিতে পেয়েছে নানা অনিয়মের চিত্র। রান্নার বাবুর্চিদের নোংরা অবস্থান, ফ্রিজে কাঁচামাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করা খাবার রাখা, বিএসটিআইর অনুমোদনহীন বিভিন্ন খাদ্যপণ্যও পাওয়া গেছে।
ব্যতিক্রমী স্থাপত্য নকশার কারণে সবার নজরে আসলেও শুরুতেই খাবারের মানের চেয়ে দাম বেশি, সার্ভিস চার্জ নিয়ে অসন্তোষসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ‘প্রজেক্ট হিলসা’ রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে। বুধবার শিমুলিয়াঘাটের অদূরে ইলিশ মাছের আদলে নির্মিত এই রেঁস্তোরায় অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তাদের অভিযানে উঠে এসেছে রেঁস্তোরাটির গুরুতর অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র। কিচেন পরিষ্কার থাকলেও ফ্রিজে কাঁচামাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করা খাবারও মজুত রাখা হয়েছিল।’
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ জানান ‘রেঁস্তোরাটিতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন বিপুল পরিমাণের সস ও নুডলসও পাওয়া গেছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগবে। এক-দেড় হাজার মানুষের জন্য রান্না করার মতো খাবার মজুত ছিল। অর্থাৎ, এসব খাবারের মধ্যে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন সস, নুডলস ছিল।’এ ছাড়া, রেস্তোরাঁটির বাবুর্চি ও কর্মচারীদের টয়লেটের পর সাবান ব্যবহার না করার প্রমাণসহ বেশকিছু ত্রুটি পাওয়া গেছে।
আসিফ আল আজাদ বলেন, ‘অভিযানে রেঁস্তোরাটিতে অতিথিদের টয়লেটে সাবানের ব্যবস্থা থাকলেও বাবুর্চি ও স্টাফদের টয়লেটে কোনো সাবান পাওয়া যায়নি। টয়লেটের পর বাবুর্চিরা সাবান ব্যবহার করছিলেন না। শুধু পানি দিয়েই হাত পরিষ্কার করছিলেন। এ ছাড়া যে স্যান্ডেল পরে টয়লেটে যাওয়া হয় সেই স্যান্ডেল কিচেনেও ব্যবহার করা হয়। কিচেন পরিষ্কার থাকলেও ফ্রিজে কাঁচামাছ-মাংসের সঙ্গে রান্না করা খাবারও মজুত রাখা হয়েছিল, যা ঠিক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রেস্তোরাঁটিতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন বিপুল পরিমাণের সস ও নুডলসও পাওয়া গেছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগবে। এক-দেড় হাজার মানুষের জন্য রান্না করার মতো খাবার মজুত ছিল। অর্থাৎ, এসব খাবারের মধ্যে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন সস, নুডলস ছিল।’
রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আসিফ আল আজাদ বলেন, ‘যেহেতু রেস্তোরাঁটি অল্প কিছু দিন আগে চালু হয়েছে, তাই আইনকানুন সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। তাদেরকে নিয়ম-কানুন জানানো হয়েছে। প্রথমবারের মতো তাদের সতর্ক করা হয়েছে। মূলত ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ সম্পর্কে অবহিত করা ও কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে সেই নিয়ম-কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধন হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে নিয়ম অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’