সিরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ‘জিহাদী কার্যক্রম’ চালিয়ে ফিরে আসা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য সাখাওয়াত হোসেন লালুকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শনিবার বিকেলে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে মহানগর হাকিম হোসেন মোহাম্মদ রেজা ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার নগরীর দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার আহলে হাদিস জামে মসজিদ এলাকা থেকে নগরীর দামপাড়া এম এম আলী রোড এলাকার বাসিন্দা সাখাওয়াতকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যান সাখাওয়াত হোসনে। সেখানে প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ শেষে ইন্দোনেশিয়া গিয়ে ‘জিহাদী’ কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন। ২২ মার্চ ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন।
গত ২২ মার্চ ইন্দোনেশিয়া থেকে দেশে ফেরার তিন মাস পর শুক্রবার নগরীর খুলশী এলাকা থেকে সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪০ বছর বয়সী সাখাওয়াতের বাসা নগরীর দামপাড়া এমএম আলী রোড এলাকায়।
১৯৯৭ সালে মাধ্যমিক পাস করা সাখাওয়াত উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরের জহরলাল নেহেরু প্রি ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে।
২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কম্পিউটার ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার বিষয়ক বিভিন্ন কোর্স করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখান থেকে ২০১১ সালে দেশে ফিরে আসেন।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এসআই রাসিব খান বলেন, ২০১২ সালে ভায়রা মো. আরিফ ও মামুনদের অনুপ্রেরণায় নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন সাখাওয়াত। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ ও প্রচারের কাজ করতেন তিনি।
“সাখাওয়াত ইন্টারনেটে বিভিন্ন জিহাদী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংগঠনটির আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।”
আনসার আল ইসলামের পলাতক নেতা, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত মেজর জিয়াউল হকের সঙ্গেও সাখাওয়াতের দেখা হয়েছিল বলে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান।
রাসিব খান জানায়, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক গিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে সিরিয়া ঢুকেছিলেন সাখাওয়াত। সেখানে ‘হায়াত তাহরীর আরশাম’ নামে একটি সংগঠনে থেকে ভারী অস্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে সিরিয়ার ইদলিব শহরে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, সিরিয়া থেকে পুনরায় তুরস্ক ফিরতে ১০ বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন সাখাওয়াত। একাদশ বার তিনি সফল হন।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কর্মকর্তা রাসিব বলেন, তুরস্কে কিছু দিন থেকে সাখাওয়াত ২০১৯ ইন্দোনেশিয়াতে চলে যান। সেখানে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, সন্তানদের নিয়ে যান।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার কেন্দ্রীয় আহলে হাদিস জামে মসজিদ এলাকা থেকে সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ট্যাব, নোটবুক, জিহাদী কাগজপত্র ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।