অখ্যাত কোনো রেস্টুরেন্ট নয়, গোপনীয় কোনো স্থানেও নয়, খোদ রাজধানীতে, দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমান ভেতরে খাবার হোটেলে মরা মুরগি জবাই করার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী।
পুলিশ জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমানার ভেতরে অবস্থিত ‘এয়ারপোর্ট রেস্টুরেন্ট’। এখানেই শনিবার বিকেলে মরা মুরগি জবাই করার সময় ৭ জনকে আটক করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলী আফরোজের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ১২০টি মরা মুরগি উদ্ধার করা হয়। যেগুলো জবাই করার জন্য রাখা হয়েছিলো।
বিমানবন্দর এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১২ জুন) বিকেল ৩টার দিকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাস্টমস হাউসের পার্শ্ববর্তী এয়ারপোর্ট রেস্টুরেন্ট-এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় হোটেল থেকে ২০০টি মুরগি উদ্ধার করা হয়। এগুলোর মধ্যে ৮০টি মুরগি জীবিত ছিল, বাকি ১২০টি মৃত। মুরগি জবাই করার সময় হোটেলটির ম্যানেজার, স্টাফ ও মরা মুরগি বহন করা গাড়ির চালকসহ ৭ জনকে আটক করে এপিবিএন সদস্যরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক মুরগি ভাইরাসজনিত কারণে মারা যায়। সেই মুরগি রান্না করে খেলে অন্ত্রে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। আর কেমিকেল যুক্ত মরা মুরগি খেলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৯৫ ভাগ। ওই খাবার অন্ত্রে গিয়ে ক্যানসার কিংবা কোলন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রতিদিনই শত শত মরা মুরগি ঢুকছে রাজধানীতে। একাধিক সিন্ডিকেট জীবিত মুরগির চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম দামে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট এবং পথের পাশে ভ্রাম্যমাণ ভাজা-পোড়া দোকানে এসব মুরগি বিক্রি করছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতিরাতে যেসব মরা মুরগি আসে সেসব একটি সিন্ডিকেটের কাছে ঠিকা হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে ওইসব মুরগি ক্রেতাদের কাছে বস্তা বন্দী করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আবার ক্রেতারাও এসে নিয়ে যায় মরা মুরগি। সব কিছুই হয় ভোর রাতের দিকে।
এদিকে ঢাকার বিভিন্ন বাজারেও প্রকাশ্যে ভাগা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। অসাধু দোকানিরা রাতভর বিভিন্ন মুরগির দোকান থেকে মরা মুরগি সংগ্রহ করে। পরে এসব মুরগি কেটে নাড়িভুড়ি পরিষ্কার করে তা কেজি দরে বিক্রি করে। রেস্টেুরেন্টে জীবিত মুরগির দামে মরা মুরগি বিক্রি করা গেলেও রাস্তার পাশের দোকানগুলো থেকে মরা মুরগি বিক্রি হয় তুলনামূলক কম দামেই। আর এসব মুরগির বেশিরভাগ ক্রেতাই হলো দরিদ্র পেশাজীবী মানুষ।