সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রাখার ঘটনায় আলোচনায় আসা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছার বিরুদ্ধে, গরম অবস্থায় নয়,ঠাণ্ডা অবস্থায় তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন,দুদক। ‘সুনির্দিষ্ট’ অভিযোগ আর পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো: জহুরুল হক বলেছেন “কাজী জেবুন্নেছার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোজিনাকে আটকে রাখার ঘটনায় তুমুল আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
কাজী জেবুন্নেছার ‘দুর্নীতি’ সংক্রান্ত যেসব অভিযোগ সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে- সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জহুরুল বলেন, “অভিযোগের পক্ষে পর্যাপ্ত ডকুমেন্টস থাকতে হবে। গরম অবস্থার মধ্যে নয়, ঠাণ্ডা অবস্থায় তদন্ত করতে হবে।”
সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনাকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে শাহবাগ থানায়, অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট এবং দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সেই মামলায় এখন কারাগারে রয়েছেন এই সাংবাদিক।
রোজিনার বিরুদ্ধে সরকারি গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টা’ এবং ‘ছবি তোলার’ অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে তিনি কোনো অপরাধ করার কথা অস্বীকার করেছেন। বরং তাকে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।
স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জন্য রোজিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আক্রোশের শিকার হয়েছেন বলে তার সহকর্মীদের অভিযোগ।
রোজিনাকে আটকে রাখার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব জেবুন্নেছা। ‘হেনস্তাকারী’ হিসেবে তার নাম উল্লেখের পাশাপাশি তাকেও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবে বিভিন্ন মিডিয়ায় অনেকে চিহ্নিত করছেন।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বক্তব্য নিয়ে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তাতে সেখানে জেবুন্নেছার উপস্থিতির কথা স্বীকার করা হলেও তাকে নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ‘বিভ্রান্তিকর ও অসত্য’ তথ্য প্রচার হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
জেবুন্নেছার অস্বীকার:
এদিকে জেবুন্নেছা দাবি করেছেন, রোজিনা ইসলামকে নির্যাতনকারী হিসেবে যে নারীর ছবি ছড়ানো হয়েছে সেই নারী তিনি নন।
তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুবান্ধব আছেন, আত্মীয়স্বজন আছেন, সিনিয়র-জুনিয়র আছেন। আমার সাথে যারা কর্মরত আছেন বা আমার সাথে কাজ করেছেন অথবা যারা আমার সাথে ফেসবুকে আছেন, আপনারা খুব সহজেই অনুমান করতে পারবেন আসলে ওই ছবিটিতে দেখানো হচ্ছে যে, সাংবাদিক রোজিনার সাথে যার ক্লোজ দাঁড়ানোর ছবি, সেটি আমার নয়।’ জেবুন্নেছা বলেন, ‘আমি একজন মোটামুটি বয়স্ক মহিলা। আপনারা জানেন আমার বয়স ৫৭ বছর অতিক্রম করছে। আমি কখনোই ওই গেটাপের মানুষ নই। যখন ঘটনাটি ঘটে তখন আমি ১০ মিনিট আগে আরেকটি প্রেস কনফারেন্সে ছিলাম। তিনি বলেন, আমি কিন্তু ওই ধরনের পোশাক পরিধান করিনি। আমি শাড়ি পরা অবস্থায় ছিলাম। সেটার ছবি আমার কাছে আছে। প্রতিটি মিডিয়াতে আছে।’ ‘আপনারা দয়া করে মিলিয়ে দেখবেন সেই ছবিটি আমার নয়।