ঢাকা   মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১   বিকাল ৪:৪৮ 

সর্বশেষ সংবাদ

দু’ধরনের ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়া কতটা ক্ষতিকর? অক্সফোর্ডের গবেষণায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য

করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা জোর দিয়ে বলছেন চিকিৎসকরা। সব দেশেই জোরকদমে চলছে টিকাকরণও। কিন্তু এরই মধ্যে একাধিক বার এমন খবরও এসেছে যে, একই ব্যক্তি দু’বারে, দু’টি ভিন্ন টিকার ডোজ পেয়েছেন। প্রথমে কোভিশিল্ড নিলেও পরে হয়তো ভুলবশত কোভ্যাক্সিনের ডোজ দেওয়া হয়েছে তাকে। কিংবা ঘটেছে উল্টোটাও। যেমন অ্যাস্টেজেনিকার কোভিশিল্ট টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন কিন্তু দ্বিতীয় ডোজটি পাওয়া যায় নি। সে ক্ষেত্রে অন্য কোম্পানির টিকা দেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে পরিণতি সম্পর্কে। স্বাস্থ্যের কোনও সংকট ঘনিয়ে আসবে না তো, এই প্রশ্নই জেগেছে টিকা প্রাপকদের মনে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা রিপোর্টে সেই সব প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়া হয়েছে।

ওই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, যাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ‘ভ্যাকসিন মিক্সআপ’—এর ঘটনা ঘটেছে, তাদের বড় ধরনের কোনও বিপদ না ঘটলেও অল্প থেকে মাঝারি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আর এই তালিকায় রয়েছে জ্বর, কাঁপুনি, ক্লান্তি, মাথাব্যথা প্রভৃতি। এই রিপোর্টটি ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। আর সেখানে গবেষকরা জানিয়েছেন, দু’ধরনের ভ্যাকসিন ডোজ নিলে, ঠিক সেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলিই দেখা যাচ্ছে, যা, যে কোনও প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ গ্রহণের পর ঘটছে। পার্থক্য একটাই। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি বার বার ঘটছে। এমনটাই জানিয়েছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির, পেডিয়াট্রিক্স ও ভ্যাকসিনোলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, ডা. ম্যাথিউ স্ন্যাপ। যিনি এই সমীক্ষার ফলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছেন।

যে সমীক্ষা থেকে এই রিপোর্ট জানা গিয়েছে, সেটি পরিচালনা করেছিল অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের কম কভ ভ্যাকসিন ট্রায়াল। ব্যবহৃত হয়েছিল চারটি বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি টিকা। সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ৮৩০ জন। প্রথম দফায় একটি দলকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজ এবং ২৮ দিন পরে, তাদের ফাইজারের টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছিল। আবার অন্য দলকে, দু’বারই হয় অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজ বা ফাইজারের টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছিল। দেখা যায়, যাদের ‘মিক্সড’ ডোজ দেওয়া হয়েছিল, অন্যদের তুলনায় তাঁদের শরীরে বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজনীয়তা কারোই পড়েনি।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশেও এ সমস্যা দেখা দেয়ার আশংকা রয়েছে। ভারতের সেরাম ইন্সস্টিটিউটের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন এমন ১৪ লাখ লোক দ্বিতীয় ডোজ পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ চুক্তি থাকলেও সেরাম ইন্সস্টিটিউট টিকা উৎপাদন করতে না পরায় বাংলাদেশে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে সেরামের টিকা পাওয়া তাদের জন্য অনিশ্চিত। এ অবস্থায় চীন থেকে পাওয়া টিকা নিলে শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় কি না এ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সবচেয়ে আলোচিত