আগাম জামিন চেয়ে করা কোনো আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ না করায় বসুন্ধরা শিল্প গ্রুপের এমডির জামিন আবেদন শুনানি হয় নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী এবং তার পরিবারের সাত সদস্যসহ ৮ জন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি ভাড়া বিমানে দেশ ছেড়েছেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বড় বোন বাদী হয়ে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া’র অভিযোগ এনে বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চে আবেদন করেন আনভির। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার দিলিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার কার্যতালিকায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনটি ১৪ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার আদালতের শুরুতেই বিচারপতি মামনুন রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতি এবং বিধিনিষেধ চলাকালে আদালত কোনো আগাম জামিনের ওপর শুনানি করা হবে না। ভুলবশত কিছু আগাম জামিনের আবেদন আজকের কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।’
সায়েম সোবহান আনভীরের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আদালত বলেছেন, আগাম জামিন আবেদন শুনবেন না। তাই আমরা মুভ করিনি।’ আনভীর অবশ্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে তা ক্লায়েন্টের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুন চৌধুরীর মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই জামিন আবেদন করা হয়েছিলো।
দেশ ছেড়েছেন এমডির স্ত্রী সন্তানঃ
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী এবং তার পরিবারের সাত সদস্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একটি ভাড়া বিমানে দেশ ছেড়েছেন।
এভিয়েশন সিকিউরিটির (এভিএসইসি) এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, চার্টার্ড বিমানটি সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, সায়েম সোবহানের পরিবারের আট সদস্য বৈধ কাগজপত্র নিয়েই দেশের বাইরে গেছেন।
তিনি আরও জানান, ছয় ডানার বেসরকারি জেট বিমানটি রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। এটি পরিচালনা করে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান স্কু সলিউশন লিমিটেড।
তিনি আরও বলেন, সায়েম সোবহান আনভীর যেন দেশ ছাড়তে না পারেন সে জন্য নিরাপত্তা ও অভিবাসন কর্মকর্তারা সজাগ ছিলেন।
এক নথি থেকে জানা যায় ওই ফ্লাইটে ছিলেন, সাবরিনা সোবহান, আহমেদ ওয়ালিদ সোবহান, আরিশা আফরোজ সোবহান, ঈয়াশা সোবহান, রানিয়া আফরোজ সোবহান, ডিয়ানা হেরনানদেজ কাকানানদো, মোহাম্মদ কাদের মীর এবং হোসনেআরা খাতুন।
এই আট জনের মধ্যে ডিয়ানা হেরনানদেজ কাকানানদো, মোহাম্মদ কাদের মীর এবং হোসনেআরা খাতুন তাদের পরিবারের গৃহকর্মী বলে জানা গেছে।
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান বলেন, তারা একটি বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি নিয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের ছাড়পত্র পাওয়ার পর চার্টার্ড ফ্লাইটটি ছেড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার থেকে তারা বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি চাইছিলেন।