“আমার ভাষা” সফটওয়্যারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজিতে প্রদত্ত আদালতের রায়গুলো সহজেই বাংলায় অনুবাদ করা যাবে। ফলে বিচারপ্রার্থী এবং সাধারণ জনগণের কাছে আদালতের রায়গুলো আরও সহজবোধ্য হবে।
বৃজস্পতিবার বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে ভারতের সহযোগিতায় ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ সংক্রান্ত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যার “আমার ভাষা” এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আমার ভাষা সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে ইংরেজি ভাষায় প্রদত্ত রায় বাংলা ভাষায় অনুবাদের এই প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এদেশের বিচারপ্রার্থী মানুষের একসেস টু জাস্টিস নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে কেবল উচ্চ আদালতের রায়সমূহ বাংলায় আনুবাদ করার ক্ষেত্রে আমার ভাষা সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে নিম্ন আদালতের রায়ও বাংলায় অনুবাদ করার ক্ষেত্রে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে।
-আনিসুল হক,আইনমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, এতদিনে বাংলাদেশের সকল আদালতের সকল কার্যক্রম বাংলা ভাষাতেই হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল।
তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক আমল থেকে আদালত সমূহের কার্যক্রম ইংরেজি ভাষাতে পরিচালিত হয়েছে। আদালত সমূহে এ কারণেই ইংরেজি ভাষায় রায় ও আদেশ প্রদানে অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া আইন বিষয়ে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত বাংলা পরিভাষা ও পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে উচ্চ আদালতে শতভাগ বাংলা ভাষার প্রচলন করার বাস্তবসম্মত অসুবিধা এখনও রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আমার ভাষা সফটওয়্যারটি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে দেশের আদালত সমূহে আর এরকম কোন অনুবাদ সফটওয়্যার প্রয়োজন হবে না। কারণ সরকার আদালতসহ রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলন করে একুশের চেতনাকে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে কাজ করছে।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়সমূহ আমার ভাষা সফটওয়্যারের মাধ্যমে বাংলায় অনুবাদ করার এই উদ্যোগ বিচার বিভাগের সকল ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দীন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার
প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ভারতে তৈরি এই অনন্য অনুবাদ সফটওয়্যার ইনস্টলেশনে অংশীদার হতে পেরে এবং শুভেচ্ছা স্বরূপ বিতরণ করতে পেরে ভারত অত্যন্ত সম্মানিত।
বিক্রম দোরাইস্বামী, ভারতীয় হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, “এই ধরনের সহযোগিতা কেবল ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যেই সম্ভব হতে পারে। কারণ বাংলা ভারতের অন্যতম স্বীকৃত ভাষা। এছাড়া ভারত এবং বাংলাদেশের উভয় বিচারিক ব্যবস্থার উৎস, বিধান ও ভাষা অভিন্ন।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে এবং একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তিন দিন আগে এই সফটওয়্যারটি চালু হওয়া বিশেষ গুরুত্ব রাখে বলে মন্তব্য করেন দোরাইস্বামী।
অনুষ্ঠানে ‘আমার ভাষা’ সফটওয়্যারটি নিয়ে একস্টেপ নির্মিত একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়।