হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকসহ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অবরোধের কারণে শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় একঘণ্টা শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
পরে ১ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ মোড় ছাড়েন তারা।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে মিছিল করে শাহবাগে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
অবস্থানে সংহতি জানিয়ে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, “মহানবী (সা.) এর অবমাননা ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বিরোধিতাকারী মামুনুল-ফয়জুল গংদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এরা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু।
“যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গতে আসবে, আমরা তাদের হাত ভেঙ্গে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দিব। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর যে ভাস্কর্য সরকার স্থাপন করছে, তার বিরোধিতায় নেমেছে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী কয়েকটি দল।
এদের মধ্যে হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুবনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর সৈয়দ ফয়জুল করিম বেশ সরব।
ভাস্কর রাশা বলেন, সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, তুরস্কসহ বিশ্বের সকল মুসলিম দেশে ভাস্কর্য রয়েছে। মৌলবাদীরা ভাস্কর্য ও মূর্তির পার্থক্য নিয়ে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে।
“ইসলামের দৃষ্টিতে ভাস্কর্য বৈধ। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতাকারীদের মূল উদ্দেশ্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সরকার পতনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। সময় এসেছে এদের লাগাম টেনে ধরার।”
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনে বাধা প্রদান এবং স্থাপিত ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলার ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়েছে চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি।
“সম্প্রতি একটি ইসলামী ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক প্রকাশ্য দিবালোকে মহানবীর (সা.) অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে নবীজীকে অবমাননা করেছেন। মহানবীকে অবমাননা করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অপরাধে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করতে হবে।”
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে বুলবুল কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গৌরব ৭১ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এফএম শাহীন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য।