রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার রায় বৃহস্পতিবার( ১৯ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। মামলার একমাত্র আসামি মজনু কারাগারে আছেন। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে মজনুর সর্বোচ্চ সাজা হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধিত ধারায় এখন ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। যা আগে ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
তবে আইন সংশোধন করে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান সংযোজন করলেও এ মামলায় তা প্রয়োগ হবে কী না তা স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। কারণ ধর্ষণের ঘটনাটির সময় রুজু করা মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর আইনটি সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গত ১৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করা হয়। যা সংসদের চলতি বিশেষ অধিবেশনে বিল আকারে উত্থাপন করা হয়েছে।
যদিও গত ১৩ আক্টোবর অধ্যাদেশ জারির পর ২০১৫ সালের টাঙ্গাইলে এক মাদ্রাসা ছাত্রী গণধর্ষণ মামলায় ১৫ অক্টোবর ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া আদালত ।
ঢাবি ছাত্রি ধর্ষণের মামলাটি গত ১২ নভেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি তর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন।
মামলার ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলি আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ অরেঞ্জ জানান, ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে মামলাটির বিচারকাজ শেষ হয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাবি ছাত্রিটি। আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছালে আসামি মজনু পেছন থেকে গলা চেপে ধরে পাশের ঝোপের আড়ালে মাটিতে ফেলে গলা চেপে ধরেন। ভিকটিম চিৎকার করতে গেলে আসামি তাকে কিল-ঘুষি মেরে ভয়ভীতি দেখালে ভিকটিম অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন মজনু ভিকটিমকে অচেতন অবস্থায় ধর্ষণ করেন। মজনু একজন অভ্যাসগতভাবে ধর্ষণকারী। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে এসব।
এ ঘটনার পর র্যাব ৮ জানুয়ারি মজনুকে ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন শেওড়া বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশের পাকা রাস্তার ওপর থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও পাওয়ার ব্যাংক এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি জিন্সের প্যান্ট ও একটি জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়।
৬ জানুয়ারি ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণের মামলা করেন।
আসামি মজনুকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১৬ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর থেকে মজনুকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।