মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, জামাতে ইসলামী এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামসের তালিকা প্রস্তুত ও প্রকাশ করতে সংসদীয় সাব–কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাব–কমিটিতে শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচজনকে সদস্য করা হয়। স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আলবদর রাজাকারদের তালিকা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় এ কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, এবি তাজুল ইসলাম এবং মোছলেম উদ্দিন আহম্মদ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য এর আগে গতবছরের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রথম পর্যায়ের ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়টি। তবে এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় পরে তা বাতিল করা হয়।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই তালিকা প্রকাশ করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মোজাম্মেল হক বলেন, “যারা ৭১ সালে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বা স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং যেসব পুরোনো নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত ছিল, সেটুকু প্রকাশ করা হয়েছে।”
পরে দেখা যায় যাচাই-বাছাই না করে দায়সারা গোছের একটা তালিকা প্রকাশ করে আরও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কারণ তালিকা থেকে অনেক রাজাকারের নাম বাদ পড়ে যায় আবার অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম ঢুকে যায় রাজাকারের তালিকায়।
এবার যাতে কোনো বিভ্রান্তি বা বিতর্কের সৃষ্টি না হয় সে জন্য সংসদীয় সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাইবাছাই করে তালিকা তৈরী করবে বলে জানান কমিটির সদস্যরা।
বাসস জানায়, সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ তাঁর পরিবারের সদস্যসহ অন্য যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, শোক ও সমবেদনা জানানো হয়।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর স্ত্রী সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় কমিটি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে।
কমিটির ১১তম বৈঠকে সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়ে কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার ২৪টি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এবং আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানেরাসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।